জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَنَا – قَالَ – فَأَدْرَكْتُهُ فَقَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا . قَالَ ” قُلْ ” . قُلْتُ مَا أَقُولُ قَالَ ” قُلْ : هوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ”
আবদুল্লাহ ইবন খুবায়ব তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক বর্ষণমুখর রাতে গভীর অন্ধকারে আমাদের জন্য দু’আ করার উদ্দেশ্যে আমারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তালাশ করতে বের হলাম। এক স্থানে গিয়ে আমি তাঁকে পেলাম।
তখন তিনি বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না।
তিনি আবার বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না। পুনরায় তিনি আমাকে বললেনঃ বল। আমি বললামঃ কি বলব?
তিনি বললেনঃ “সকাল-সন্ধ্যায় কুল হুয়াল্লাহু আহাদ এবং মুআওওয়াযাতায়ন (কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস) তিন বার পাঠ করবে; তবে তা সব কিছুর ক্ষেত্রে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।”
[তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৭৫ [আল মাদানী প্রকাশনী] হাদীসটির সনদ হাসান, তা’লীকুর রাগীব ১/২২৪, আল কালিমুত তাইয়্যিব ১৯/৭]
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
সকাল সন্ধ্যার মাসনূন আমল (তিন কুল, ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী) এগুলো করার পর বদনজর / জাদুর সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ।
তবে এক্ষেত্রে উপরোক্ত আমলের পাশাপাশি হাদিসে বর্ণিত নিম্নোক্ত দোয়াগুলো পাঠ করা যেতে পারে,
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
‘আঊযু বিকালিমাতিল্লা-হিত্ তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্ব (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালাম দ্বারা তাঁর কাছে তাঁর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই)।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৬৩১]
আরেক হাদিসে এসেছে,
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
‘আঊযু বিকালিমাতিল্লাহিত্ তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আয়নিন লাম্মাতিন (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমাত দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি)।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩১৩২]
অপর এক হাদিসে এসেছে,
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ وَعَيْنِ حَاسِدٍ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ وَاللَّهُ يَشْفِيكَ
‘বিসমিল্লাহি আরকিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইউযিকা মিন শাররি কুল্লি নাফসিন ও আয়নি হাসিদিন বিসমিল্লাহি আরকিকা ওয়াল্লাহু ইয়াশফিকা (আমি আপনাকে আল্লাহ তাআলার নামে ঝাড়ছি এমন সকল কিছু হতে যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং সকল প্রকার অনিষ্টকর প্রাণী ও সকল হিংসুটে দৃষ্টি হতে। আল্লাহ তাআলার নামে আমি আপনাকে ঝাড়ছি, আপনাকে আল্লাহ তাআলা সুস্থতা দান করুন)।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ৯৭২]
(০২)
কোনো মুসলিমের সাথে তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা জায়েজ নেই।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ السَّرْخَسِيُّ، أَنَّ أَبَا عَامِرٍ، أَخْبَرَهُم حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ هِلَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَهْجُرَ مُؤْمِنًا فَوْقَ ثَلَاثٍ، فَإِنْ مَرَّتْ بِهِ ثَلَاثٌ، فَلْيَلْقَهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ، فَإِنْ رَدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ فَقَدِ اشْتَرَكَا فِي الْأَجْرِ، وَإِنْ لَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ فَقَدْ بَاءَ بِالْإِثْمِ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো ঈমানদারের জন্য বৈধ নয়, সে কোনো ঈমানদারের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রাখবে। অতঃপর তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর উভয়ে দেখা হলে একজন সালাম দিলে এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি তার সালামের উত্তর দিলে উভয়ই সালামের সাওয়াব পাবে। আর দ্বিতীয়জন সালামের উত্তর না দিলে গুনাহগার হবে। ইমাম আহমাদ এর বর্ণনায় রয়েছেঃ সালামদাতা সম্পর্কচ্ছেদের গুনাহ থেকে মুক্ত হবে।
(আবু দাউদ ৪৯১২)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এই অবস্থায় দেখা-সাক্ষাৎ হলে আপনি অবশ্যই আপনার ভাইকে সালাম দিবেন।
সে জবাব না নিলেও সালাম দিবেন।
মাঝে মাঝে কুশলাদি বিনিময় করার চেষ্টা করবেন। সর্বপরি সম্পর্ক ভালো করতে নিজের পক্ষ থেকে আক্রান্ত চেষ্টা করবেন।
তার এই বিষয়টি শারীরিক কোনো রোগ নয়,তবে মানষিক এক সমস্যা।
উকবাহ ইবনে আমির রাযি থেকে বর্ণিত,
عن عقبة بن عامر قال لقيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال لي يا عقبة بن عامر صل من قطعك وأعط من حرمك واعف عمن ظلمك
আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন,হে উকবাহ ইবনে আমের!যে সম্পর্ককে ছিন্ন করতে চায়,তার সাথে তুমি সম্পর্ক স্থাপন করো।যে তোমাকে মাহরুম করেছে,তাকে তুমি দান করো।যে তোমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে,তাকে ক্ষমা করে দাও।(মুসনাদে আহমাদ-১৬৯৯৯)
(০৩)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পরিবারের মুরব্বি (দাদি,নানি,বড় বোন,খালা,ফুফু,মামি) দের মাধ্যমে আপনার বাবা মাকে বিষয়টি বুঝাবেন।
,
আল্লাহর কাছে দোয়া অব্যাহত রাখবেন।
বিশেষ করে তাহাজ্জুদ পড়ে রোনাযারি করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা অব্যাহত রাখবেন।
এক্ষেত্রে দ্রুত বিবাহের আমল গুলি করার পরামর্শ থাকবে।
এ সংক্রান্ত জানুনঃ-