ওয়া
আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/4439/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হায়েজ নেফাসওয়ালী মহিলা দুই ধরণের হবে।
যথা-
১- তালাকের ইদ্দত পালনকারী
মহিলা।
২- অবিবাহিত বা ইদ্দত
শেষ হয়ে যাওয়া মহিলা।
★১ম প্রকার মহিলার বিধান:
যদি তালাক পরবর্তী হায়েজের মাধ্যমে ইদ্দত সম্পন্ন করাকালীন সময়ে
বিবাহ করে তাহলে বিবাহটি শুদ্ধ হবে না। ইদ্দত শেষ হওয়ার পর বিবাহ করতে হবে।
وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا عَرَّضْتُمْ بِهِ مِنْ خِطْبَةِ النِّسَاءِ أَوْ أَكْنَنْتُمْ فِي أَنْفُسِكُمْ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ سَتَذْكُرُونَهُنَّ وَلَكِنْ لَا تُوَاعِدُوهُنَّ سِرًّا إِلَّا أَنْ تَقُولُوا قَوْلًا مَعْرُوفًا وَلَا تَعْزِمُوا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتَّى يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي أَنْفُسِكُمْ فَاحْذَرُوهُ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ حَلِيمٌ (235)
আর যদি তোমরা আকার ইঙ্গিতে সে নারীর বিয়ের পয়গাম দাও, কিংবা নিজেদের
মনে গোপন রাখ, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই, আল্লাহ জানেন যে, তোমরা অবশ্যই সে নারীদের
কথা উল্লেখ করবে। কিন্তু তাদের সাথে বিয়ে করার গোপন প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখো না। অবশ্য
শরীয়তের নির্ধারিত প্রথা অনুযায়ী কোন কথা সাব্যস্ত করে নেবে। আর নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্তি
পর্যায়ে না যাওয়া অবধি বিয়ে করার কোন ইচ্ছা করো না। আর একথা জেনে রেখো যে, তোমাদের
মনে যে কথা রয়েছে, আল্লাহর তা জানা আছে। কাজেই তাঁকে ভয় করতে থাক। আর জেনে রেখো যে,
আল্লাহ ক্ষমাকারী ও ধৈর্য্যশীল। {সূরা বাকারা-২৩৫}
★২য় প্রকার মহিলার বিধান:
এ প্রকার মহিলাদের ক্ষেত্রে হায়েজ বা নিফাস চলাকালীন সময়ে বিবাহ
শুদ্ধ। কিন্তু সহবাস করা হারাম।
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত "মেয়েদের হায়েজ (মাসিক চলা)
অবস্থায় তাদের বিয়ে শুদ্ধ হবে। এক্ষেত্রে
শুধু বিবাহের দ্বারা কোনো গুনাহ হবেনা। তবে মাসিক চলা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার শারিরিক সম্পর্ক
স্থাপন করা যাবে না। কেননা এ সময় শারিরিক
সম্পর্ক হারাম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُواْ النِّسَاء فِي الْمَحِيضِ وَلاَ تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىَ يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّهُ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা
অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী
হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন
কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং
অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা বাক্বারা-২২২)
স্বামীর জন্য স্ত্রীর ঋতুকালীন সময়ে যোনি ব্যবহার ও পুংমৈথন ছাড়া
অন্য সব আচরণের অনুমতি রয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছে, ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে মেলামেশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করা হলে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, اصْنَعُوا كُلَّ شَيْءٍ إِلا النِّكَاحَ সহবাস ব্যতীত তার সাথে সবকিছু কর। (মুসলিম ৩০২)
অপর হাদীসে এসেছে,
عَنْ بَعْضِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ مِنَ الْحَائِضِ شَيْئًا أَلْقَى عَلَى فَرْجِهَا ثَوْبًا
রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কোন এক স্ত্রী সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে কিছু করতে চাইলে স্ত্রীর লজ্জাস্থানের
উপর কাপড় রেখে তারপর করতেন। (আবূ দাউদ ২৭২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মেয়েদের হায়েজ (মাসিক চলা) অবস্থায় তাদের বিয়ে শুদ্ধ হবে। এক্ষেত্রে শুধু বিবাহের
দ্বারা কোনো গুনাহ হবেনা। তবে মাসিক
চলা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার শারিরিক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না। কেননা এ সময় শারিরিক সম্পর্ক হারাম।
২. নারী পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত শারিরিক সম্পর্ক, দেখা সাক্ষাৎ সবকিছুই
হারাম। এতে কোনো প্রকার সন্দেহ নাই। বিবাহ বহির্ভূত শারিরিক সম্পর্ককে ইসলাম যিনা ব্যভিচার
বলেই আখ্যায়িত করেছে। কেউ এমনটা করলে মারাত্বক পর্যায়ের গোনাহ হবে। তাকে অবশ্যই তাওবাহ ইস্তেগফার করতে হবে।
যিনা ব্যভিচারের কারণে যদি গর্ভে সন্তান চলে আসে, তাহলে এই গর্ভাবস্থায়
যিনাকারী ব্যক্তিটির সাথে বিয়ে-শাদি নাজায়েয হবে না। বিয়ের ৬ মাস পর যদি বাচ্চা ভুমিষ্ট হয়, তাহলে স্বামীর দিকেই সন্তানের নসব প্রমাণিত থাকবে।
কিন্তু যদি বিয়ের ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই সন্তান ভূমিষ্ট হয়ে যায়, তাহলে উক্ত সন্তানের নসব স্বামী থেকে
প্রমাণিত থাকবে না। হ্যা, তখন যদি যিনাকারী ব্যক্তিটি যিনার কথা উল্লেখ না করে, নিজের সন্তান বলে স্বীকার করে নেয়, তাহলে (কাযাআন) ঐ সন্তানের
নসব যিনাকারী ব্যক্তি থেকে প্রমাণিত হয়ে যাবে। (তখন মনে করা হবে যে, ৬ মাস পরেই ভূমিষ্ট হয়েছে)। আরো জানুন: https://ifatwa.info/101810/