আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে সনামধন্য গুটি কয়েক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটির ৩য় বর্ষের ছাত্র।
পদেপদে আমরা দেখে আসতেসি বৈষম্য। কোটা নিয়ে আন্দোলন করতে নামলো আমাদের ভাই বোনেরা ফিরে এলো রক্তাক্ত হয়ে। লেবাস ধারন করলে, হক কথা বললে আমাদের বলা হয় জংগী। পরিবারের কথা চিন্তা করে চুপ করে বাসায় বসে ঘুটে ঘুটে শেষ হয়ে যাচ্ছি। এই দেশে নিজের ভবিষ্যত কল্পনা করতে ভয় হয়, ঘৃণা হয়।
আমি মেধাবী আলহামদুলিল্লাহ। আমি স্কলারশিপ নিয়ে বউ সহ বিদেশে পড়ালেখা করে, চাকরি করে সম্মানের সাথে সেটেল হবার সামর্থ রাখি আলহামদুলিল্লাহ। আমার জন্য কি অমুসলিম দেশে গিয়ে সেটেল হওয়া হালাল হবে না (মুসলিম দেশে সিটিজেনশিপ দেয় না যতদূর জানি আমি)? আমি এই সন্ত্রাস আর সহ্য করতে পারছি না!

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/11330/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি যদি মুসলিম দেশে হন্যে হয়ে খোঁজাখোঁজি করা সত্ত্বেও জীবিকা উপার্জনের কোন সোর্স ব্যবস্থা করতে না পারে, এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাপারে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে যায়, এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো অমুসলিম দেশে জায়েয কোনো চাকরি পেয়ে যায়, তাহলে দু’টি শর্ত সাপেক্ষে তার জন্য সেখানে যাওয়া এবং বসবাস করা জায়েয হবে। যথাঃ-

প্রথম শর্ত: বসবাসকারীকে স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ তার এমন ‘ইলম, ঈমান ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে, যা তাকে দ্বীনের ওপর অটল থাকার মতো এবং বক্রতা ও বিপথগামিতা থেকে বেঁচে থাকার মতো আত্মবিশ্বাসের জোগান দেয়। আর কাফিরদের প্রতি তার অন্তরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকতে হবে। অনুরূপভাবে কাফিরদের সাথে মিত্রতা ও তাদের প্রতি ভালোবাসা থেকে তাকে দূরে থাকতে হবে। কেননা তাদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করা এবং তাদেরকে ভালোবাসা ঈমানের পরিপন্থি। সমস্ত প্রকার অন্যায় অশ্লীল কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।

মহান আল্লাহ বলেছেন,

 لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ

“তুমি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোনো জাতিকে পাবে না, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বিরোধীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে; যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, কিংবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়।” [সূরাহ মুজাদালাহ: ২২]

দ্বিতীয় শর্ত: নিজের দ্বীনকে প্রকাশ করার মতো সক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ, বসবাসকারী ব্যক্তি কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ইসলামের নিদর্শনাবলি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন। নামাজ, জুমু‘আহ ও জামা‘আতযদি তার সাথে জামা‘আতে নামাজ ও জুমু‘আহ প্রতিষ্ঠা করার মতো কেউ থেকে থাকেনপ্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। অনুরূপভাবে জাকাত, রোজা, হজ ও অন্যান্য শার‘ঈ নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। যদি এসব কাজ করার সক্ষমতা না থাকে, তাহলে তখন হিজরত ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে বসবাস করা জায়েজ হবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/13775/

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

উক্ত শর্ত গুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে চলার শর্তে আপনি কুফফার/অমুসলিম রাষ্ট্রে লেখাপড়ার জন্য যেতে পারবেন। তবে অবশ্যই দুটো প্রধান শর্ত মেনে চলতে হবে। তবে একজন দাঈ ইলাল্লাহ হিসেবে আপনি যদি অন্তরে কাফিরদের দ্বীনের দাওয়াত প্রদানের নিয়ত রাখেন, তাহলে অমুসলিম দেশে যেতে পারবেন। এমনকি স্থায়ীভাবে থাকার বন্দোবস্তও করতে পারবেন। কেননা অনেক সাহাবা তাবেইন অমুসলিমদের মধ্যে এজন্য এসে বসবাস শুরু করেছিলেন, যেন তাদের নিকট  ইসলামের বাণী পৌছানো যায়। সদাসর্বদা নিজের ঈমান ইসলামের প্রতি সযত্ন থাকতে হবে।

কিন্তু আপনি যদি উপরোক্ত শর্ত গুলো মেনে কোন অমুসলিম রাষ্ট্রে যেতে না পারেন এমতাবস্থায় বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রেও স্কলারশিপ নিয়ে যাওয়ার এবং সেখানে অবস্থান করার ও পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে। আপনি চাইলে কোন মুসলিম রাষ্ট্রে যেতে পারেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...