জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
নামাজে সমস্যা হতে পারে এমন সময় যানবাহনে উঠা উচিত নয়, তবে প্রয়োজনে রওনা করতে হলে যেন নামাজ কাযা না হয় এ ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।
যদি ওজু করার কোন ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে তায়াম্মুম করে নামায পড়ে নিবে। তায়াম্মুম করে নামায পড়লে পরবর্তীতে পানি পেলে তায়াম্মুম দ্বারা নামায পড়ার কারণে নামায হয়নি মনে করে আবার নামায দোহরাতে হবে না। বরং তায়াম্মুম দ্বারা নামাযটি শুদ্ধ হয়ে যাবে।
আরো জানুনঃ
যদি পানির ব্যবস্থা থাকে,তবে শতচেষ্টার পরও কোনো মহিলা পর্দা সম্মত অজু ও নামাযের স্থান না পায়।এবং তখন অজুর তুলনায় তায়াম্মুমকে পর্দার জন্য সুবিধাজনক মনে হয়,তাহলে মহিলা তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নেবে।
যানবাহনে নামাজ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
,
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُواْ بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا
যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।(সূরা নিসা-৪৩)
(জমিন ছাড়া) মাটি জাতীয় অন্যান্য জিনিসের উপরও তায়াম্মুম করা দুরুস্ত আছে; যেমন, মাটি, বালু, পাথর, বিলাতী মাটি, পাথর চুন, হরিতাল, সুরমা, গেরুমাটি ইত্যাদি। মাটি জাতীয় জিনিস না হইলে উহার উপর তায়াম্মুম জায়েয নহে; যেমন- সোনা, রূপা, রাং, গেহু, কাঠ, কাপড় এবং অন্যান্য শস্য ইত্যাদি। কিন্তু যদি এই সব জিনিসের উপর মাটি জমিয়া থাকে, তবে অবশ্য মাটির কারণে ইহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত হইবে।
ফাতাওয়ায়ে বর্ণিত রয়েছে,কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে আর কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে না।
(وَمِنْهَا الصَّعِيدُ الطَّيِّبُ) يَتَيَمَّمُ بِطَاهِرٍ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ. كَذَا فِي التَّبْيِينِ كُلُّ مَا يَحْتَرِقُ فَيَصِيرُ رَمَادًا كَالْحَطَبِ وَالْحَشِيشِ وَنَحْوِهِمَا أَوْ مَا يَنْطَبِعُ وَيَلِينُ كَالْحَدِيدِ وَالصُّفْرِ وَالنُّحَاسِ وَالزُّجَاجِ وَعَيْنِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَنَحْوِهَا فَلَيْسَ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ وَمَا كَانَ بِخِلَافِ ذَلِكَ فَهُوَ مِنْ جِنْسِهَا. كَذَا فِي الْبَدَائِعِ.
যে জিনিষ মাঠির জিনস বা প্রকার থেকে হবে,সে জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম জায়েয রয়েছে।যে জিনিস আগুনে দিলে জ্বলেও না, গলেও না তাহা মাটি জাতীয়। তাহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত আছে। যে জিনিস জ্বলিয়া ছাই হইয়া যায় বা গলিয়া যায়,যেমন স্বর্ণ রৌপ্য ইত্যাদি।তাহার উপর দুরুস্ত নহে।এবং ছাইয়ের উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত নহে।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬)
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু পানির ব্যবস্থা আছেই,তাই আপনি অন্য কোনো ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন,ওয়াশরুমেই কোনো একটি পাত্রে পানি নিয়ে এলাকা পরিস্কার করে অযু করবেন।
,
ওয়াশ রুমের ভিতরে যেখানেই ফাকা আছে, সেখানেই পরিস্কার করে অযু করবেন,প্রয়োজনে শুধু অযুর চারটি ফরজ আদায় করবেন।
তবুও তায়াম্মুম করবেননা।
,
হ্যাঁ যদি ওয়াশরুমে অযু করলে কোনোভাবেই যদি নাপাকি লাগা থেকে রেহাই পাওয়া না যায়,এবং ওয়াশরুমের বাহিরে অযু করার কোনো ভাবেই পদ্ধতি না পাওয়া যায়,বেপর্দা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,তাহলে এক্ষেত্রে তায়াম্মুম করতে পারবেন।
,
(০২)
এক্ষেত্রে নামাজের আগে কোনো ওয়াশরুমে গিয়ে নেপকিন চেঞ্জ করে,পবিত্রতা অর্জন করে নামাজ পড়তে হবে।
,
নাপাক শরীর নিয়ে নামাজ পড়া কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।
(০৩)
যানবাহনে কিবলার দিকে হয়ে নামাজ পড়া সংক্রান্ত জানুনঃ
,
(০৪)
বোরকার উপর দিয়ে তায়াম্মুম ছহীহ নেই।
গায়রে মাহরামের সামনে থেকে উঠে এসে নিরাপদ জায়গায় এসে তায়াম্মুম করবেন।
,
ওয়াশরুমে গিয়ে তায়াম্মুম করবেন।
,
সম্ভব না হলে বোরকার নিচ দিয়ে তায়াম্মুম করবেন।
,
কোনো ভাবেই সম্ভব না হলে,প্রয়োজনে চেহারা খুলতে পারবেন,তায়াম্মুমের জন্য শুধু মুখে হাত ফিরেই আবার নেকাব আটকিয়ে ফেলবেন।
,
(০৫)
শুধু ট্রেনে থাকতেই নয়,বরং কসরের দূরত্ব পরিমান সফরের নিয়তে নিজ এলাকা ছাড়ার পর থেকেই আপনি কসরের নামাজ আদায় করবেন।
ট্রেনে উঠার আগেই আপনি মুসাফিরের হুকুমের আওয়ায় পড়বেন,যদি সেটি আপনার এলাকার বাহিরে হয়ে থাকে।
,
তবে যদি ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি থাকার নিয়তে সফর করে থাকেন,তাহলে কসরের নামাজ পড়তে পারবেননা।