আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
142 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তাজ।
আমার দুইটি স্বপ্ন সম্পর্ক জানা প্রয়োজন। স্বপ্ন দুটি আমার তাজবীদের উস্তাজা আপু দেখেছেন।

১/ প্রথম স্বপ্নটি এমন ছিল,তিনি দেখছেন একটা যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে।মাথায় পাগড়ি পরা অনেকে সেখানে আছেন।একটা জঙ্গলের মতো জায়গা,সেখানে আপু,উনার হাজবেন্ড আর উনার সন্তান(উনার সন্তান মেয়ে হলেও স্বপ্নে তাকে ছেলে হিসেবে দেখেন)।।সে যুদ্ধে রাসুল ﷺ এরও অংশ নেয়ার কথা।।কিন্তু আপুর হাজবেন্ডকেই সবাই নবীজি(স) বলতে লাগলেন।সবাই উনাকে নিয়ে মাতামাতি করতে থাকলেন। আপু সবাইকে বলছিলেন উনি নবীজি না, উনি আমার হাজবেন্ড। কেউ কথা শুনছিল না।পরে আপু উনাত হাজবেন্ড আর সন্তান কে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।

২/প্রথম স্বপ্ন দেখার কিছুদিন পরেই দ্বিতীয় টি দেখেন।তিনি দেখলেন উনার গ্রামে অর্থাৎ সিলেট মৌলভীবাজারের এক জায়গায় রাসুল ﷺ আসবেন। সবাই রাসুল ﷺ কে দেখার জন্য জড়ো হয়েছে। সেখানে আপু আর উনার আম্মাও গেছেন।যেখানে রাসুল ﷺ আসবেন সেখানের নিচ তলায় সবাই বসেছে।আর দোতলায় সব আলেমরা আছেন।এবং আমি(মানে উস্তাজার স্টুডেন্ট)  সহ আরো ২/৩জন বোন সেখানে বসে আছেন।আমাদেরকে দেখে উস্তাজা আপুও দোতলায় উঠে এক কোনায় বসেন।তখন রাসুল ﷺ আসেন।কিন্তু তিনি দেখলেন একদম কুচকুচে নিগ্রোর মত কালো একজন ব্যক্তিকে সবাই রাসুল ﷺ বলে সম্বোধন করছেন।তখন উস্তাজা আপু বললেন তিনি রাসুল ﷺ নন।আপনারা ভুল করছেন।কিন্তু বাকি আলিমরা বললো আপনি চিনেন না,উনিই রাসুল ﷺ। তখন আপু অনেকবার বলার পরেও কেউ সেটা শুনলোনা।তখন তিনি সে জায়গা থেকে চলে আসেন।
(স্বপ্ন দুটোতেই লক্ষনীয় যে উভয় জায়গাতেই মানুষ ভুল কাউকে রাসুল ﷺ মনে করছে।এছাড়া দুটো স্বপ্নই একই সময় রাত ৩/৩.৩০ টা নাগাদ দেখেন।স্বপ্ন দেখে উস্তাজার ঘুম ভেঙে যায় এবং তিনি তাহাজ্জুদ পড়েন)
by (5 points)
উস্তাজ কিছু বিষয় বলতে ভুলে গেছি, এর পূর্বেও তিনি রাসুল ﷺ এর চোখ মোবারক স্বপ্নে দেখেছিলেন। এছাড়া  উনার বৈশিষ্ট্য সাল্লাল্লাহু সালামের মতো ছিল না। আমলে  পোশাক আশাক কোন কিছুতেই তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ছিলেন না বলেই তিনি বারবার বলেছিলেন উনি নবীজি নয়। আর আরেকটা বিষয় এখানে মানুষ বলতেছে যে উনি নবীজী ﷺ কিন্তু সরাসরি  তো কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আর যেহেতু আগে নবীজির চোখ মোবারক স্বপ্নে দেখেছিলেন তাই দৃঢ় বিশ্বাসের সহিত বলেছিলেন যে উনি নবীজি নয়।
by (5 points)
উস্তাজ কিছু বিষয় বলতে ভুলে গেছি, এর পূর্বেও তিনি রাসুল ﷺ এর চোখ মোবারক স্বপ্নে দেখেছিলেন। এছাড়া  উনার বৈশিষ্ট্য সাল্লাল্লাহু সালামের মতো ছিল না। আমলে  পোশাক আশাক কোন কিছুতেই তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ছিলেন না বলেই তিনি বারবার বলেছিলেন উনি নবীজি নয়। আর আরেকটা বিষয় এখানে মানুষ বলতেছে যে উনি নবীজী ﷺ কিন্তু সরাসরি  তো কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই দৃঢ় বিশ্বাসের সহিত বলেছিলেন যে উনি নবীজি নয়।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

স্বপ্নটি মুবারকপূর্ণ স্বপ্নের অন্তর্ভুক্ত বলা যায়।  আপনি আরো বেশি বেশি সুন্নতের পাবন্দ হতে চেষ্টা করুন। বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে রাসূল সাঃ এর একজন সাচ্চা উম্মত ও প্রিয়ভাজনদের কাতারে শামিল করেই ইনশাআল্লাহ হাশর করাবেন।

বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা না হয়। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন।
,
রাসূল সাঃ এর আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না। তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে প্রবল ধারনা হলে, বুঝতে হবে রাসূল সাঃ কেই দেখছে। অন্য কাউকে নয়।

তবে কথা হল স্বপ্নে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থা সম্পর্কে। স্বপ্নে পরিদৃষ্ট আকৃতিও অবস্থান কি রাসূল সাঃ এর প্রকৃত আকৃতি ও অবস্থান? নাকি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক?

ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, স্বপ্নযোগে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর চেহারার আকৃতি ও অবস্থান রাসূল সাঃ এর প্রকৃত চেহারা ও অবস্থান নয়। বরং এটি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক।

তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান দেখে একথা বলা যাবে না যে, স্বপ্নে যেমন দেখেছে হুবহু সেটাই রাসূল সাঃ এর আসল ও প্রকৃত চেহারা ও আকৃতি। বরং সেটি ছিল একটি প্রতিচ্ছবিমূলক আকৃতি।

তাই একাধিক ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান একাধিক ধরণের হতে পারে।

তবে যেহেতু শয়তান রাসূল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না, তাই স্বপ্নে যদি ইয়াকিন হয় যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ, তাহলে বিশ্বাস করে নিবে ব্যক্তি রাসূল সাঃ কেই দেখছে। তবে আকৃতিটা হুবহু রাসূল সাঃ এর হওয়া জরুরী নয়।

আরেকটি বিষয় হল, স্বপ্নে রাসূল সাঃ কে তেমন দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ব্যক্তির ঈমান ও আমলের অবস্থা হয়ে থাকে। যদি রাসূল সাঃ এর অবস্থা ভাল দেখে স্বপ্নে, তাহলে স্বপ্ন দেখাকারী ব্যক্তির ঈমান ও আমল ভাল হওয়ার দলীল এটা। আর যদি খারাপ অবস্থায় রাসূল সাঃ কে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে দেখছে তার ঈমান বা আমলে সমস্যা আছে।

তেমনি কেউ যদি রাসূল সাঃ কে সুন্দর অবয়বে দ্বীনী কাজ করতে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে লোকটির ঈমানী কাজে আগ্রহ আছে। এক কথায় রাসূল সাঃ কে যে অবস্থায় পরিদৃষ্ট করবে স্বপ্নে, নিজের ঈমান ও আমলের হালাত তেমনি মনে করে নিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أن أبا هريرة قال : سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( من رآني في المنام فسيراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي 

হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নযোগে দেখল, সে যেন আমাকে বাস্তবেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৫৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬০৫৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬০৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫০২৫ , সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২১৩৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২৭৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বপ্নে যদি ইয়াকিন হয় যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ, তাহলে বিশ্বাস করে নিবে ব্যক্তি রাসূল সাঃ কেই দেখছে। তবে আকৃতিটা হুবহু রাসূল সাঃ এর হওয়া জরুরী নয়।

আরেকটি বিষয় হল, স্বপ্নে রাসূল সাঃ কে তেমন দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ব্যক্তির ঈমান ও আমলের অবস্থা হয়ে থাকে। যদি রাসূল সাঃ এর অবস্থা ভাল দেখে স্বপ্নে, তাহলে স্বপ্ন দেখাকারী ব্যক্তির ঈমান ও আমল ভাল হওয়ার দলীল এটা। আর যদি খারাপ অবস্থায় রাসূল সাঃ কে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে দেখছে তার ঈমান বা আমলে সমস্যা আছে।

তেমনি কেউ যদি রাসূল সাঃ কে সুন্দর অবয়বে দ্বীনী কাজ করতে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে লোকটির ঈমানী কাজে আগ্রহ আছে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত উভয় স্বপ্নেই বোনটির ইয়াকিন হয়নি যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ।
সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাঃ কে আবারো স্বপ্নে দেখার আমল চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ রইলো। 

ঈমানী কাজে অনাগ্রহ থাকলে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নও মর্যাদা পূর্ণ বিষয়। 
আপনি দরুদ শরীফ বেশি বেশি পাঠ করবেন,সুন্নাতের উপর পূর্ণ আমল চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...