আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
42 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
১/ যদি কেউ আমাকে বলে যে, তুমি যদি উপরে খালি ঘর থেকে একা গিয়ে কোনো একটা জিনিস এনে দিতে পার তাহলে তোমাকে আমি টাকা দিব অথবা যেকোনো কিছু। এইক্ষেত্রে এই টাকা নেওয়া কি হারাম হবে বা জুয়ার পর্যায়ে পড়বে??

অথবা, তুমি যদি কাচা ডিম খেতে পার তাহলে তোমাকে আমি টাকা দিব। এইক্ষেত্রে এই টাকা নেওয়া কি হারাম বা জুয়ার পর্যায়ে পড়বে??? যদি এই টাকা গ্রহণ করে তাহলে কি গুনাহ হবে???
২/ মেয়েদের চুল ডাস্টবিনে ফেললে/বিক্রি করলে কি গুনাহ হবে??একজন মুফতি জানিয়েছেন, চুল ঝরে গেলে সেগুলো ফেললে / বিক্রি করলে কোনো গুনাহ নেই।

1 Answer

0 votes
by (544,470 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
https://ifatwa.info/25875/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান মতে জুয়া স্পষ্ট আকারে হারাম।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا  [٢:٢١٩]

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। [সূরা বাকারা-২১৯]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٥:٩٠]
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ [٥:٩١]

হে মুমিনগণ,এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [সূরা মায়িদা-৯০-৯১]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,    
মূলত জুয়া বলা হয়, যা লাভ ও লোকশানের মাঝে ঝুলন্ত থাকে, এমন অর্থের খেলার নাম  জুয়া।

প্রত্যেক ঐ মুআমালাকে জুয়া বলা হয়, যা লাভ ও লোকশানের মাঝে ঝুলন্ত ও সন্দেহযুক্ত থাকে।  [জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-২/৩৩৬]

كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الْقِمَارِ فَهُوَ مِنَ الْمَيْسِرِ حَتَّى لَعِبِ الصِّبْيَانِ بِالْجَوْزِ.
প্রত্যেক বাজি মাইছির তথা জুয়ার অন্তর্ভূক্ত এমনকি শিশুদের হারজিতের খেলাও জুয়ার অন্তর্ভূক্ত। [তাফসীরে ইবনে কাসীর-২/১১৬, সূরা মায়িদা, আয়াত নং-৯০-৯৩]

الميسر هو كل عملية يكون المشارك فيها إما غانماً وإما غارماً
‘প্রত্যেক এমন কাজ যাতে অংশগ্রহণকারী লাভ বা লোকসানের মাঝে ঝুলন্ত থাকে।’ [ফাতওয়া শাবকাতুল ইসলামিয়া ১২/১৬১০, ফাতওয়া নং, ৫৪৭]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,    
এক্ষেত্রে উক্ত কাজ করতে না পারলে অর্থাৎ আপনি যদি তার কথামতে জিততে না পারেন,সেক্ষেত্রে যদি আপনার কোনো টাকা না দিতে হয়,বরং কাজটি করতে পারলেই শুধু আপনি টাকা পান,না পারলে টাকা দিতে না হয়,সেক্ষেত্রে এই টাকা নেয়া জায়েজ হবে।

এতে গুনাহ হবেনা 

(০২)
চুল ডাস্টবিনে ফেললে গুনাহ হবেনা,তবে এটি আদবের খেলাফ কাজ।তাই এগুলোকে দাফন করতে হবে।

চুল বিক্রি করা কোনোক্রমেই জায়েয হবে না।
বিক্রয় করলে সেই টাকা হারাম হবে।

ইমাম মুহাম্মদ রহঃ তার রচিতগ্রন্থে বলেন,

 ولا يجوز بيع شعر الانسان

অর্থ, মানুষের চুল বিক্রি করা জায়েয নাই।
(মাজেউস সগীর মায়া নাফেউল কবীরঃ ১/৩২৮)

জাসেউস সগীরের ব্যাখ্যাগ্রন্থ নাফেউল কবীরে এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,

ولا يجوز بيع شعر الإنسان إلخ لأن الإنسان مكرم فلا يجوز أن يكون منه شئ مبتذل

অর্থ,(মানুষের চুল বিক্রি করা জায়েয নাই) কেননা, মানুষ হলো সম্মানী। সুতরাং কিছূতেই জায়েয হবে না মানুষের কোন অঙ্গকে অমর্যাদা করা।
(নাফেউল কবীর শরহে জামেউস সগীরঃ ১/৩২৮)

কানজুদ দাকায়েকের ব্যাখ্যাগ্রন্থ তাবঈনুল হাকায়েকে আছে,

قَالَ ( وَشَعْرِ الْإِنْسَانِ ) يَعْنِي لَا يَجُوزُ بَيْعُ شَعْرِ الْإِنْسَانِ وَالِانْتِفَاعُ بِهِ ؛ لِأَنَّ الْآدَمِيَّ مُكَرَّمٌ فَلَا يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ جُزْؤُهُ مُهَانًا

অর্থ, কানজুদ দাকায়েকের লিখকের কথা (মানুষের চুল) । অর্থাৎ অর্থ,মানুষের চুল বিক্রি করা জায়েয নাই কেননা, মানুষ হলো সম্মানী। সুতরাং কিছূতেই জায়েয হবে না মানুষের কোন অঙ্গকে অপমানীত করা।
(তাবঈনুল হাকায়েকঃ ১০/৪৬৩)

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...