আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
চারজনের একটি পরিবারে, বাবা ৫ বছর ধরে প্যারালাইস অবস্থায় বিছানায় আছেন । পরিবারে আয় করার আর কেউ নেই । শেষ সময়ে তিনি একতলার একটি বাসা উঠান এবং তার ভাড়ায় এখন পুরো পরিবার চলে । পরিবারের বড় ছেলে নবম ও ছোট মেয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে । মা একজন সাধারণ গৃহিণী
প্রতিমাসে পরিবারের আয় ১৫,০০০৳ তবে ঔষধ , লেখাপড়া, খাবারদাবার, ট্যাক্স ইত্যাদির ব্যায় পরিবারটির কাছে পোষানো  খুব কষ্টদায়ক হয়ে গেছে।
এমন সময়ে পরিবারটি সঞ্চয় পত্রের মাধ্যমে কিছু মুনাফা দিয়ে তাদের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করছে । সঞ্চয়পত্রের ব্যবহারিত টাকা ভাড়া দেওয়া দোকানের advance টাকা যা পরবর্তীতে তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হবে । এমতাবস্থায় মুনাফা দিয়ে তাদের নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ করা কি জায়েজ হবে?এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/99932/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۱۵

কিন্তু কেউ অবাধ্য বা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

(সুরা নাহাল ১১৫)

 فَمَنِ اضۡطُرَّ فِیۡ مَخۡمَصَۃٍ غَیۡرَ مُتَجَانِفٍ لِّاِثۡمٍ ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳

অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা মায়েদা ০৩)

https://www.ifatwa.info/1085  নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

সুদের আদান-প্রদাণ হারাম।তবে অবস্থাবেধে হুকুমে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।মানুষের প্রয়োজন তিন প্রকারের হতে পারে।যথা-

জরুরত (এমন প্রয়োজন যা না হলে নয়) : এমন এক ধরনের প্রয়োজন, যা ছাড়া জীবন হুমকির মুখে পড়ে যায়। যেমন, মরুভূমিতে ক্ষুধার্ত একজন মানুষ, যার কাছে কোনো খাবার নেই। (এই পরিস্থিতিতে মানুষটি জীবন বাঁচানোর তাগিদে হারাম বস্তুও ভক্ষণ করতে পারবে)।

হাজত (এমন প্রয়োজন যা না হলে অত্যাধিক কষ্ট হবে) : কষ্ট বা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে যা করা হয়ে থাকে। (এখানে কষ্ট বা যন্ত্রণা বলতে জীবনের জন্যে হুমকিস্বরূপ বোঝাচ্ছে না) যেমন- একজন সাওম পালনকারী ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। ফরজ সাওম হলেও এ ক্ষেত্রে তা ঐ ব্যক্তির জন্যে ভাঙার অনুমোদন রয়েছে।বা মেয়ের বিয়েতে টাকার প্রয়োজন।

তাহসিন (পছন্দনীয় ও সুশোভিতকরণ) : এ ধরনের প্রয়োজনীয়তাগুলো মানুষের পোশাক-আশাক ও আচার-আচরণের পরিশুদ্ধতা ও পরিপূর্ণতার জন্যে এবং জীবনের মান উন্নয়নের জন্যে দরকারি। যেমন, একজন মানুষের শারীরিক অবস্থা ঠিক রাখার জন্যে মাছ, মাংস ও ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন। (এই তিন প্রকার একজন দ্বীনী বোনের গবেষনা থেকে কপিকৃত) 

হুকুমঃ

প্রথম অবস্থায় সুদ গ্রহণ জায়েয।এবং তৃতীয় অবস্থায় সুদ গ্রহণ জায়েয হবে না। আর দ্বিতীয় অবস্থার ব্যাখ্যা এরূপ যে,অভাব অনটনের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ের যে,খানাপিনা এবং চিকিৎসা ইত্যাদি মত মৌলিক প্রয়োজনাদিকে পূর্ণ করা সুদ ব্যতীত প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সুদ গ্রহণ করা বৈধ হবে। (জাদীদ ফেকহী মাসাঈল-৪/৫২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আপনার প্রশ্নটি কমেন্টের মাধ্যমে আরো স্পষ্ট করার সবিনয় অনুরোধ করছি। তবে সাধারণত এডভান্সের বিধান হলো যে, ভাড়াদাতা ভাড়াগ্রহিতা থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার দুটি পদ্ধতি রয়েছে- ১. ভাড়াদাতা জামানত হিসেবে ভাড়াগ্রহিতা থেকে যে টাকাটা গ্রহণ করে থাকে, ভাড়ার চুক্তি শেষে তা আবার ভাড়াগ্রহিতাকে ফেরত দিয়ে দিতে হয়, যাকে সিকিউরিটি মানি বলে। ২. এককালীন গ্রহণ করা টাকা প্রতি মাসেই কিছু কিছু করে ভাড়া হিসাবে কাটা হয়, যাকে অ্যাডভান্স বলে।

সিকিউরিটি মানির কারণে ভাড়া কম রাখা জায়েজ নয়। অর্থাৎ সিকিউরিটি মানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ভাড়া কমে যাওয়ার যে প্রচলন আমাদের সমাজে রয়েছে, তা জায়েজ নয়। কেননা সিকিউরিটি মানি ভাড়াদাতার কাছে ঋণ হিসেবে থাকে। তাই এ টাকার কারণে ভাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দিলে তা ঋণ দিয়ে ঋণগ্রহিতা থেকে অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহণের অন্তর্ভুক্ত, যা সুদ ও হারাম।

তবে সিকিউরিটি মানি না হয়ে যদি অ্যাডভান্স তথা অগ্রীম ভাড়া প্রদান করার কারণে ভাড়া কিছুটা কমানো হয়, তবে তাতে সমস্যা নেই। কেননা অ্যাডভান্সের টাকাটা ভাড়াদাতার কাছে ঋণ হিসেবে থাকে না।

বরং অগ্রিম প্রদেয় ভাড়া। মোটকথা, সিকিউরিটি মানি বৃদ্ধির কারণে ভাড়ার স্বাভাবিক হার তথা উজরতে মিছিল থেকে কমানো জায়েজ নয়। কিন্তু অ্যাডভান্সে জায়েজ আছে।

ভাড়াদাতা ভাড়াগ্রহীতা থেকে এককালীন যে টাকাটা নেবে, তা অ্যাডভান্স তথা অগ্রিম ভাড়া হিসেবে নেবে, যা চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া হিসেবে কর্তিত হবে। আরো জানুনঃ- https://ifatwa.info/81752/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...