অমুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে রণক্ষেত্রে বিজয়ী হবার পর যুদ্ধের ময়দানে পরিত্যক্ত সম্পদ মুসলিম সম্প্রদায়ের হস্তগত হলে তাকে গনিমত বলে । যুদ্ধাস্ত্র, খাদ্যসামগ্রী, যানবাহন, পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদী গনিমতের সম্পদের অন্তর্ভুক্ত।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَا غَنِمۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَاَنَّ لِلّٰهِ خُمُسَهٗ وَ لِلرَّسُوۡلِ وَ لِذِی الۡقُرۡبٰی وَ الۡیَتٰمٰی وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ۙ اِنۡ کُنۡتُمۡ اٰمَنۡتُمۡ بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلٰی عَبۡدِنَا یَوۡمَ الۡفُرۡقَانِ یَوۡمَ الۡتَقَی الۡجَمۡعٰنِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ
‘আর জেনে রেখ! যুদ্ধে যা কিছু তোমরা (গনিমত হিসেবে) লাভ কর, তার এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ, তাঁর রাসুলের, রাসুলের নিকটাত্মীয়, পিতৃহীন এতিম, দরিদ্র এবং পথচারীদের জন্য। যদি তোমরা আল্লাহ ও সেই জিনিসে বিশ্বাসী হও, যা ফয়সালার দিন (বদর প্রান্তরে) আমি আমার বান্দার প্রতি নাজিল করেছিলাম; যেদিন দু’দল (মুসলিম ও কাফের) পরস্পর মুখোমুখি হয়েছিল। আর আল্লাহ তাআলা সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।’ (সুরা আনফাল: আয়াত ৪১)
ইসলামি শরিয়তের পরিভাষা অনুযায়ী অমুসলিমদের কাছ থেকে যুদ্ধ-বিগ্রহে বিজয়ার্জনের মাধ্যমে যে মালামাল অর্জিত হয়, তাকেই বলা হয় ‘গনিমত’। (ফাতহুল কাদির)
এখানে কাফেরদের সাথে জেহাদের পর যুদ্ধলব্ধ সম্পদ গনিমতের হকদারদের বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে। সমস্ত সম্পদ পাঁচ ভাগে ভাগ করা হবে। এর চার ভাগ যোদ্ধাদের মধ্যে বন্টন করা হবে। আর বাকী এক পঞ্চমাংশ বা পাঁচ ভাগের এক ভাগকে আবার পাঁচভাগে ভাগ করা হবে।
প্রথমভাগ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের। এ অংশ মুসলিমদের সাধারণ স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যয় হবে।
দ্বিতীয়ভাগ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বজনদের জন্য নির্ধারিত। তারা হলেন ওই সমস্ত লোক যাদের উপর সদকা খাওয়া হারাম। অর্থাৎ বনু হাশেম ও বনু মুত্তালিব। কারণ তাদের দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর। তিনি তার নবুওয়তের কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকায় তাদের জন্য এ গনিমতের মাল থেকে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তৃতীয়ভাগ এতিমদের জন্য সুনির্দিষ্ট।
চতুর্থভাগ ফকির ও মিসকিনদের জন্য। আর
পঞ্চম ভাগ মুসাফিরদের জন্য। (ইবনে কাসির)
শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে এগুলো গনিমতের অন্তর্ভুক্ত নয়,বিধায় এগুলো ব্যবহার জায়েজ হবেনা।