জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
গহরশাহী নামের যে ফিতনার কথা প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,তিনি কে?
তার মতাদর্শ, নীতি আদর্শ কি?
এ সংক্রান্ত উইকিপিডিয়া থেকে যাহা জানতে পেরেছি,তাহা এখানে উল্লেখ করছিঃ-
রিয়াজ আহমেদ গোহর শাহী ( উর্দু: ریاض احمد گوھر شاہی ) (জন্ম ২৫ নভেম্বর ১৯৪১) একজন আধ্যাত্মিক নেতা এবং আধ্যাত্মিক আন্দোলন RAGS ইন্টারন্যাশনাল (বর্তমানে মেসিয়াহ ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল নামে পরিচিত ) এবং আঞ্জুমান সেরফারোশান-ই-ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা ।
শাহী ব্রিটিশ ভারতের রাওয়ালপিন্ডি জেলার ধোক গোহর শাহ গ্রামে ১৯৪১ সালের ২৫ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সুফি বাবা গোহর আলী শাহের পঞ্চম প্রজন্মের বংশধর।
বিশ বছর বয়সে, যখন তিনি এফকিউ স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক ছিলেন, শাহী আধ্যাত্মিকতার সন্ধান শুরু করেন। অবশেষে তিনি এই অনুসন্ধানে মোহভঙ্গ হন এবং কাজে ফিরে আসেন। শাহী তখন বিয়ে করেন এবং তিন সন্তানের জন্ম দেন।
১৯৭৫ সালে, তিনি আত্মহত্যার জন্য সেহওয়ান শরীফে যান; তিনি "ঈশ্বরের ভালবাসার জন্য" আত্মশুদ্ধির জন্য সেহওয়ান শরীফের পাহাড় এবং লালবাগের জঙ্গলে তিন বছর সময় কাটিয়েছিলেন।
১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে শাহী পাকিস্তানে একজন সুফি প্রচারক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি ১৯৮০ সালে RAGS ইন্টারন্যাশনাল এবং আঞ্জুমান সেরফারোশান-ই-ইসলাম করেন। দুটি সংস্থার মধ্যে, আরএজিএস ইন্টারন্যাশনাল এখনও মেসিয়াহ ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল হিসাবে সক্রিয় রয়েছে যেখানে আঞ্জুমান সেরফারোশান-ই-ইসলামকে 2011 সালে পাকিস্তানে বিলুপ্ত ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মেসিয়া ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনালের সিইও হলেন ইউনুস আলগোহর । শাহী ১৯৯৭ সালে যীশু খ্রিস্টের সাথে দেখা করেছিলেন বলে দাবি করেছেন।
গোহর শাহী আমেরিকায় যিশুর সঙ্গে দেখা করেছেন বলে দাবি করেছেন। শাহীর সমর্থকরা দাবি করেন যে তার মুখ মক্কার চাঁদ, সূর্য, নীহারিকা এবং কালো পাথরে বিশিষ্ট হয়ে উঠেছিল, এবং এই আবির্ভাবগুলি ঈশ্বরের চিহ্ন যে গোহর শাহীই প্রতীক্ষিত ইমাম মেহেদী, মশীহ এবং কল্কি অবতার ।
অভিযুক্ত ছবিগুলি বৃহত্তর আইনী এবং ধর্মীয় বিরোধিতাকে প্ররোচিত করেছে। শাহীও এই দাবিকে সমর্থন করে বলেছেন যে, ঈশ্বর চাঁদে এবং বিভিন্ন স্থানে শাহীর ছবি প্রকাশ করেছিলেন, যার জন্য শাহী নিজে দায়ী নন, এবং যদি প্রশ্ন উত্থাপিত হয় তবে সেগুলি ঈশ্বরের কাছে উত্থাপন করা উচিত।
মেসিয়াহ ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল কথিত ছবিগুলিকে ঈশ্বরের নিদর্শন বলে দাবি করে, শাহীকে প্রতীক্ষিত মেহেদি বলে নির্দেশ করে; তারা এটিকে সমর্থন করার জন্য ধর্মীয় গ্রন্থগুলি এর পাশাপাশি নস্ট্রাডামাস, এবং জাফর আল-সাদিক- এর মতের বক্তব্য উদ্ধৃত করে।
পাকিস্তানের সাংবাদিকরা শাহীকে জিজ্ঞেস করলেন,
"অনেকে বিশ্বাস করে যে আপনি মেহেদী, এবং ঈশ্বর তাদের কাছে নিদর্শন প্রকাশ করেছেন যা বলে যে আপনি মেহেদী, কিন্তু আপনি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন না যে আপনি মেহেদী। কেন?" শাহী নিজের দিকে ইঙ্গিত করে উত্তর দিলেন, “ইমাম মেহেদী কি পাকিস্তানের আইন জানেন না? তিনি জানেন যে পাকিস্তানের আইন ঘোষণা করে যে 'যেই মেহেদি বলে দাবি করে, তাকে জেলে দাও'। আমি তার [মেহেদীর] বৈশিষ্ট্যের নিদর্শন দিয়েছি, যা মেহেদী জানে এবং অন্য কেউ নয়। এখন এটা মানুষের উপর নির্ভর করে যে তাকে চিনবে এবং তাকে বিশ্বাস করবে।"
18 নভেম্বর 1997-এ, সিন্ধু হাইকোর্ট হায়দ্রাবাদ সার্কিটের বিচারপতি রাশেদ এ. রাজভির সামনে আদালতে হাজির হওয়ার পর, শাহি বলেন, "হযরত ইমাম মেহেদী হওয়ার একমাত্র যুক্তি হল [কারুর] পিঠে চিহ্ন যা তার অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারে"।
শাহীকে অনুসরণ করা গোষ্ঠীগুলির মধ্যে, মেসিয়াহ ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল দাবি করে যে শাহীই প্রতীক্ষিত মেহেদী, মসীহ এবং কল্কি অবতার যখন আঞ্জুমান সেরফারোশান-ই-ইসলাম তা করেনি। এমএফআই-এর ওয়েবসাইট অনুসারে, শাহী হল প্রতীক্ষিত মসীহ, কিন্তু তারা এই ধারণাটিকে অস্বীকার করে যে শাহী যিশুর অন্য রূপ এবং দাবি করে যে যিশুও মেহেদীকে সমর্থন করতে ফিরে এসেছেন।
শাহী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে পৃথিবীর দিকে ধূমকেতুর কারণে পৃথিবী 2026 সালে শেষ হবে। তিনি দাবি করেন যে ধূমকেতুটি "সম্পূর্ণ ধ্বংসের" কারণ হবে যদিও উল্লেখ করেছেন যে "[মানবজাতিকে] ভয় দেখানোর জন্য। . . ঈশ্বর ক্ষুদ্র পরিসরে ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন।"
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
গহরশাহী নামে যে ফিতনা রয়েছে,এদের যাবতীয় দাবী মিথ্যা বানোয়াট।
কুরআন হাদীসের সাথে এর দাবীর বিন্দুমাত্র মিল নেই।
সুতরাং তারা স্পষ্ট ধোকাবাজ,মিথ্যুক, ফিতনা সৃষ্টিকারী একটি সম্প্রদায়।
তারা নিঃসন্দেহে বাতিল সম্প্রদায়।
তারা একই ব্যাক্তিকে ইমাম মাহদী ও ঈসা আঃ বলে দাবী করছেন,অথচ ইমাম মাহদী ও ঈসা আঃ উভয়েই আলাদা ব্যাক্তি,তারা একজন হতেই পারেনা।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ইমাম মাহদী আঃ এর কোনো নিদর্শন গহর শাহীর মাঝে নেই।
সুতরাং তারা নিঃসন্দেহে বাতিল সম্প্রদায়।
তারা আমাদের ঈমান আকীদার জন্য মারাত্মক পর্যায়ের হুমকী স্বরুপ।
মুসলিম উম্মাহর তাদের ফিতনা থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত জরুরী।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ইমাম মাহদী আঃ এর আগমন সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছেঃ
আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ ‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমের ঘোরে এলোমেলো কিছু কাজ করলেন। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ জাগ্রত হলে আমরা তাঁকে বললামঃ ঘুমের মধ্যে আপনি আজ এমন কিছু কাজ করেছেন যা অতীতে কখনও করেন নি। তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের একদল লোক কা’বার পাশে আশ্রয় গ্রহণকারী কুরাইশ বংশের একজন লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। তারা যখন ‘বায়দা’ নামক স্থানে পৌঁছবে তখন তাদেরকে নিয়ে যমিন ধসে যাবে। আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! তখন তো রাস্তায় বিভিন্ন ধরণের লোক থাকবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাদের ভিতর এমন লোক থাকবে যারা নিজেদেরকে গোমরাহ জেনেও বের হবে, কাউকে বল প্রয়োগ করে আনা হবে এবং তাদের মধ্যে মুসাফিরও থাকবে। তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে সকলকেই আল্লাহ তা’আলা নিয়তের উপর পুনরুত্থিত করবেন।
(মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।)
আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী আমার বংশের হবে। তার চেহারা উজ্জ্বল হবে। (তার দ্বারা) গোটা দুনিয়ায় ইনসাফ কায়েম হবে। যেমনিভাবে (ইতিপূর্বে) পুরো দুনিয়ায় অন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তিনি সাত বছর খেলাফতের দায়িত্ব পালন করবেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৪)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
الْمَهْدِيُّ مِنِّي أَجْلَى الْجَبْهَةِ أَقْنَى الْأَنْفِ يَمْلَأُ الْأَرْضَ قِسْطًا وَعَدْلًا كَمَا مُلِئَتْ جَوْرًا وَظُلْمًا يَمْلِكُ سَبْعَ سِنِينَ
‘‘মাহদী আসবেন আমার বংশধর হতে। তাঁর কপাল হবে উজ্জল এবং নাক হবে উঁচু। পৃথিবী হতে যুলুম-নির্যাতন দূর করে দিয়ে ন্যায়-ইনসাফ দ্বারা তা ভরে দিবেন। সাত বছর পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করবেন’’।
আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুল মাহদী, সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীছ নং- ৬৬১২।
★ইমাম মাহদী ফাতেমা রা-এর বংশে জন্মগ্রহণ করবেন্
উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী হবে ফাতেমার বংশধর। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪০৮৬)
মাহদী রা.-এর নাম হবে মুহাম্মাদ এবং তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার মাত্র একদিনও বাকি থাকে তবুও-আল্লাহ তাআলা ঐ দিনকে দীর্ঘ করবেন এবং আমার বংশের এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। তার নাম আমার নামের সাথে এবং তার পিতার নাম আমার পিতার নামের সাথে মিলে যাবে। (অর্থাৎ তার নাম হবে মুহাম্মাদ ও তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮১; জামে তিরমিযী, হাদীস : ২২৩০)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘ততদিন দুনিয়া ধ্বংস হবেনা যতদিন না আমার পরিবারের একজন লোক আরবদের বাদশা হবেন। তাঁর নাম হবে আমার নামে এবং তাঁর পিতার নাম হবে আমার পিতার নামের অনুরূপ’’।
মুসনাদে আহমাদ, সহীহুল জামেউস্ সাগীর, হাদীছ নং- ৫১৮০।
অর্থাৎ তাঁর নাম হবে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, ‘‘আখেরী যামানায় আমার উম্মাতের ভিতরে মাহদীর আগমণ ঘটবে। তাঁর শাসনকালে আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, যমিন প্রচুর ফসল উৎপন্ন করবে, তিনি মানুষের মাঝে সমানভাবে প্রচুর সম্পদ বিতরণ করবেন, গৃহপালিত পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং উম্মাতে মুহাম্মাদীর সম্মান বৃদ্ধি পাবে। তিনি সাত বছর কিংবা আট বছর জীবিত থাকবেন’’।
মুস্তাদরাকুল হাকিম। সিলসিলায়ে সাহীহা, হাদীছ নং- ৭১১।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে আরও বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘আমি তোমাদেরকে মাহদীর আগমণ সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছি। মানুষেরা যখন মতবিরোধে লিপ্ত হবে তখন তিনি প্রেরিত হবেন। পৃথিবী হতে জুলুম-নির্যাতন দূর করে ন্যায়-ইনসাফ দ্বারা তা ভরে দিবেন। আসমান-যমীনের সকল অধিবাসী তার উপর সন্তুষ্ট হবেন। তিনি মানুষের মাঝে সমানভাবে প্রচুর সম্পদ বিতরণ করবেন’’।মুসনাদে আহমাদ। ইমাম হায়ছামী বলেনঃ হাদীছের বর্ণনাকারীগন নির্ভরযোগ্য। মাজমাউ যাওয়ায়েদ (৭/৩১৩-৩১৪)।
আরো জানুনঃ-
★হযরত ঈসা আঃ সংক্রান্ত সুরা নিসার ১৫৭,১৫৮,১৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন
وَّ قَوۡلِہِمۡ اِنَّا قَتَلۡنَا الۡمَسِیۡحَ عِیۡسَی ابۡنَ مَرۡیَمَ رَسُوۡلَ اللّٰہِ ۚ وَ مَا قَتَلُوۡہُ وَ مَا صَلَبُوۡہُ وَ لٰکِنۡ شُبِّہَ لَہُمۡ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیۡنَ اخۡتَلَفُوۡا فِیۡہِ لَفِیۡ شَکٍّ مِّنۡہُ ؕ مَا لَہُمۡ بِہٖ مِنۡ عِلۡمٍ اِلَّا اتِّبَاعَ الظَّنِّ ۚ وَ مَا قَتَلُوۡہُ یَقِیۡنًۢا ﴿۱۵۷﴾ۙ
এবং তাদের এ কথার কারণে যে, ‘আমরা আল্লাহর রাসূল মারইয়াম পুত্র ঈসা মাসীহকে হত্যা করেছি’। অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি এবং তাকে শূলেও চড়ায়নি। বরং তাদেরকে ধাঁধায় ফেলা হয়েছিল। আর নিশ্চয় যারা তাতে মতবিরোধ করেছিল, অবশ্যই তারা তার ব্যাপারে সন্দেহের মধ্যে ছিল। ধারণার অনুসরণ ছাড়া এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই। আর এটা নিশ্চিত যে, তারা তাকে হত্যা করেনি।
,
بَلۡ رَّفَعَہُ اللّٰہُ اِلَیۡہِ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَزِیۡزًا حَکِیۡمًا ﴿۱۵۸﴾
বরং আল্লাহ তাকে তার নিকট তুলে নিয়েছেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
,
وَ اِنۡ مِّنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ اِلَّا لَیُؤۡمِنَنَّ بِہٖ قَبۡلَ مَوۡتِہٖ ۚ وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ یَکُوۡنُ عَلَیۡہِمۡ شَہِیۡدًا ﴿۱۵۹﴾ۚ
কিতাবীদের মধ্য থেকে প্রত্যেকে তার মৃত্যুর পূর্বে তার উপর ঈমান আনবেই। আর কেয়ামতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবেন।
,
কুরআনুল কারীমের এই আয়াতে ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে যে, ইয়াহুদী ও নাসারারা বর্তমানে যদিও ঈসা আলাইহিস সালাম-এর প্রতি যথাযথ ঈমান রাখে না, বরং শৈথিল্য বা বাড়াবাড়ি করে, কিন্তু কিয়ামতের নিকটবর্তী যুগে তিনি যখন পুনরায় পৃথিবীতে অবতরণ করবেন, তখন এরাও তার প্রতি পুরোপুরি ঈমান আনয়ন করবে। নাসারারা তখন মুসলিমদের মত সহীহ আকীদা ও বিশ্বাসের সাথে ঈমানদার হবে।
ইয়াহুদীদের মধ্যে যারা তার বিরুদ্ধাচরণ করবে, তাদেরকে নিধন ও নিশ্চিহ্ন করা হবে, অবশিষ্টরা ইসলাম গ্রহণ করবে। তখন সমগ্র দুনিয়া থেকে সর্বপ্রকার কুফরী ধ্যান-ধারণা, আচার-অনুষ্ঠান উৎক্ষিপ্ত হয়ে যাবে; সর্বত্র ইসলামের একচ্ছত্র প্রাধান্য কায়েম হবে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঈসা ইবন মারইয়াম 'আলাইহিস সালাম একজন ন্যায়পরায়ণ শাসকরূপে অবশ্যই অবতরণ করবেন। তিনি দাজ্জালকে কতল করবেন, শুকর নিধন করবেন এবং ক্রুশকে চুরমার করবেন। তখন একমাত্র আল্লাহ্ তা'আলার ইবাদাত করা হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেন - তোমরা ইচ্ছা করলে এখানে কুরআনুল কারীমের এ আয়াত পাঠ করতে পার যাতে বলা হয়েছেঃ “আহলে কিতাবদের মধ্যে কেউ অবশিষ্ট থাকবে না, বরং ওরা তার মৃত্যুর পূর্বে অবশ্যই তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। [বুখারীঃ ৩৪৪৮]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ এর অর্থ ঈসা আলাইহিস সালাম-এর মৃত্যুর পূর্বে। এ বাক্যটি তিনি তিনবার উচ্চারণ করেন। অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তখন তোমাদের কেমন লাগবে? যখন ঈসা 'আলাইহিস সালাম তোমাদের মাঝে আগমন করবেন এবং তোমাদের মধ্য থেকে ইমাম হবেন। [বুখারীঃ ৩৪৪৯]
,
অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! অবশ্যই ইবন মারইয়াম ‘ফাজ্জ আর রাওহা’ থেকে হজ্জ বা উমরা অথবা উভয়টির জন্যই ইহরাম বাঁধবেন। [মুসলিম: ১২৫২]
,
অন্য হাদীসে এসেছে, ইবন মারইয়াম দাজ্জালকে বাবে লুদ এ হত্যা করবে। [তিরমিযী ২২৪৪]