আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্

 

❏ বিশ্বের প্রধান তিনটি একেশ্বরবাদী ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন সেমেটিক জাতির তিনজন অমর কৃতি সন্তান। তাঁরা হলেন ইহুদি ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুসা (عليه السلام), খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক হযরত ঈসা (عليه السلام) এবং ইসলাম ধর্মের সফল প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)। 

 

[সূত্র : ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্র; একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি; অক্ষর-পত্র প্রকাশনী; পৃষ্ঠা ১২]

 

উপরে উল্লিখিত তথ্যটি কি সঠিক? 

আমার প্রশ্ন হলো, হযরত মুসা (عليه السلام) ও হযরত ঈসা (عليه السلام) কি ইহুদি ও খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচারক ও প্রবর্তক ছিলেন নাকি তাঁরাও ইসলাম ধর্মের প্রচারক ছিলেন, কোনটি সঠিক? এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিলে ভালো হতো।

 

❏ "হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) আবু বকর (রা.)-এর প্রতি এত সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে, তাঁর ইমামতিতে তিনি বহুবার নামাজ আদায় করেন।"

 

[সূত্র : ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্র; একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি; অক্ষর-পত্র প্রকাশনী; পৃষ্ঠা ১৪১]

 

এটিও কি সঠিক? তিনি (ﷺ) মোট কতবার আবু বকর (রা.)-এর পিছনে নামাজ আদায় করেছেন?

1 Answer

0 votes
by (568,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হ্যা, হযরত মুসা আঃ ও হযরত ঈসা আঃ ইহুদি ও খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচারক ও প্রবর্তক ছিলেন। এবং তখন সেগুলোকে ইসলাম ধর্ম হিসেবেই বিবেচনা করা হত,সত্য ধর্ম হিসেবে মানা হতো। পরবর্তীতে যখন ইহুদী ধর্ম বিকৃত হতে শুরু করে, তখন খৃষ্ট ধর্মের আবির্ভাব ঘটে অতঃপর যখন খৃষ্ট ধর্মও বিকৃত হতে শুরু করে, তখন ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব ঘটে। এবং আল্লাহ তা'আলা কিয়ামত পর্যন্ত ইসলাম ধর্মকে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা করবেন বলে ঘোষণা দিয়ে দেন।

لما في موسوعة الملل والادیان:
"المبحث الأول: تعريف اليهودية:
اليهودية: هي ديانة العبرانيين المنحدرين من إبراهيم عليه السلام والمعروفين بالأسباط من بني إسرائيل الذين أرسل الله إليهم موسى عليه السلام مؤيداً بالتوراة؛ ليكون لهم نبيًّا.
واليهودية ديانة يبدو أنها منسوبة إلى يهود الشعب، وهذه بدورها قد اختلف في أصلها، وقد تكون نسبة إلى يهوذا أحد أبناء يعقوب، وعممت على الشعب على سبيل التغليب.
المصدر:الموسوعة الميسرة للندوة العالمية للشباب الإسلامي
اليهودية: مصطلح حادث يطلق على الديانة الباطلة المحرفة عن الدين الحق الذي جاء به موسى عليه السلام."
(المبحث الأول: تعريف اليهودية،ج:1،ص:21،ط:موقع الدررالسنية)

وفیہ ایضا:
"المبحث الأول: التعريف:
النصرانية لغة: قيل: نسبة إلى نصرانة، وهي قرية المسيح عليه السلام من أرض الجليل، وتسمى هذه القرية ناصرة ونصورية، والنسبة إلى الديانة نصراني، وجمعه نصارى.
النصرانية اصطلاحاً: هي دين النصارى الذين يزعمون أنهم يتبعون المسيح عليه السلام، وكتابهم الإنجيل.
(المصدر: دراسات في الأديان اليهودية والنصرانية لسعود بن عبد العزيز الخلف – ص 165)

التعريف: هي الرسالة التي أُنزلت على عيسى عليه الصلاة والسلام، مكمِّلة لرسالة موسى عليه الصلاة والسلام، ومتممة لما جاء في التوراة من تعاليم، موجهة إلى بني إسرائيل، داعية إلى التوحيد والفضيلة والتسامح، ولكنها جابهت مقاومة واضطهاداً شديداً، فسرعان ما فقدت أصولها، مما ساعد على امتداد يد التحريف إليها، فابتعدت كثيراً عن أصولها الأولى؛ لامتزاجها بمعتقدات وفلسفات وثنية.
المصدر:الموسوعة الميسرة للندوة العالمية للشباب الإسلامي تطلق النصرانية على الدين المنزل من الله تعالى على عيسى عليه السلام، وكتابه الإنجيل (1).
وأتباعها يقال لهم: (النصارى) نسبة إلى بلدة الناصرة في فلسطين، وهي التي ولد فيها المسيح.
أو إشارة إلى صفة: وهي نصرهم لعيسى عليه السلام، وتناصرهم فيما بينهم. وهذا يخص المؤمنين منهم في أول الأمر، ثم أطلق عليهم كلهم على وجه التغليب. ويشهد لذلك قوله تعالى: قَالَ الْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ اللهِ [آل عمران: 52]."
(المبحث الأول: التعريف،ج:1،ص:215،ط:موقع الدررالسنية)



(২)
সাহল ইবনু সা’দ আস্ সাইদী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَهَبَ إِلَى بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ لِيُصْلِحَ بَيْنَهُمْ فَحَانَتِ الصَّلاَةُ فَجَاءَ الْمُؤَذِّنُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ أَتُصَلِّي بِالنَّاسِ فَأُقِيمُ قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ فِي الصَّلاَةِ فَتَخَلَّصَ حَتَّى وَقَفَ فِي الصَّفِّ فَصَفَّقَ النَّاسُ - وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ لاَ يَلْتَفِتُ فِي الصَّلاَةِ - فَلَمَّا أَكْثَرَ النَّاسُ التَّصْفِيقَ الْتَفَتَ فَرَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَشَارَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِ امْكُثْ مَكَانَكَ فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ يَدَيْهِ فَحَمِدَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى مَا أَمَرَهُ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ ذَلِكَ ثُمَّ اسْتَأْخَرَ أَبُو بَكْرٍ حَتَّى اسْتَوَى فِي الصَّفِّ وَتَقَدَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى ثُمَّ انْصَرَفَ فَقَالَ " يَا أَبَا بَكْرٍ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَثْبُتَ إِذْ أَمَرْتُكَ " . قَالَ أَبُو بَكْرٍ مَا كَانَ لاِبْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا لِي رَأَيْتُكُمْ أَكْثَرْتُمُ التَّصْفِيقَ مَنْ نَابَهُ شَىْءٌ فِي صَلاَتِهِ فَلْيُسَبِّحْ فَإِنَّهُ إِذَا سَبَّحَ الْتُفِتَ إِلَيْهِ وَإِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ "
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বানী ’আমর ইবনু আওফ গোত্রের মধ্যে (তাদের অভ্যন্তরীণ ঝগড়া) মীমাংসা করে দেয়ার জন্য চলে গেলেন। সালাতের সময় হয়ে আসলো। মুয়াযযিন এসে আবূ বকর (রাযিঃ)-কে বলল, আপনি কি লোকেদের সালাত আদায় করিয়ে দিবেন? তাহলে আমি ইকামাত দেই। তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাবী বলেন, আবূ বকর (রাযিঃ) সালাত আরম্ভ করলেন। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে গেলেন। তখন লোকেরা সালাত আদায় করছিল। তিনি পিছন দিক থেকে কাতারে শামিল হয়ে গেলেন। লোকেরা হাততালি দিয়ে সংকেত দিল। কিন্তু আবূ বকর (রাযিঃ) সালাতরত অবস্থায় এদিকে ভ্রুক্ষেপ করলেন না। অতঃপর লোকেরা যখন বেশী তালি বাজাতে লাগল, তিনি এদিকে ফিরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ইশারা করে বললেনঃ নিজের জায়গায় স্থির থাকো।
আবূ বকর (রাযিঃ) তার দু’হাত উপরে তুলে মহান আল্লাহর প্রশংসা করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ নির্দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। অতঃপর আবূ বকর (রাযিঃ) পিছনে সরে এসে লাইনে শামিল হয়ে গেলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সামনে অগ্রসর হয়ে সালাত আদায় করালেন। সালাত সমাপ্ত করে তিনি বললেন, হে আবূ বকর! আমার নির্দেশের পরও নিজ স্থানে স্থির থাকতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? আবূ বকর (রাযিঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপস্থিতিতে আবূ কুহাফার পুত্রের জন্য সালাতে ইমামাত করা কক্ষনো মানায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমি তোমাদের বেশি তালি বাজাতে দেখলাম কেন? তোমাদের কারো সালাতে কোন কিছু ঘটলে সে সুবহানাল্লাহ’ বলবে। সে যখন সুবহানাল্লাহ বলল তখনই ইমামের কিছু আকর্ষণ করা হলো মহিলারাই কেবল তাসফীহ (হাততালি) দিবে।(সহীহ মুসলিম-৮৩৫) 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এই একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম' আবু বকরের পিছনে নামায পড়তে চাইছিলিন।। এবং একবার আব্দুর রহমান ইবনে আউফের পিছনে। হ্যা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম' এর অসুস্থাবস্থায় আবু বকর মোট ১৭ ওয়াক্তের ইমামতি করেছিলেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...