আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
102 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।
আমার মায়ের কুরআন তিলাওয়াত অশুদ্ধ এবং তিলাওয়াতে লাহানে জালি থাকায় কয়েকমাস আগে আমি তাকে বলেছিলাম, তোমার তিলাওয়াত হচ্ছেনা,ভুল হচ্ছে এতে গুনাহ ও হচ্ছে। এরপর থেকে সে নাকি আর কুরআন তিলাওয়াত করেনা।

বলে যে, গুনাহই হচ্ছে তাহলে আর তিলাওয়াত করবো কিভাবে। আমি তাকে তাজউইদ শেখার কথা বলেছিলাম,, সে বলে শিখবো কিন্তু তেমন গুরুত্ব দেয়না।
প্রশ্ন:১- আমি তাকে তিলাওয়াত করতে নিষেধ করিনি,, কিন্তু আমার কথা শোনার পর থেকে সে আর তিলাওয়াত করেনা এক্ষেত্রে কি আমার গুনাহ হবে??? যতদিন তার তিলাওয়াত শুদ্ধ না হবে ততদিন কি সে অশুদ্ধভাবেই তিলাওয়াত করতে পারবে??
প্রশ্ন:২- আমাদের রুমে কিবলা একটু বাকা দিকে,, তো এতদিন এটা খেয়াল না করে সোজা দিকে নামাজ পড়েছি। এতে কি এতদিনের নামাজ আদায় হয়নি?? গুনাহ হয়েছে কি?? এবং আবার কি কাযা করতে হবে??
*যেমন কিবলা হলো ( / ) এইরকম দিকে আর আমরা নামাজ পড়েছি ( | ) এইরকম সোজা দিকে

প্রশ্ন:৩- সলাতে তাশাহুদ পড়ার সময় শাহাদাত আঙ্গুল উঠানোর বিস্তারিত পদ্ধতি কি??
এক শায়েখের ভিডিও তে দেখেছিলাম,, তাশাহুদের আশ হাদু আল্লাহ বলার সাথে সাথে আঙুল উঠাতে হবে ইল্লাল্লাহ বলার সাথে সাথে আঙুল নামাতে হবে,,কিন্তু বৃদ্ধাআঙুলী দিয়ে বাকি আঙুল গোল করা থাকবে একদম সালাম ফিরানো পর্যন্ত।  এটা কি সঠিক?? নাকি তাশাহুদ শেষ হবার পরপরই সব আঙ্গুল স্বাভাবিক করে ফেলতে হবে??

প্রশ্ন:৪- আমার এক আত্বীয় মারা যাওয়ার কিছুদিন পর থেকেই আমি তাকে স্বপ্ন দেখছি মৃত অবস্থায়,,, একবার দেখেছি তাকে কবর থেকে উঠানো হয়েছে, আরেকবাএ দেখেছি কবর দেয়া হচ্ছে,,এরপর আরেকদিন দেখেছি কেউ একজন মারা গেছে। কিছুদিন গ্যাপে গ্যাপে পরপর ৩ টা স্বপ্নতেই ঠিক ফজরের ওয়াক্তের শুরুতে আমার ঘুম ভেঙেছে কিন্তু আমি নামাজ পড়তে উঠতে পারিনি, ভয়ে। এরপর আমি নিজেই ভেবেছি আমাকে যাদু করা হচ্ছে। আবার তার কিছুদিন পর আমার বোন স্বপ্নে দেখেছে আমার রুমে একটা জ্বীন এসেছে এবং আমাকে যাদু করছে,,,এটা সে আমার সাথে শেয়ার করার পর আমি বলছিলাম তাহলে হয়তো সত্যিই আমাকে যাদু করা হচ্ছে। এবং সেও এটাই বলছিল যে হয়তো আমাকে সত্যিই যাদু করা হচ্ছে।

আমরা তো জানি যে, স্বপ্নের ব্যাখ্যা না দেয়া পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া হয়না কিন্তু একবার দিয়ে ফেললে সেটা আন্দাজি ব্যাখ্যা হলেও তার প্রতিক্রিয়া হয়।
তাহলে এক্ষেত্রে আমার এবং বোনদের কথোপকথনের ধরূন কি স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে?? এবং তাই যদি হয় তাহলে কি স্বপ্নের প্রতিক্রিয়া হবে??
প্রশ্ন:৫- গার্লস/স্কুল বা কলেজে ছেলে না থাক্লেও ছেলে টিচার থাকার কারণেও এটাও সহশিক্ষার পর্যায়ে পড়ে,, ফলে এই শিক্ষাব্যবস্থা ও হারাম। কিন্তু কেউ যদি পরিবারে প্রেশারে,, গার্লস কলেজে ভর্তি হয় এবং একটাও ক্লাস করেনা শুধু পরীক্ষা দেয় তাহলে কি তাও সহশিক্ষা হবে??
আর বাবা মা যদি বলে যে কলেজে পড়ালেখা না করলে আমরা মারা যাব,  তাহলে কি তাদের কথা শুনে বাধ্য হয়ে মহিলা কলেজে ক্লাস না করে শুধু পরীক্ষা দিলে কি গুনাহ হবে??? না কি স্রষ্টার নাফরমানির জন্য তাদের কথা শোনা যাবেনা??
এক্ষেত্রে তাদের কিভাবে মানাবো??
অঅনেকগুলো প্রশ্ন একসাথে করার জন্য আফওয়ান।

জাযাকুমুল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info//97622 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ صَاعِدٍ ، ثَنَا أَبُو عُبَيْدِ اللَّهِ الْمَخْزُومِيُّ سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُقْرِئُ - وَاللَّفْظُ لِسَعِيدٍ - قَالَا : ثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ ، عَنْ مِسْعَرٍ ، ح : وَحَدَّثَنَا ابْنُ صَاعِدٍ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ كَرَامَةَ ، وَأَبُو شَيْبَةَ ، قَالَا : نَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى ، ثَنَا مِسْعَرٌ ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ السَّكْسَكِيِّ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى ، قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَذَكَرَ أَنَّهُ لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَأْخُذَ مِنَ الْقُرْآنِ شَيْئًا ، - وَقَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ : فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، عَلِّمْنِي شَيْئًا يُجْزِينِي مِنَ الْقُرْآنِ ، فَإِنِّي لَا أَقْرَأُ ، قَالَ : " قُلْ سُبْحَانَ اللَّهِ ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ " . ، قَالَ : فَضَمَّ عَلَيْهَا بِيَدِهِ ، وَقَالَ : هَذَا لِرَبِّي ، فَمَا لِي ؟ قَالَ : " قُلِ : " اللَّهُمَّ ، اغْفِرْ لِي ، وَارْحَمْنِي ، وَاهْدِنِي ، وَارْزُقْنِي ، وَعَافِنِي " . فَضَمَّ بِيَدِهِ الْأُخْرَى ، وَقَامَ.

رواه النسائي (924) وأبو داود (832).

والحديث: جوَّد إسنادَه المنذري في "الترغيب والترهيب" (2 /430)، وأشار إلى تحسينه الحافظ ابن حجر في "التلخيص الحبير" (1/236).

অনুবাদঃ- ইয়াহইয়া ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সায়েদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল যে, সে কুরআন শিখতে অক্ষম। ইবনে উয়াইনার বর্ণনায় আছে, সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে কিছু শিখিয়ে দিন যা আমার জন্য কুরআন পড়ার বিকল্প হিসেবে যথেষ্ট হবে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ তুমি বলো, "সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি" (আল্লাহ মহাপবিত্র, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আল্লাহ সবচেয়ে মহান। আল্লাহর তৌফিক ব্যতীত গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং ভালো কাজ করার শক্তি নেই)। রাবী বলেন, অতঃপর লোকটি তার দুই হাত একত্র করে বলল, এটা তো আমার প্রতিপালকের জন্য, আমার জন্য কি? তিনি বলেনঃ তুমি বলো, "আল্লাহুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াদিনী ওয়ারযুকনী ওয়া আফিনী"। (হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো, আমাকে দয়া করো, আমাকে হেদায়াত দান করো, আমাকে রিযিক দাও এবং আমাকে সুস্থতা দান করো)। অতঃপর সে পুনরায় তার দুই হাত একত্রে মিলালো, অতঃপর উঠে চলে গেল।
(সুনানে দারা কুতনি ১১৬৮)

قال ابن قدامة رحمه الله:

"فإن لم يحسن شيئا من القرآن، ولا أمكنه التعليم قبل خروج الوقت: لزمه أن يقول سبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر ولا حول ولا قوة إلا بالله؛ لما روى أبو داود قال: جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال إني لا أستطيع أن آخذ شيئا من القرآن فعلمني ما يجزيني منه فقال قل سبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر ولا حول ولا قوة إلا بالله، قال: هذا لله فما لي قال: تقول: اللهم اغفر لي وارحمني وارزقني واهدني وعافني.

ولا يلزمه الزيادة على الخمس الأول؛ لأن النبي صلى الله عليه وسلم اقتصر عليها، وإنما زاده عليها حين طلب الزيادة" انتهى.

فإن استطاع قراءة بعض الفاتحة دون البعض الآخر لزمه الإتيان بما استطاع منها،

ويلزمه تكرار ما يحسن منها بقدرها (أي: ليكون مجموع ما يقرؤه سبع آيات بعدد آيات الفاتحة).

وقال ابن قدامة: ويحتمل أن يجزئه التحميد والتهليل والتكبير؛ لقول النبي صلى الله عليه وسلم: "فإن كان معك قرآن فاقرأ به، وإلا فاحمد الله وهلِّلْه وكبِّره" رواه أبو داود.

(المغني/1/189-190).

সারমর্মঃ-
যদি কোনো ব্যাক্তি কুরআন ভালোভাবে পড়তে পারেনা,আর কুরআন শিখাও তার পক্ষে সম্ভব না হয়,সেক্ষেত্রে সে سبحان الله والحمد لله ولا إله إلا الله والله أكبر ولا حول ولا قوة إلا بالله পড়বে।
যদি সুরা ফাতেহার কিছু আয়াত পড়তে সক্ষম হয়,সেক্ষেত্রে ঐ আয়াত গুলিই বারবার তিলাওয়াত করবে। যাতে করে নামাজ শুদ্ধ হওয়া সমপরিমাণ কিরাআত হয়ে যায়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার গুনাহ হবেনা। এক্ষেত্রে আপনার মা এভাবে অশুদ্ধ তিলাওয়াত না করে শুদ্ধ ভাবে তিলাওয়াত করার লক্ষ্যে শিখবে।

(০২)
কিবলামুখী হবার একটি মূলনীতি বের করেছেন, তা হল বাইতুল্লাহ থেকে উভয় পাশ হিসেবে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেলে নামায হবে না। ডান পাশে ৪৫ ডিগ্রি ও বাম পাশে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘুরে যাবার আগ পর্যন্ত নামায শুদ্ধ হবে। তবে এর চেয়ে বেশি ঘুরে গেলে নামায হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-১/২৪২-২৪৪ আহসানুল ফাতওয়া }

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার এতো দিনের নামাজ আদায় হয়েছে। এগুলোর কাজা আদায় করতে হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
আপনি শায়েখের ভিডিওতে যেই পদ্ধতি দেখেছেন,সেটি সঠিক।
তবে ২য় পদ্ধতি অবলম্বন করলেও নামাজ হয়ে যাবে।

(০৪)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে,পবিত্র হালতে থাকতে হবে,অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। 
দান ছদকাহ করতে হবে।
,
স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।
ঘুমানোর আগ দিয়ে তিন কুল তিনবার করে পরে হাতে ফুক দিয়ে পুরো শরীরে মুছে দিবেন।

আরো জানুনঃ- 

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এটি সহ শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত হবেনা।
এক্ষেত্রে এভাবে পরীক্ষা দিলে গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...