ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/69174/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- বিবাহ পূর্ব প্রেম পুরোপুরি নাজায়েজ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ
أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ
اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি
নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়
তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে
বর্ণিত:
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ،
وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ،
وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى
وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম]
দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার
জিনা হল, [গায়রে
মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা
স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল,
[খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান
তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে
জিনা না করে]। {সহীহ
মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
আপনার প্রধান কাজ তো হল আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত
হয়ে তাওবা করা।
আর
যদি আপনি আসলেই আল্লাহর কাছে তাওবা করতে চান তাহলে প্রথমে এই পাপে পুনরায় পতিত হওয়ার
সকল দরজা-জানালা বন্ধ করে দিন। এক কথায়, মেয়েটির সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ একেবারে
বন্ধ করে দিন। যোগাযোগ বন্ধ করার কারণে মেয়েটি যদি মনোকষ্ট নেয় তাহলে আপনার কোনো গুনাহ
তো হবেই না;
বরং
নিজে গুনাহ থেকে বাঁচার এবং মেয়েটিকে গুনাহ থেকে বাঁচানোর সাওয়াব পাবেন।
আল্লাহওয়ালাদের সোহবত গ্রহন করুন। এতে নফস নিয়ন্ত্রণ
করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা সহজ হবে।
★তার কথা মনে পড়ে,এমন কোনো কাজ,স্থান সবকিছু থেকেই দূরে
থাকবেন।
★মনের কামনার বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রধান অস্ত্র হল
ঈমান। ঈমান সুদৃঢ় রাখতে হবে।
★ধৈর্য ও মনের দৃঢ়-সংকল্পতা এবং সুপুরুষের মত মনের
স্থিরতা। মনের খেয়াল-খুশীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দৃঢ়-সংকল্প হোন, যে, আপনি ঐ শয়তানী কুমন্ত্রণায়
সায় দেবেন না।
অতএব
ধৈর্যের সাথে শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন, এবং তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে
পানাহ চাইবেন।
★নির্জনতা ত্যাগ করুন। কারণ, নির্জনতায় ঐ শ্রেণীর
কুবাসনা মনে স্থান পায় বেশী। অতএব সকল অসৎ-চরিত্রের বন্ধু থেকে দুরে থেকে সৎ-বন্ধু
গ্রহণ করে বিভিন্ন সৎ আলোচনায় প্রবৃত্ত হোন।
★আল্লাহর যিকরে মনোযোগ দিন। বিভিন্ন ফলপ্রসু বইপুস্তক
পাঠ করুন। সম্ভব হলে সে জায়গা একেবারে বর্জন করুন, যে জায়গায় পা রাখলে
তার সহিত দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ফোন/মেসেজ এলে তার উত্তর দিবেন না।
প্রত্যেক নামাযের পর দৈনিক অন্তত পাঁচ বার কিছু সময়ের
জন্য- দুই থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্যের মুরাকাবা করুন। মুরাকাবা এভাবে
করবেন- চোখ বন্ধ করবেন। তারপর ভাববেন, ‘আমি যেখানেই থাকি না আল্লাহ আমার সাথে
আছেন।’
নিজেকে হেফাজতে রাখার জন্য আপনি অনতিবলম্বে শরিয়তসিদ্ধ
পথ গ্রহণ করুন। সেটা হচ্ছে-বিবাহ। বিবাহের মাধ্যমে আপনি পুনরায় এ জাতীয় হারামে লিপ্ত
হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنْ اسْتَطَاعَ
منكُم الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ ، وَأَحْصَنُ
لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ
وِجَاءٌ
‘হে যুব সমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্য রাখ তাদের
উচিত বিয়ে করে ফেলা। কেননা বিয়ে দৃষ্টি অবনতকারী ও লজ্জাস্থানকে হেফাযতকারী। আর যার
সামর্থ্য নেই তার উচিত রোযা রাখা। কেননা রোযা যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী।’ (বুখারী ৫০৬৬)
আরো জানুনঃ-
https://ifatwa.info/22415/
https://ifatwa.info/56814/
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার দুইটি অপরাধ হয়েছে। এক নাম্বার ফরজ সালাত আদায় করতে বিলম্ব করা এবং নামাজ কাজা করা। দুই নাম্বার গোনাহ হারাম রিলেশনের মধ্যে থাকা। প্রশ্নে উল্লেখিত কারণে যদিওবা ঈমান ভঙ্গ হবে না তথাপি এটি যে, কবীরা গুনাহ এতে
কোন সন্দেহ নেই। আল্লাহ তাআলার নিকটে খালেস অন্তরের তওবা করতে হবে এবং উক্ত সালাতের কাজা আদায়
করতে হবে। সেই সাথে অনতিবিলম্বে হারাম সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। হারাম থেকে বাঁচার জন্য
উপরে উল্লেখিত নসিহাগুলো অনুসরণ করতে পারেন।