আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
93 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
১/আসসালামু আলাইকুম। বাপ-মায়ের
জমিতে যেমন সন্তানদের নির্দিষ্ট ভাগ আছে শরীয়ত নিয়মে।তেমনি কি জমানো টাকা-পয়সাতেও এমন ভাগ আছে সব সন্তানদের?নাকি যাকে ইচ্ছে তাকে দিতে পারবে?
২/অনেক সময়-ই বিপথের সন্তান থাকে যারা বাপ-মাকে দেখে না,তখন যে ভালো সন্তান মা-বাবা চায় তাকে তখন তার ব্যাংকের টাকা,স্বর্ন এসব দিতে।
এটা কি উচিত?
**আমি একজনকে চিনি যিনি তার জমি দিয়ে আসা গ্যাস লাইনের বেশ কয়েক লাখ টাকা পেয়েছে তা মেয়েকে দিতে চায়(উনার এক ছেলে,এক মেয়ে)।এটা কি জায়েজ হবে?এটা জমি না বাট জমির উছিলায় পাওয়া টাকাা।সরকার গ্যাস লাইন নেওয়াতে পাইছে।
**তেমনি স্বর্ন বা ক্যাশ টাকা এসবেও কি সব সন্তানের-ই হক্ব আছে?
** জমি বিক্রির টাকায়ও কি সব সন্তানের হক্ব থাকবে?
৩/ আবার দেখায় যায় গরীব সন্তানকে জমি না বাট মা-বাবা ক্যাশ টাকা দিয়ে যেতে যায় কাউকে না জানিয়ে বা পেনশনের টাকা বা জমানো টাকা এটায়ও কি সবার হক্ব আছে?একজনকে দিলে সমস্যা হবে?
৪/ কোন এক মায়ের ২ সন্তান(ছেলে,মেয়ে)।মা তার বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রী করে ব্যাংকে টাকা রাখলো।এখন সে চায় সব টাকা তার মেয়ে নিক।অথবা ছেলে-মেয়ে সমান ভাগ করে নিক।মেয়ে ভয় পাচ্ছে শরিয়ত কি এটাকে জায়েজ বলে?নাকি মায়ের বিক্রি করা সম্পত্তিও মেয়ে তিন ভাগের এক পাবে।ছেলে খুব বেয়াদব দেখেই মায়ের এ সিদ্ধান্ত।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

  النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ أبَاهُ أتَى بِهِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: إِنِّي نَحَلْتُ ابْنِي هَذَا غُلاَماً كَانَ لِي، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَكُلَّ وَلَدِكَ نَحَلْتَهُ مِثْلَ هَذَا ؟» فَقَالَ: لاَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: فَأَرْجِعهُ وَفي رِوَايةٍ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَفَعَلْتَ هذَا بِوَلَدِكَ كُلِّهِمْ ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: اِتَّقُوا الله وَاعْدِلُوا فِي أَوْلاَدِكُمْ فَرَجَعَ أَبِي، فَرَدَّ تِلْكَ الصَّدَقَةَ . وفي روايةٍ : فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «يَا بَشيرُ أَلَكَ وَلَدٌ سِوَى هَذَا ؟» فَقَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «أكُلَّهُمْ وَهَبْتَ لَهُ مِثْلَ هذَا ؟» قَالَ: لاَ، قَالَ: فَلاَ تُشْهِدْنِي إِذاً فَإِنِّي لاَ أَشْهَدُ عَلَى جَوْرٍ وفي روايةٍ : «لاَ تُشْهِدْنِي عَلَى جَوْرٍ» . وفي رواية : «أَشْهِدْ عَلَى هذَا غَيْرِي !» ثُمَّ قَالَ: «أَيَسُرُّكَ أَنْ يَكُونُوا إِلَيْكَ فِي البِرِّ سَواءً؟» قَالَ: بَلَى، قَالَ: «فَلا إِذاً» . متفق عليه 

 নু’মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তাঁর পিতা তাঁকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে হাজির হয়ে বললেন, ‘আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। [কিন্তু এর মা আপনাকে সাক্ষী রাখতে বলে।]’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমার সব ছেলেকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তাহলে তুমি তা ফেরৎ নাও।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমার সব ছেলের সঙ্গেই এরূপ ব্যবহার দেখিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা কর। সুতরাং আমার পিতা ফিরে এলেন এবং ঐ সাদকাহ [দান] ফিরিয়ে নিলেন।’’

আর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হে বাশীর! তোমার কি এ ছাড়া অন্য সন্তান আছে?’’ তিনি বললেন, ‘জী হ্যাঁ।’ [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, ‘‘তাদের সকলকে কি এর মত দান দিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘জী না।’ [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, ‘‘তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে সাক্ষী মেনো না। কারণ আমি অন্যায় কাজে সাক্ষ্য দেব না।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আমাকে অন্যায় কাজে সাক্ষী মেনো না।’’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘এ ব্যাপারে তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে সাক্ষী মানো।’’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি এ কথায় খুশী হবে যে, তারা তোমার সেবায় সমান হোক?’’ বাশীর বললেন, ‘জী অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে এরূপ করো না।’’ 
(সহীহুল বুখারী ২৫৮৬, ২৫৮৭, ২৬৫০, মুসলিম ১৬২৩, তিরমিযী ১৩৬৭, নাসায়ী ৩৬৭২-৩৬৮৫, আবূ দাউদ ৩৫৪২, ইবনু মাজাহ ২৩৭৫, ২৩৭৬, আহমাদ ১৭৮৯০, ১৭৯০২, ১৭৯১১, ১৭৯৪৩, মুওয়াত্তা মালিক ১৪৭৩)

অন্য বর্ণনায় এসেছে হযরত নোমান ইবনে বশীর (রাযি.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা (সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে) তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ করো। তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ করো।’
(সহীহ বুখারী : ১/৩৫২; সুনানে আবুদাউদ : ৩৫৪৪)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে বাবা মা যদি জীবদ্দশায় জমানো টাকা কোনো সন্তানকে দিতে চায়,সেক্ষেত্রে সন্তানদের মাঝে ইনসাফ করতে হবে।
কেননা সেই জমানো টাকা বন্টন করলে  সে টাকাতেও সকল সন্তানদের হক আছে।

(০২)
এক্ষেত্রে বিপথগামী সন্তানকে একেবারে বঞ্চিত করা যাবেনা।
এমতাবস্থায় দ্বীনদার সন্তানকে সম্পদ বেশি দিলে তাতে বাবা মার গুনাহ হবেনা।

*মেয়েকে সম্পদ দিলে সেক্ষেত্রে ছেলেকেও সম্পদ দিতে হবে,চাই অন্য কোনো সোর্স থেকে দিকনা কেনো।

*স্বর্ন বা ক্যাশ টাকা সন্তানদের মাঝে বন্টন করলে সেক্ষেত্রে এসবেও সব সন্তানের-ই হক্ব আছে।

** জমি বিক্রির টাকা সন্তানদের মাঝে বন্টন করলে সেক্ষেত্রে তাতেও সব সন্তানের হক্ব থাকবে।

(০৩)
সকল সন্তানের সম্মততে দিলে সমস্যা নেই।
বা অধিক দ্বীনদারীর কারনে দিলেও সমস্যা নেই।
নতুবা এতে অন্য সন্তানদের কিছুটা হলেও হক নষ্ট হবে। 

(০৪)
এক্ষেত্রে মা জীবদ্দশায় টাকা বন্টন করতে চাইলে সেক্ষেত্রে ছেলে মেয়েকে সমান ভাগ করে দিতে পারবে। এটাই জীবদ্দশায় সম্পদ বন্টনের মুস্তাহাব পদ্ধতি। 

এমতাবস্থায় ছেলে সন্তানকে মেয়ে থেকে ডাবল দেয়া আবশ্যক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (13 points)
বেঁচে থাকা অবস্থায় মা-বাবা যদি এইসব টাকা মানে জমি বেচা বা ক্যাশ টাকা ছেলেকে কম দেয় মেয়েকে বেশি দেয় তাহলে কি তা জায়েজ হবে?
by
মায়ের বা বাবার জমি বেচার টাকা যদি ছেলেকে কম দেয় অসভ্যতার কারনে সেটা কি জায়েজ হবে?মানে মেয়েকে বেশি ছেলেকে কম টাকা দেওয়া কি জায়েজ হবে?
by (559,140 points)
এটা জায়েজ হবেনা।
তবে ছেলে যদি মাতা পিতার অবাধ্য হয়,আর মেয়ে দ্বীনদার ও মাতা পিতার বাধ্য হয়,সেক্ষেত্রে এভাবে মেয়েকে বেশি দেয়া জায়েজ আছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 135 views
...