আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমাদের বাড়িতে শুধু দোতলায় ফ্ল্যাট করা হয়েছে এবং এখানে বর্তমানে আমার পরিবার বসবাস করছে। বাকি ফ্লোরগুলো পরবর্তীতে আমার চাচাগণ করবেন ইনশাআল্লাহ । আমাদের দোতলার ফ্লোর বাদে নিচে পুরোটাই এখনো আন্ডার কন্সট্রাকশন অবস্থায় আছে । আমাদের নিচতলায় মেইন গেট নেই ওখানে টিনের একটা গেট বানানো আছে এবং আমরা রাতে ঐ গেট লাগিয়ে দেই এবং উপরে আমাদের ফ্ল্যাটের মেইন গেট লাগাই ।
আমাদের এলাকার একটি কুকুর প্রতিদিন আমাদের দোতলার গেটের সামনে এসে রাতে ঘুমায় আর বেশিরভাগ সময় এখানেই থাকে । রাস্তায় বাকি কুকুরগুলো এটাকে রাতে খুব কামড় দেয় তাই ভয়ে এটা আমাদের বাড়ির ভেতরেই থাকে তবে ফ্ল্যাটের বাইরে। আমরা প্রায় প্রতি বেলায় আমাদের খাবারের পর কুকুরকে খাবার দেই । কুকুরটা মাঝে মাঝে দুপুরে বাইরে রাস্তায় কতক্ষন থাকে তারপর আবার আমাদের ফ্ল্যাটের মেইন গেটের সামনে দোতলায় বসে থাকে । কেউ আসলে চিৎকার ও করে না কিছুই না শুধু খাবার দিলে খায় আর ঘুমায় ।


আমরা এতদিন এটা কোনো সমস্যা মনে করিনি তবে ইদানিং আমার মা বলছেন কুকুর ঘরে থাকলে রহমতের ফেরেশতা ঘরে আসে না তাই হয়ত পরিবারের বরকত কমে যাচ্ছে, আগে তো এমন ছিল না ।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে কুকুরটা যেহেতু আমাদের ফ্ল্যাটের ভেতরে আসে না, গেটের সামনে বসে থাকে আর নিচে গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিচরণ করে। এক্ষেত্রে কি এটার কারণে আমাদের জন্য এটাকে রাখা হারাম হবে ?
রাস্তায় বের করে দিলে অন্য কুকুর এটাকে হয়ত মেরে ফেলবে অথবা খাবার না পেয়ে কষ্ট পাবে ।
আমি জানি শিকার এবং পাহারার জন্য কুকুর পালা যায় কিন্তু আমরা এটাকে পালছি না, সম্পূর্ণ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শুধু আশ্রয় দিচ্ছি। এতে কি আমাদের গুনাহ হবে অথবা ঘরে রহমতের ফেরেশতা আসা বন্ধ হয়ে যাবে???

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
    
عن أبي طلحة رضي الله عنه : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لا تدخل الملائكة بَيْتَا فيه كلب ولا صُورة». عن ابن عمر رضي الله عنهما ، قال: وعد رسول الله صلى الله عليه وسلم جبريل أن يَأتِيَهُ، فَرَاثَ عليه حتى اشْتَدَّ على رسول الله صلى الله عليه وسلم فخرج فَلَقِيَهُ جبريل فَشَكَا إليه، فقال: إنا لا نَدْخُل بَيْتَا فيه كلب ولا صُورة. عن عائشة رضي الله عنها ، قالت: واعد رسول الله صلى الله عليه وسلم جبريل عليه السلام، في ساعة أن يأتيه، فجاءت تلك الساعة ولم يَأتِهِ! قالت: وكان بِيَدِه عصا، فَطَرَحَها من يَدِهِ وهو يقول: «ما يُخْلِفُ الله وَعْدَهُ ولا رُسُلُهُ» ثم التَفَتَ، فإذا جَرْوُ كلب تحت سريره. فقال: «متى دخل هذا الكلب؟» فقلت: والله ما دَرَيْتُ به، فأمر به فأخرج، فجاءه جبريل -عليه السلام- فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «وعَدْتَنِي، فَجَلَسْتُ لك ولم تَأتِني» فقال: مَنَعَنِي الكلب الذي كان في بيتك، إنا لا نَدْخُل بَيْتَا فيه كلب ولا صورة

আবূ তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ফিরিশতাগণ সে ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর ও ছবি রয়েছে।” ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জিবরীল তার নিকট আসার ওয়াদা করেছিলেন, কিন্তু আসতে বিলম্ব করলেন, ফলে বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর কঠিন ঠেকল। তিনি বের হলে জিবরীল তার সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি তাকে (বিলম্বের) হেতু জিজ্ঞাসা করলে জিবরীল বললেন, “আমরা এমন ঘরে প্রবেশ করি না যেখানে কুকুর ও ছবি রয়েছে।” আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জিবরীল আলাইহিস সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি সময়ে আসার ওয়াদা দিয়েছেন, সে সময়টি ঘনিয়ে আসল, কিন্তু তিনি আসলেন না! আয়েশা বলেন, তার হাতে একটি লাঠি ছিল, সেটি হাত থেকে ফেলে দিলেন এবং বলতে লাগলেন: “আল্লাহ ও তার রাসূলগণ ওয়াদার বরখেলাফ করেন না।” অতঃপর তিনি ঘুরে দেখলেন তার খাটের নিচে একটি কুকুর ছানা। তিনি বললেন, “এটি কখন ঢুকেছে?” আয়েশা বলেন, আমি বললাম, আল্লাহর কসম আমি তার সম্পর্কে জানি না। তিনি কুকুরটি বের করার নির্দেশ দিলে সেটি বের করা হয়, অতঃপর জিবরীল তার নিকট আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, “আপনি আমাকে ওয়াদা দিয়েছেন, আর সে জন্য আমি বসে আছি, কিন্তু আপনি আসেন নি।” তিনি বললেন, আপনার ঘরে থাকা কুকুরটি আমাকে আসতে বাধা দিয়েছে। আমরা এমন ঘরে প্রবেশ করি না, যে ঘরে কুকুর ও ছবি থাকে।” 
(বুখারী মুসলিম।)

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

لاَ تَدْخُلُ المَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ تَصَاوِيرُ.

‘যে ঘরে কুকুর বা (প্রাণির) ছবি রয়েছে তাতে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না’। -সহীহ বুখারী,হাদীস ৫৯৪৯

আরেক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু বা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর পালে তার প্রতিদিন দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৭৫

আর এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে কোনো কোনো ফকীহ বলেছেন, ঘর-বাড়ি পাহারার প্রয়োজনেও কুকুর রাখা জায়েয।

এ সব প্রয়োজন ছাড়া কুকুর পালা জায়েয নয়। বিশেষত বর্তমানে বিজাতীয় ফ্যাশনের অনুকরণে কুকুর পালার যে রেওয়াজ হয়েছে তা সম্পূর্ণ হারাম।

যে বাড়িতে কুকুর থাকে সেই বাড়িতে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। তবে যদি বাড়িঘর পাহারার জন্য কুকুর পালন করা হয়,সেক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে সেক্ষেত্রে সেসব পাহারাদার কুকুর থাকা অবস্থায় রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করাতে বাধাপ্রাপ্ত হয় না। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত কুকুর তো আপনারা বাড়িঘর পাহারার জন্য রাখেননি,সুতরাং উক্ত কুকুরের দরুন আপনাদের বাসায় রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...