আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার গত ডিসেম্বরে বিয়ে হয়। জানুয়ারি মাসে পিরিয়ড এর ডেট ছিল ৬ তারিখে। কিন্তু সময়মত হয়নি। ১৬ তারিখ আমার হঠাৎ ব্লিডিং শুরু হয়। ২-৩ দিন ছিল। এরপরে অল্প অল্প করে ২১ তারিখ পর্যন্ত ছিল। পিরিয়ড ভেবে আমি নামাজ পড়িনি,ব্লিডিং কমে যাওয়ার পরেও অপেক্ষা করেছি কারণ আমার সাধারণত ৯-১০ দিন পিরিয়ড থাকে। ২১ তারিখ থেকে আবার নামাজ শুরু করেছি। পরের মাসেও আবার ১ দিন ব্লিডিং হয়েছিল। এরপর বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পিরিয়ড ভেবে নামাজ পড়িনি,আরো ২ দিন ওয়েট করেছি। পরে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় বুঝতে পারি ব্লিডিং হয়েছে প্রেগন্যান্সির জন্য। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ওই কয়েকদিনের নামাজ কি আমার কাজা করতে হবে কিনা। হলেও কিভাবে করবো সেটা জানালে ভালো হতো। যদি কাজা করতে হয় তাহলে কি আমার সময় সুবিধার জন্য বর্তমান নামাজের সুন্নতটুকু বাদ দিতে পারবো?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/7702/    নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো গর্ভাবস্থায় কোনো রক্ত আসলে সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা বলে গন্য হবে। এক্ষেত্রে নামাজ নিষেধ নয়। পড়তেই হবে।

وما تراہ صغیرة دون تسع․․․ وحامل ولو قبل خروج أکثر الولد استحاضة (رد المحتار علی الدر المختار: ۱/۴۷۷، باب الحیض، زکریا)

সারমর্মঃ  গর্ভাবস্থায় সন্তান প্রসবের পূর্বে কোনো রক্ত আসলে সেটি ইস্তেহাজা। 

উল্লেখিত মাসয়ালা পূর্ণ ইবারতঃ

(والناقص) عن أقلہ (والزائد) علی أکثرہ أو أکثرالنفاس أوعلی العادة وجاوز أکثرہما. (وما تراہ) صغیرة دون تسع علی المعتمد وآیسة علی ظاہر المذہب (حامل) ولو قبل خروج أکثر الولد (استحاضة.)(الدر المختار وحاشیة ابن عابدین (رد المحتار) 1/ ط:زکریا، دیوبند)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ أَبِي حُبَيْشٍ، جَاءَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنِّي امْرَأَةٌ أُسْتَحَاضُ فَلاَ أَطْهُرُ أَفَأَدَعُ الصَّلاَةَ قَالَ " إِنَّمَا ذَلِكِ عِرْقٌ وَلَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلاَةَ وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ ثُمَّ صَلِّي " .

আহমাদ ইবনু ইউনূস ......... আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতেমা বিন্তে আবূ হুবায়েশ (রাঃ) রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে উপস্হিত হয়ে বলেন, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মহিলা। দীর্ঘদিন যাবত আমার রক্তস্রাব বন্ধ হচ্ছে না। এ সময় কি আমি নামায ত্যাগ করব? তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এটা বিশেষ শিরা হতে নির্গত রক্ত, হায়েযের রক্ত নয়। অতএব তোমার যখন হায়েযের নির্ধারিত সময় উপস্হিত হবে তখন নামায ত্যাগ করবে এবং ঐ সময় অতিক্রাস্ত হলে প্রত্যেক নামাযের পূর্বে রক্ত ধৌত করে অযু করে নামায আদায় করবে। (আবু দাউদ ২৮২)

حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَقِيلٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، وَعَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ خَتَنَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَحْتَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ اسْتُحِيضَتْ سَبْعَ سِنِينَ فَاسْتَفْتَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ هَذِهِ لَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ وَلَكِنْ هَذَا عِرْقٌ فَاغْتَسِلِي وَصَلِّي " . قَالَتْ عَائِشَةُ فَكَانَتْ تَغْتَسِلُ فِي مِرْكَنٍ فِي حُجْرَةِ أُخْتِهَا زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ حَتَّى تَعْلُوَ حُمْرَةُ الدَّمِ الْمَاءَ

ইবনু আবূআকীল --------- নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী . আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মে হাবীবা বিন্তে জাহশ (রাঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্যালিকা ছিলেন এবং আব্দুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) -এর স্ত্রী ছিলেন- একাধারে সাত বছর ইস্তেহাযাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন, এটা হায়েযের রক্ত নয়, বরং একটি - বিশেষ শিরা হতে প্রবাহিত রক্ত। অতএব তুমি গোসলনাস্তে নামায আদায় করবে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, অতঃপর তিনি (উম্মে হাবীবা) তাঁর বোন যয়নব বিন্তে জাহশের হুজরাতে একটি রড় পাত্রে গোসল করতেন এবং পাত্রের পানিতে রক্তের রং-এর প্রাধান্য হত। (আবু দাউদ ২৮৮)

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত সাদা স্রাব ইস্তেহাযা।

সেই সময়ে নামাজ মাফ নয়,নামাজ পড়তেই হবে। তবে যদি আপনি মাযুর হোন,অর্থাৎ  এত বেশি সাদা স্রাব নির্গত হতে থাকে যে, কোন নামাজের সম্পূর্ন ওয়াক্তের মাঝে এত টুকু সময় বিরত হয়না যার মাঝে আপনি তাড়াতাড়ি করে অজুর ফরজ অংঙ্গগুলো ধুয়ে ফরজ নামাজ আদায় করতে পারেন।

এরুপ হলে আপনি মাজুর (অক্ষম) বলে গন্য হবেন এবং মাজুর ব্যাক্তির বিধান আপনার উপর আরোপ হবে। এক্ষেত্রে শুধু  প্রতি ওয়াক্ত এর জন্য অজু করবেনএবং অজুর পূর্বে স্রাব ধুয়ে নিবেন। এবং পাক পায়জামা পড়বেন। তারপর নামাজের মাঝে সাদা স্রাব বের হলেও নামাজ ভাঙ্গবেনা, ওভাবেই নামাজ পড়ে নিবে এবং সাদা স্রাব বের হওয়া ছাড়া অন্য কোন অজু ভঙ্গকারী কিছু পাওয়া না যায় তাহলে এই ওয়াক্তে যত খুশি নামাজ পড়তে পারবেন।

কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন। আর যদি এরপর কখনো এমন একটা ওয়াক্ত অতিবাহিত হয় যার মাঝে একবার ও ওই কারন পাওয়া না হয়।

অর্থাৎ একবার ও সাদা স্রাব বের না হয়। তাহলে সে আর মাজুর থাকবেননা। তখন আপনি সুস্থ হিসেবে গন্য হবেন,সাদা স্রাব বন্ধ হওয়ার পর বা সাদা স্রাব আসার আগেই এয়াক্তের মধ্যে নামাজ আদায় করবেন। 

মাযুর সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/3954/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত বর্ণনা অনুযায়ী  উক্ত দিনগুলোতে  প্রেগনেন্সির অবস্থায় যে রক্ত নির্গত হয়েছে তা ইস্তিহাযার রক্ত ছিল।  বিধায় উক্ত অবস্থায় যেই কয় ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হয়নি সেগুলি কাজা আদায় করতে এবং শুধু ফরজ নামাজ কাজা করতে হবে সুন্নত বা নফল নামাজ কাজার বিধান নেই। তবে  এশার ফরজ সালাতের সাথে বিতির সালাতেরও কাজা করতে হবে। একদিনেই পূর্বের সমস্ত কাযা আদায় করতে হবে বিষয়টি এমন না বরং আপনি আপনার সাধ্য অনুযায়ী ধীরে ধীরে আদায় করবেন ইচ্ছাকৃতরভাবে কাযা আদায়ে বিলম্ব করা যাবে নাবিশেষ কোন ওজরের কারণে যদি কখনো কোনদিন সুন্নত নফল আদায়ের সুযোগ না হয় এতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু নিয়ম তান্ত্রিকভাবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দিতে অভ্যস্ত হলে গুনাহ হবে


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...