আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

দুটো প্রশ্ন শায়েখ-
(১৭ বছর বয়সী) ভাই ১দিন আমাকে ১টা কাজ করতে বললো। আমি বললাম, "তুই আগামীকাল ১ঘন্টা কুরআন পড়তে রাজি হলে আমি তোকে কাজটা করে দিব।" সে রাজি হলো। বললাম, "মনে রাখিস, রাজি হয়েছিস মানে এটা ওয়াদা হয়ে গেছে। ওয়াদা ভঙ্গের শাস্তি তো জানিস্ই।" সে  তখন চুপ ছিল।

 কাজটা করে দিলাম ঠিকই; কিন্তু পরের দিন সে কুরআন পড়তে বসেনি। সে ওয়াদা করেছে বলেনি কিন্তু চুপ থাকায় তাকে কি এখন কাফফারা দিতে হবে? যদি দিতে হয় তাহলে কাফফারা স্বরূপ তাকে কী করতে হবে?যেহেতু সে রোজগার করে না।


২)আমরা যে মৃত মানুষকে সালাম দিই তারা কি সালামের জবাব দেন? তারা কি আমাদেরকে দেখতে পান? শুনেছি মৃতরা তাঁদের নাকি পরিচিতদের চিনতে পারেন। অনেক বড় একটা কবরস্থান,পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় আমরা তো একবারই সালাম দিই।এক্ষেত্রে কী ঘটে? আর এভাবে সালাম দেয়া কি ঠিক?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাকে কাফফারা দিতে হবেনা। সে ওয়াদা খেলাফির কারনে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করবে।

(০২)
কবরস্থ করার পর মৃত ব্যাক্তি দুনিয়ার কোনো কিছু দেখেনা।
তবে তারা দুনিয়ার কারো কথা শুনতে পারে কিনা,এই বিষয়ে খোদ ছাহাবায়ে কেরামদের মাঝেই মতবিরোধ রয়েছে 
,
এই বিষয়ে পক্ষে বিপক্ষে উভয় দিকেই দলিল রয়েছে।
কেহ কেহ বলেছেন যে তারা শুনতে পারেনা,কেহ কেহ বলেন যে শুনতে পারে।
কেহ কেহ বলেন যে যখন কেহ তাদের কবরের পাশে গিয়ে সালাম দেয়,তখন তাদের সালামের জবাব দেওয়া জন্য তাদের রুহ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
,
 হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ما من مسلم يمر بقبر أخيه كان يعرفه في الدنيا فَيُسَلم عليه، إلا رد الله عليه روحه، حتى يرد عليه السلام».
“যখন কোনো মুসলিম ব্যক্তি দুনিয়াতে পরিচিত তার কোনো মৃত্যু ভাইয়ের কবরের পাশ দিয়ে গমন করে এবং তাকে সালাম দিলে তখন তার সালামের উত্তর দেওয়ার জন্য আল্লাহ তার রূহকে ফেরত দেন।”
,
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসটি ইবন আব্দুল বার রহ. তার সনদে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। দেখুন, আল-ইসতিযকার, ১/১৮৫; আর-রূহ ফিল কালাম ‘আলা আরওয়াহিল আমওয়াতি ওয়াল আহইয়াই বিদ-দালায়িলি মিনাল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ, ইবনুল কাইয়্যিম রহ. পৃষ্ঠা ৫।
,
হাদীসের এ কথা দ্বারা প্রমাণিত যে, মৃত ব্যক্তি তাকে চিনতে পারেন এবং তার সালামের উত্তর দেন।
,

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিহতদের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমরা তো সবাই ছিলে নেতৃস্থানীয় লোক। তোমরা আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করোনি অথচ অনেকেই আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে। তোমরা আমাকে নিঃসঙ্গ সহায়হীন অবস্থায় ফেলেছিলে, অথচ অনেকে আমাকে সাহয্য করেছে। তোমরা আমাকে বের করে দিয়েছিলে, অথচ অনেকে আমাকে আশ্রয় দিয়েছে।’ এরপর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিহতদের মৃত দেহ টেনে বদরের একটি কূয়োর বেতর ছুড়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন।

হযরত আবু তালহা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশে বদরের দিন কোরায়শদের ২৪ জন বড় বড় সর্দারের লাশ বদরের একটি নোংরা কূয়োয় নিক্ষেপ করা হয়। তখন নিয়ম ছিলো যে, কোন কাওমের ওপর জয়ী হলে তিনদিন যুদ্ধক্ষেত্রে কাটানো হতো। বদরের মাঠে তিনদিন কাটানোর পর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সওয়ারীর পিঠে আসন সাঁটা হলো। এরপর তিনি পদব্রজে চললেন, সাহাবারা তাঁকে অনুসরণ করলেন।হঠাৎ কূয়োর তীরে তিনি থমকে দাঁড়ালেন। এরপর তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে সম্বোধন করে  বলতে লাগলেন, ‘হে অমুকের পুত্র অমুক, হে অমুকের পুত্র অমুক, তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করতে, তবে সেটা কি তোমাদের জন্যে ভালো হতো না? 

وفی صحیح البخاری،کتاب الجنائز (۱۸۳/۱):حدثني نافع، أن ابن عمر رضي الله عنهما أخبره، قال: اطلع النبي صلى الله عليه وسلم على أهل القليب، فقال:وجدتم ما وعد ربكم حقا؟ فقيل له: تدعو أمواتا؟ فقال:ما أنتم بأسمع منهم، ولكن لا يجيبون۔

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছেন, আমরা তার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছি, তোমরা কি আমাদের প্রতিপালকের কৃত ওয়াদার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছো।’ হযরত ওমর (রা.) আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল, আপনি এমনসব দেহের সাথে কি কথা বলছেন, যাদের রূহ নেই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে সত্তার শপথ যার হাতে মোহাম্মদের প্রাণ আমি যা কিছু বলছি, তোমরা ওদের চেয়ে বেশি শুনতে পাও না। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে যে, তোমরা ওদের চেয়ে বেশী শ্রবণকারী নও। কিন্তু ওরা জবার দিতে পারে না [বোখারী, মুসলিম, মেশকাত, ২য় খন্ড, পৃ. ৩৪৫]
 
বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৃত মানুষরা আমাদেরকে দেখতে পাননা।
তবে আমরা যে মৃত মানুষকে সালাম দেই, তারা সেই সালামের জবাব দেন।
এভাবে সালাম দেয়া ঠিক আছে। সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...