আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আমার মা একজন সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। বাবা একটা সমবায় সমিতিতে ম্যানেজার ছিলেন, সেই সমিতির মালিকরা মানুষের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। যার কারনে বাবার ইনকাম নেই।বাবা এলাকায় থাকেন না। ৭/৮ বছর ধরে সংসার চালান আমার মা এবং ভাই মিলে।আম্মুর চাকরীর আর ৪ বছর আছে,তারপর রিটায়ার্ডে চলে আসবে। ভাইয়া ডাক্তার,ভাবীও ডাক্তার। আমার বড়বোন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। আমি একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি গতবছর।আমার পুরো পরিবার শিক্ষিত, ভালো পজিশনে আছে চাকরীর দিক দিয়ে। আমার বিয়ের কয়েকমাস পর তালাক হয়ে যায় বাবার সমিতির ঝামেলাকে কেন্দ্র করে।আমাকে শশুরবাড়িতেও নিয়ে যাওয়া হয়নি,বিয়ের পর বাবার বাড়িতেই ফেলে রাখছিলো।আমি এখনো বাড়িতে আছি। কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না বাবার সমস্যার কারনে। এখন প্রায় ১ বছর ধরে আমার পরিবার থেকে চাকরীর জন্য খুব প্রেশার দিচ্ছে। আমি চাকরী করতে চাই না।আমি পর্দার খিলাফে গিয়ে চাকরী করব না। কিন্তু আমার পরিবার কিছু তেই রাজি হচ্ছে না।ক্রমাগত অপমান অপদস্ততা বাড়ছে। আম্মু চাকরীকে কেন্দ্র করে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। সবার ধারনা চাকরী পেলেই দ্রুত বিয়ে হয়ে যাবে।আমার কখনো কারো কাছে হাত পাততে হবে না,আমার ভাল রেজাল্টের পাশাপাশি আরো সম্মানও যোগ হবে।কেউ অসম্মান করতে পারবেনা। আমার পরিবার সেভাবে দ্বীন মানেন না।
আমি এখন কি করব?? পরিবারের চাপে ইসলামিক পড়াশোনাও করতে পারিনা।আমার দ্বীনের খেদমত করার খুব ইচ্ছা। আমি সবদিক থেকে আটকে আছি মনে হচ্ছে। আমার ভাই ভাবী কখনোই আমার খরচ বা ভবিষ্যতে কোন কিছু হলে আমার দায়িত্ব নিবে না স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। ইদানীং আম্মু আব্বুর কঠোর আচরণে দম বন্ধকর পরিস্থিতি হচ্ছে। আবার চাকরী করলে দ্বীনদার ছেলেরাও বিয়ে করবেনা,পর্দার বিধান নষ্ট হবে। পরিবারের কথা ভাবলেও খারাপ লাগে।

আমার আসলে কি করা উচিত??

আমার এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কি করা উচিত? আমার জন্য কি চাকরী করা জায়েজ? আমি চাকরীর পথ বেছে নিলে কি আমার জন্য উত্তম হবে?

পর্দা,বিয়ে, দ্বীন পালন নিয়ে অনেক স্ট্রাগল করে যাচ্ছি। এই বোঝাগুলো কিভাবে হালকা করতে পারি?

বাংলাদেশে তো শরীয়াহ পর্দা মেন্টেইন করে চাকরী করা সম্ভব না।আমার পরিবারের ডিমান্ড সরকারী চাকরী করা লাগবে আমার। চাকরী করতে গেলে পুরুষদের সাথে চাকরী করতে হয়,কত ভাবে কথা বলতে হয়,যেটা নিজের চোখে দেখছি আমার আম্মু,পরিবারের অন্য সদস্যদের দিয়ে।আমি কি করব????

কোন পথটা সঠিক এবং উত্তম হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। 
যেমন,
– যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।
– চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
– কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
– চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
– কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
– নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত শর্তাবলী মেনে চাকুরী করতে পারলে আপনার জন্য সেই চাকুরী করা জায়েজ হবে।

উপরোক্ত শর্তাবলী মেনে চাকুরী করতে না পারলে চাকুরী করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...