আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম। ২ বছর পূর্বে আমার বিয়ে হয়।বিয়ের কিছুদিন পরে জানতে পারি আমার শ্বশুর এর অনেক টাকা ব্যাংক ঋণ আছে।বিয়ের আগে আমাদের বাড়ির কেউ এ ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞেস করেননি,উনারাও নিজে থেকে জানান নাই। প্রতি মাসে উনাদের  ব্যাংকে সুদ দিতে হয়।এই কারণে সংসারেও টানাপোড়েন হয়। বিভিন্ন আত্নীয় স্বজন এবং অনেক প্রতিবেশীদের কাছেও ঋনী এই কারণে। আমার শ্বশুর এর ৩ ছেলেমেয়ে।আমার স্বামী সবার বড়।মেজ ননদের বিয়ে হয়েছে এবং দেবর ডিপ্লোমা পড়ছে।আমার শ্বশুর এর প্রিন্টিং এর ব্যাবসা ছিল। করোনাকালীন সময় থেকে ব্যাবসায় মন্দা শুরু হয়। এরপর বাধ্য হয়েই ১ বছর আগে তাকে ব্যাবসা ছেড়ে দিতে হয়।ঢাকায় আমার শ্বশুর এর একটা ছোট বাড়ি আছে, এই বাড়ির উপর ই উনি ঋণ নিয়েছিলেন প্রায় ৬/৭ বছর পূর্বে। শেয়ার ব্যাবসায় টাকার ক্ষতি হওয়ায় উনি ঋণ পরিশোধ করতে পারেন নি। এখন পরিবারে উপার্জন করেন কেবল আমার স্বামী। আর কিছু টাকা বাড়িভাড়া আসে।আমি হিসেব পুরোপুরি জানিনা তবে আমি যতটুকু জানতে পেরেছি তার একটা হিসেব দিচ্ছি।আমার শ্বশুর ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। চক্রবৃদ্ধি সুদের কারণে সেটা কিছু টা বেড়েছে। এবং আত্নীয় স্বজন দের ঋণ সব মিলে তাদের ঋন ৬০-৬৫ লাখ টাকা। মাসে তাদের ৪০ হাজার টাকার মত সুদ আসে।আমার স্বামীর বেতন মাসে ২৫ হাজার এবং বাড়ি ভাড়া মাসে ৩৫ হাজার এর মত পান যার অনেকাংশ বিল এবং বাড়ির মেইনটেইনেন্স এ খরচ হয়।উনাদের বাড়ির বর্তমান মূল্য দেড় কোটি টাকার মতো। ব্যাংক এর সুদ দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছেনা উলটো প্রতিমাসেই ব্যাংক এর সুদ এর ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। উনার ৩ ছেলেমেয়ে চান বাড়ি বিক্রি করে এই ঋণ শোধ করতে। যেহেতু আমার শ্বশুর এর এই বাড়ি ব্যতীত অন্য কোনো সম্পত্তি নেই গ্রামেও উনাদের বাড়ি বা জমি নেই।সেজন্য আমার শ্বশুর ইনসিকিউরড ফিল করেন, যে ছেলেমেয়েদের উপর নির্ভরশীল হতে হবে। আমার শ্বশুর এর বর্তমান বয়স ৫৬ বছর। উনি এবং আমার শাশুড়ি কেউ ই বাড়ি বিক্রি করতে চান না।অনেক আলেম দের বক্তব্য, হাদিস কুরআন এর কথা ইত্যাদি দিয়ে উনাদের বুঝানো হয়েছে কিন্তু উনারা কিছুতেই রাজি না।উনাদের কথা ৩ ছেলেমেয়ে চাকরি করলে এই ঋণ জলদিই শেষ হয়ে যাবে।কিন্তু এভাবে শেষ করতে করতে অনেক বছর লেগে যাবে এবং সুদ বাড়তেই থাকবে।আমার স্বামী এবং আমি উনাদের থেকে আলাদা সংসার করতেও রাজি নই। এমতাবস্থায় -

১.আর কি কি উপায়ে এই সুদ থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি?

২.কিভাবে আমি হারাম মুক্ত একটা সুন্দর সংসার গঠন করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (565,920 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/81752/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান মতে সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান উভয়ই লানতপ্রাপ্ত গোনাহ। তাই এ ভিত্তিতে লোন নেওয়া,তা দিয়ে ব্যবসা করা,অন্যকে এ থেকে লোন দেওয়া জায়েজ নয়। হারাম। 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
,
ব্যাংক লোন হারাম।কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আসার পর সেই লোনকে পরিশোধ করার পর উক্ত লোন দিয়ে যা খরিদ বা তৈরী করা হয়েছিলো,সেটা হালালই থাকছে।যদিও লোন গ্রহণ করা হারাম ও অবৈধ ছিলো।

ব্যাংক লোন সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন 

ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করা জায়েজ নয়।

লোন গ্রহণ নাজায়েয ও হারাম। যদি লোনকে হালাল টাকা দ্বারা পরিশোধ করা হয়, তাহলে লোনের টাকা দ্বারা যা কিছুই করা হবে, তা জায়েয।পরবর্তীতে যত ইনকাম হবে, তার সবই জায়েয।
লোন গ্রহণের জন্য তাওবাহ করতে হবে।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সুদ ভক্ষনের গুনাহ হচ্ছেনা। সুদ প্রদানের গুনাহ হচ্ছে।

এক্ষেত্রে এর দায়ভার পুরাটা আপনার শশুরের উপর। আপনার স্বামী বা অন্য কাহারো উপরে নয়। তবে আপনার স্বামী সুদ দিলে আপনার স্বামীর সুদ প্রদানের গুনাহ হবে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার শশুরের যেহেতু বাড়ি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই,আর এটা আপনার শশুর কোনোক্রমেই বিক্রয় করবেননা, পাশাপাশি আপনার স্বামীও কোনোভাবেই আলাদা হতে চাচ্ছেননা,
সুতরাং এক্ষেত্রে পরিত্রানের কোনো উপায় দেখছিনা।

হ্যাঁ,আপনাদের কোনো আত্মীয় বা অন্য কোনো মুসলমান করজে হাসানাহ হিসেবে আপনাদের ঋণ পরিশোধ পরিমান টাকা দেয়,যাহা আপনারা পরে আস্তে-ধীরে তাকে শোধ করে দিবেন,তাহলে অনেক ভালো হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...