আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্,

উস্তাদ আমার আম্মু 2024 সালের ফেব্রুয়ারিতে মারা যান। আমরা তিন বোন, আর কোনো ভাই নেই। আব্বু 2016 সালে মারা গেছিলেন।
আমার নানি বেচে আছেন, আর চার মামা আছে সকলেই আর্থিক দিক দিয়ে অনেক উচ্চবিত্ত। আমরা মধ‍্যবিত্ত নানা মারা যাবার সময় অনেক সম্পত্তি রেখে গেছিলেন কিন্তু আম্মু সেগুলোর কোনোটাই কখনো দাবি করেনি আর মামারাও আম্মুর ভাগের অংশ ও সব নিজেদের নামে আম্মু বেচে থাকাকালীন নিজদের নামে লিখে নিয়েছে।

আমার আম্মুর সম্পত্তি বলতে 2.5 কাঠা একটা জমি আছে। সেটা আম্মু নিজের টাকায় কিনেছিলো, মামাদের সাথে।  আম্মু অনেকবার চেষ্টা করেছে ওটা আমাদের নামে দেবার, কিন্তু কাগজে কলমে ওসিয়ত নামা লিখে যেতে পারেনি। তবে, মৃত্যুর সময় আম্মু মামাদের কে বলে গেছে সেই একমাত্র সম্পত্তি টার যেনো  উনারা দাবি না করে আর আমাদের তিন বোনকে দিয়ে দেয়। আম্মু ওটা আমাদের নামে দিতে বলেছেন।

কিন্তু, আম্মুর 2.5 কাঠা জায়গার সাথে বড় মামার 60 কাঠা জায়গা আছে, আম্মুর জায়গা টা পেলে উনার জায়গার 2টা রাস্তা হবে, দাম বাড়বে, তাই মামারা আমার আম্মুর মুখে ওসিয়ত করা জায়গা টা থেকে আমাদের কে কিছুই না দিয়ে নিজেরাই নিয়ে নিতে চান।

এখন আমার প্রশ্ন হলো, আম্মু লিখিত ওসিয়ত করে যেতে পারেনি, মুখে মামাদের কে অনুরোধ করে বলে গেছে যেনো সেই জায়গা টা আমাদের তিন বোনকে পুরোটা দিয়ে দেয়। এই কথা কি ওসিয়ত হিসেবে গণ‍্য হবে?
 এই জায়গাটা আম্মু নিজে টাকা জমিয়ে কিনেছিলো, এটা আম্মুর উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি না।
যদি আম্মুর এই কথা ওসিয়ত হিসেবে গণ‍্য না হয়, তাহলে এই জায়গাটা ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী কিভাবে বন্টন হবে? আমার নানী, চার মামা আর এক খালা জীবিত আছেন।
দয়া করে একটু জানাবেন।

জাযাকাল্লাহু খাইরন

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ

নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে।
সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃযে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন।(সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে।(মিশকাত-৩০৭৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার মায়ের রেখে যাওয়া সম্পদের শরয়ী বন্টনঃ-
আপনার মায়ের সমূদয় সম্পত্তি ৫৪ ভাগে ভাগ হবে।

আপনারা তিন মেয়ে প্রত্যেকে ১২ ভাগ করে মোট ৩৬ ভাগ পাবেন।

আপনার নানী ৬ ভাগের এক ভাগ হিসেবে ৯ অংশ পাবে।
আপনার মামারা প্রত্যেকে ২ ভাগ করে মোট ৮ ভাগ পাবেন।

আপনার খালা এক অংশ পাবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উল্লেখ্য, আপনার মামারা আপনার মায়ের উপর যে জুলুম ও অবিচার করেছে,তারা আপনার মায়ের সম্পদ পাওয়ার অধিকার রাখেনা। তারা জালেম।

★সুতরাং আপনার নানী আর আপনার খালা সন্তুষ্টি চিত্তে তাদের অংশ ছেড়ে দিলে আপনার মায়ের অসিয়ত কার্যকর হবে।
সেক্ষেত্রে আপনার মায়ের রেখে যাওয়া পুরো সম্পত্তি ৩ ভাগ করে আপনারা তিন বোন সমান ভাবে ভাগ করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...