আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামুয়ালাইকুম

ওস্তাদ, আমি একটা ফাউন্ডেশন করতে চাচ্ছি। আর আমি পূর্ববর্তী প্রশ্ন উত্তর থেকে জানতে পারছি যে, ফাউন্ডেশন এর ফান্ড থেকে নিজেদের কোনো বেতন নেয়া যাবে না। কারণ এখানে অনেক যাকাত ফিতরার টাকাও থাকবে। আর আমাদের একটা ইনকাম সোর্স প্রয়োজন, কারণ পরিপূর্ণ টাইম দিয়ে ফাউন্ডেশন গঠন করতে হলে এখানে নিজেকেই পরিপূর্ণভাবে টাইম দিতে হবে।


প্রশ্ন: ওস্তাদ, যাকাত_ মানত এই টাকা আমরা আলাদা ফান্ডে নিবো, এখান থেকে আমরা নিজেদের প্রয়োজনে খরচ করবো না।

আর মেহনতি মানুষের সাহায্য, অথবা দরিদ্রর বিবাহ ইত্যাদি এইসব কাজের জন্য আমরা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা অনলাইনে যে টাকা কালেকশন করবো , এখান থেকে কি নিজেদের বেতন অথবা কর্মচারী থাকলে তাদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ খরচ করতে পারবো?

জাযাকাল্লাহ খইর।

1 Answer

0 votes
by (57,450 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/102403/  নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান।আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত-তাওবাহ-৬০)


কে যাকাত খেতে পারবে?

وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.

অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)

এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।

(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯)

আরো জানুনঃ-  https://ifatwa.info/7744/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

যদি যাকাত দাতা কাউকে বলে যে এই যাকাতের টাকা তুমি মিসকিনদের মাঝে বন্টন করে দাও, তাহলে টাকা গ্রহন কারী ব্যাক্তি তার উকিল হয়ে গেলো। এক্ষেত্রে এই ব্যক্তি যেকোনো যাকাতের হকদারকে যাকাতের টাকা দিতে পারবে। কিন্তু নিজে যাকাতের হকদার হলেও তা নিজের জন্য নিতে পারবেনা।

হ্যাঁ, যদি যাকাত প্রদানকারী ব্যক্তি তাকে পুরোপুরি ইখতিয়ার দিয়ে বলে যে তুমি যেখানে চাও, খরচ করতে পারো।

তাহলে সে নিজে যাকাতের হকদার হলে সে উক্ত টাকা নিতে পারবে।

"رجل دفع إلى رجل مالاً قال: أعط هذا من أحببت، ليس له أن يتصدق على نفسه عند أبي حنيفة، وقال محمد: له ذلك". (المحيط البرهاني : ٢/ ٣٢١)

সারমর্মঃ কোনো ব্যক্তি কাউকে সম্পদ দিয়ে বললো যে যাকে চাও এট দিয়ে দাও, সেক্ষেত্রে ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ এর মতে সে নিজের উপর তাহা সদকাহ করতে পারবে।


البحر الرائق شرح كنز الدقائق - (2 / 227

"وَلِلْوَكِيلِ بِدَفْعِ الزَّكَاةِ أَنْ يَدْفَعَهَا إلَى وَلَدِ نَفْسِهِ كَبِيرًا كان أو صَغِيرًا وَإِلَى امْرَأَتِهِ إذَا كَانُوا مَحَاوِيجَ وَلَا يَجُوزُ أَنْ يُمْسِكَ لِنَفْسِهِ شيأ اه  إلَّا إذَا قال ضَعْهَا حَيْثُ شِئْتَ فَلَهُ أَنْ يُمْسِكَهَا لِنَفْسِهِ كَذَا في الْوَلْوَالِجيَّةِ"

সারমর্মঃ উকিল যাকাতের টাকা নিজে রাখতে পারবেনা। কিন্তু যদি মুয়াক্কিল বলে যে তুমি যেখানে চাও, খরচ করো, তাহলে সেক্ষেত্রে সে নিজের জন্য নিতে পারবে।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনি যেই ফাউন্ডেশন শুরু করতে চাচ্ছেন, সেখানে তো অনেক মানুষ যাকাত, মান্নত ইত্যাদি টাকা দিবে। আবার অনেকে নির্দিষ্ট সদকায়ে জারিয়া মূলক কাজে টাকা দিবে।


সুতরাং আপনি বা যারা পরিচালনা কাজে সহযোগী হিসেবে থাকবেন তারা যদি দরিদ্র হোন, যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত হোন, সেক্ষেত্রে দাতাগণ যদি ফাউন্ডেশনে টাকা দেয়ার সময় মিসকিনদের মাঝে বন্টন করে দেয়ার কথা না বলে, বরং বলে যে তুমি যেখানে চাও, খরচ করো, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনি বা যারা পরিচালনা কাজে সহযোগী হিসেবে থাকবেন তারা প্রয়োজন পূরণে কিছু অংশ নিজের জন্য নিতে পারেন।

অন্যথায় কোনো ছুরতেই আপনার জন্য সেই ফাউন্ডেশনের দানকৃত টাকা নেয়া জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...