আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।দয়া করে এপ্রুভ করবেন প্লিজ।

১/যিনা থেকে বাঁচার জন্য ছেলে মেয়ে উভয়েই বিয়ে করে নিতে চাইছে। এক্ষেত্রে মেয়ের পরিবার রাজী থাকলেও ছেলের পরিবারের থেকে বিষয় টা লুক্কায়িত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২/ছেলের প্রতিষ্ঠিত হতে অর্থাৎ চাকরি পেতে এখনো সময় লাগবে। মেয়ের দিক থেকে এ বিষয়ে সমস্যা নেই। আর্থিক চাহিদা এবং দেনমোহরের দিক থেকে মেয়ে ছেলের প্রতি সহনশীল।কোনো সমস্যা নেই।

৩/ছেলের পরিবারকে জানানো সম্ভব না হলে গোপন রাখলে সমস্যা নেই যতদূর জানি। ছেলে মেয়ে দু'জনেই হানাফি মাযহাবের।

৪/বিয়ে হলে সাময়িক সময়ের জন্য দেখা হতে পারে! তাছাড়া সামাজিক ভাবে ঘোষণা করে বিয়ে করার আগে দুই প্রান্তে অর্থাৎ দুই জেলায় অবস্থান করায় স্বামী-স্ত্রীর হক নষ্ট হবে কি?

৫/ছেলে প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁর পরিবার সহ বিয়ের বিষয়ে এগোলে যখন সামাজিক ভাবে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে তখন পূর্বের বিয়ের বিষয়ে গোপন রেখে পুনরায় নতুন করে মেয়েকে বিয়ে করা কি নাজায়েজ হবে?

৬/বিয়ে পড়ানোর ক্ষেত্রে সাক্ষীর বিষয় টা জানাবেন প্লিজ।

৭/কোর্ট ম্যারেজ বা রেজিস্ট্রেশন ব্যতিত বিয়ে সম্ভব কি? রেজিস্ট্রেশন থাকলে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বিয়ের বিষয়টি আর গোপন থাকে না বিধায় চাকরি হয় না তাই কোনো সেক্ষেত্রে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কিভাবে এড়ানো যায় যেনো প্রমাণ থাকে কিন্তু অনলাইন রেজিস্ট্রেশন না থাকে সরকারি ওয়েবসাইটে?

৮/সুন্নাহ ভিত্তিক পদ্ধতি তে খরচ/ব্যবস্নথাপনা কেমন হতে পারে জানাবেন প্লিজ।

উপরোক্ত বিষয়গুলো তে হানাফি ফিক্বহ অনুযায়ী মাসালা কি জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(১.২.৩)
এভাবে বিয়ে করা যাবে।

(০৪)
স্বামী-স্ত্রী সর্বদা কাছাকাছি থাকবে, এটাই শরিয়তে কাম্য।
তবে যদি কোনো প্রয়োজনে (যেমন, জেহাদে যাওয়া কিংবা জীবিকা অর্জনের জন্য প্রবাসে যাওয়া) স্বামী দূরে কোথাও যায় তাহলে চার মাসের মধ্যে একবার হলেও স্ত্রীর কাছে ফিরে আসতে হবে।

কারণ নারীরা সাধারণত তাদের স্বামী থেকে চার মাস দূরে থাকতে পারে।

যদি কেহ স্ত্রী হতে চার মাসের বেশি দূরে থাকে,সেক্ষেত্রে এটি স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষ বিষয়।
,
হাদিস শরিফে এসেছে,যায়দ বিন আলমাস (রহ.) বলেন,
‘এক রাতে হযরত উমর (রা.) জনগণের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য প্রহরী বেশে বের হয়ে গেলেন। এক বাড়ির পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি ঘর থেকে নারী কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুনতে পেলেন। ঘরের ভিতর এক মহিলা কবিতা আবৃত্তি করছিল। যার অর্থ হলো,রজনী দীর্ঘ হয়েছে এবং তার এক পার্শ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন যাবত আমার প্রেমাস্পদ আমার কাছে নেই যে,তার সাথে আমি আমোদ-প্রমোদ করব। আল্লাহর শপথ! যদি এক আল্লাহর ভয় না থাকত তাহলে এ খাটের চার পাশ নড়ে উঠত।
যখন ভোর হলো হযরত উমর (রা.) রাতের কবিতা আবৃত্তিকারিণী মহিলাকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। মহিলা খলিফার দরবারে এসে উপস্থিত হলে হযরত উমর (রা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তুমি কি গত রাতে এ-জাতীয় কবিতা আবৃত্তি করেছিলে? মহিলা বলল,হ্যাঁ।
উমর (রা.) বললেন কেন? উত্তরে মহিলা বলল,দীর্ঘদিন যাবত আমার স্বামী জিহাদের ময়দানে রয়েছে। অথচ এমুহূর্তে তার নৈকট্য পাওয়া আমার একান্ত কাম্য ছিল,তার বিরহেই আমি এমনটি করেছি৷ হযরত উমর (রা.) এ কথা শুনে তখনই ঐ মহিলার স্বামীর নিকট ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়ে শাহী ফরমান প্রেরণ করলেন। এরপর তিনি তার কন্যা হযরত হাফসা (রা.) এর নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে আমার মেয়ে! নারীরা তাদের স্বামী থেকে কতদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে? (প্রজাদের স্বার্থ রক্ষার ইচ্ছা যদি না হত তবে আমি তোমার নিকট এরুপ প্রশ্ন করতাম না) তখন হাফসা (রা.) বললেন,মেয়েরা তাদের স্বামী থেকে চার মাস পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে। এরপর থেকে হযরত উমর (রা.) চার মাস পরপর মুজাহিদ বাহিনীকে ফেরত নিয়ে আসতেন এবং নতুন বাহিনী পাঠিয়ে দিতেন।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১২৫৯৪]

পাপ থেকে হেফাযত এবং পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে থাকার শর্তে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে পারস্পরিক সম্মতিতে দীর্ঘ সময় দূরে থাকায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে পাপের সাথে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে অল্প দিনের জন্য হলেও দূরে থাকা বৈধ নয়। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে বিষয়টি যদি উভয়ে সন্তুষ্টি চিত্তে মেনে নেয়,আর গুনাহ জড়িয়ে আশংকা না থাকে,সেক্ষেত্রে এটি জায়েজ হবে। 

(০৫)
এটা নাজায়েজ হবেনা। 
তবে অনার্থক হবে। 

(০৬)
বিবাহে ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

আরো জানুনঃ- 

(০৭)
বিবাহের জন্য শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে এগুলোর কোনোটিই আবশ্যক নয়। 
সাক্ষীদের সামনে ইজাব কবুল হলেই বিবাহ হয়ে যাবে।

(০৮)
মেয়ের বাড়িতে দাওয়াতের আয়োজন বিবাহের সুন্নাতী পদ্ধতি নয়।
যেই বিবাহে খরচ কম হবে,সেই বিবাহে বরকত হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...