কুরবানীর পশুর যদি কানকাটার ছিদ্র স্পষ্ট দেখা যায়,তাহলে তার দ্বারা কুরবানী আদায় হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
আলী রা. বলেন, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন, আমরা যেন কুরবানীর পশুর চোখ ও কান ভালো করে দেখে নিই এবং কান কাটা, কান ছেঁড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্র করা পশু দ্বারা কুরবানী না করি। (মুসনাদে আহমদ ১/৮০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০৪)
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ شُرَيْحِ بْنِ النُّعْمَانِ وَكَانَ رَجُلَ صِدْقٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَسْتَشْرِفَ الْعَيْنَ وَالْأُذُنَيْنِ، وَلَا نُضَحِّي بِعَوْرَاءَ، وَلَا مُقَابَلَةٍ، وَلَا مُدَابَرَةٍ، وَلَا خَرْقَاءَ، وَلَا شَرْقَاءَ قَالَ زُهَيْرٌ: فَقُلْتُ لِأَبِي إِسْحَاقَ: أَذَكَرَ عَضْبَاءَ؟ قَالَ: لَا. قُلْتُ: فَمَا الْمُقَابَلَةُ؟ قَال: يُقْطَعُ طَرَفُ الْأُذُنِ. قُلْتُ: فَمَا الْمُدَابَرَةُ؟، قَالَ: يُقْطَعُ مِنْ مُؤَخَّرِ الْأُذُنِ. قُلْتُ: فَمَا الشَّرْقَاءُ؟ قَالَ: تُشَقُّ الْأُذُنُ. قُلْتُ: فَمَا الْخَرْقَاءُ؟ قَالَ: تُخْرَقُ أُذُنُهَا لِلسِّمَةِ ضعيف إلا جملة الأمر بالاستشراف
‘আলী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন ‘আমরা যেন কুরবানীর প্রাণীর চোখ-কান ভালভাবে দেখে নেই। ‘আমরা যেন এমন পশু কুরবানী না করি যা কানা বা অন্ধ, কানের অগ্র বা শেষভাগে অংশ কাটা; যার কানের পাশের দিক ফাঁড়া বা গোলাকার ছিদ্র রয়েছে।
যুহাইর (রহঃ) বলেন, আমি আবূ ইসহাককে বলি, তিনি কান কাটার কথা উল্লেখ করেছেন কি না? তিনি বললেন, না। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, মুকাবালাহ কি? তিনি বললেন, যার কানের একপাশে কাটা। আমি বলি, মুদাবারাহ কি? তিনি বললেন, যে পশুর কানের শেষের অংশ কাটা। আমি বলি, শারকা কি? তিনি বললেন, যার কান ছিদ্র করা হয়েছে। আমি বলি, খারকা কি? তিনি বললেন, যে পশুর কান সম্পূর্ণ কাটা।
(আবু দাউদ ২৮০৪)
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ قَالَ: قُلْتُ لِسَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ: مَا الْأَعْضَبُ؟ قَالَ: النِّصْفُ فَمَا فَوْقَهُ مقطوع
কাতাদাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করি, আ‘দাব কোন ধরণের পশু? তিনি বলেন, যে পশুর কান বা শিং অর্ধেক বা ততোধিক ভাঙ্গা বা কাটা।
(আবু দাউদ ২৮০৬)
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى الرَّازِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا، ح وحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ بَحْرِ بْنِ بَرِيٍّ، حَدَّثَنَا عِيسَى الْمَعْنَى، عَنْ ثَوْرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو حُمَيْدٍ الرُّعَيْنِيُّ، أَخْبَرَنِي يَزِيدُ ذُو مِصْر، قَالَ: أَتَيْتُ عُتْبَةَ بْنَ عَبْدٍ السُّلَمِيَّ فَقُلْتُ: يَا أَبَا الْوَلِيدِ، إِنِّي خَرَجْتُ أَلْتَمِسُ الضَّحَايَا فَلَمْ أَجِدْ شَيْئًا يُعْجِبُنِي غَيْرَ ثَرْمَاءَ فَكَرِهْتُهَا فَمَا تَقُولُ؟ قَالَ: أَفَلَا جِئْتَنِي بِهَا. قُلْتُ: سُبْحَانَ اللَّهِ تَجُوزُ عَنْكَ وَلَا تَجُوزُ عَنِّي. قَالَ: نَعَمْ، إِنَّكَ تَشُكُّ وَلَا أَشُكُّ، إِنَّمَا " نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ المُصْفَرَّةِ، وَالْمُسْتَأْصَلَةِ، وَالْبَخْقَاءِ وَالْمُشَيَّعَةِ، وَكِسَرَا، وَالْمُصْفَرَّةُ: الَّتِي تُسْتَأْصَلُ أُذُنُهَا حَتَّى يَبْدُوَ سِمَاخُهَا وَالْمُسْتَأْصَلَةُ: الَّتِي اسْتُؤْصِلَ قَرْنُهَا مِنْ أَصْلِهِ، وَالْبَخْقَاءُ: الَّتِي تُبْخَقُ عَيْنُهَا، وَالْمُشَيَّعَةُ: الَّتِي لَا تَتْبَعُ الْغَنَمَ عَجَفًا وَضَعْفًا، وَالْكَسْرَاءُ: الْكَسِيرَةُ
ইয়াযীদ মিসরী (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘উতবাহ ইবনু আবদ আস-সুলামীর নিকট এসে বলি, হে ওয়ালীদের পিতা! আমি কুরবানীর পশুর খোঁজে বের হই, কিন্তু কোনো পশুই পছন্দ হয়নি। একটি বকরী পছন্দ হয়েছিল, তার একটি দাঁত না থাকায়, সেটাও বাদ দিয়েছি। এখন এ বিষয়ে আপনি আমাকে পরামর্শ দিন। ‘উতবাহ বলেন, তুমি আমার কাছে সেটা নিয়ে আসনি কেন? আমি বলি, সুবহানাল্লাহ! দাঁতপড়া পশু কুরবানী আপনার জন্য বৈধ, অথচ আমার জন্য বৈধ নয়! তিনি বললেন, হ্যাঁ। তুমি সন্দিহান হয়েছো কিন্তু আমি সন্দিহান হইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কানকাটা, শিংবিহীন, অন্ধ, দুর্বল এবং পা ভাঙ্গা পশু কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন।
মুসফারা হচ্ছে ঐ পশু যার কানকাটার ছিদ্র স্পষ্ট দেখা যায়। মুস্তাসালা হলো ঐ পশু যার শিং গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে। বাখকা হলো, যে পশুর দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়েছে। মুশায়্যি‘আহ হলো, যে পশু দুর্বলতার কারণে মেষের সাথে সাথে চলতেও অক্ষম। কাসরা হলো ঐ পশু যার পা ভাঙ্গা।
(আবু দাউদ ২৮০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত কানের ছিদ্র তো তেমন স্পষ্ট নয়,সুতরাং উক্ত পশু দিয়ে কুরবানী জায়েজ হবে।