(০১)
মাইয়্যিতের ঈসালে ছওয়াব এর লক্ষ্যে দাওয়াতের ইহতিমামের এই পদ্ধতি শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে প্রমানিত নয়।
এবং মাইয়্যিতের ছওয়াব পৌছানোর নিয়তে যেই খাবার তৈরী করা হয়েছে,তাতে শুধু ফকিরদের হক রয়েছে।
ধনীরা তার মধ্যে শরীক হবেনা।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১/৩৯১)
তবে যেই খাবার মেহমানদারীর জন্য পাকানো হয়েছে,সেটা ধনীরা খেতে পারবে।
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ১৫২, কিতাবুন নাওয়াজেল ১/৩৭২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾
সাদাকাহ হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের, আর এই সাদাকাহর (আদায়ের) জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং (দীনের ব্যাপারে) যাদের মন রক্ষা করতে (অভিপ্রায়) হয় (তাদের), আর গোলামদের আযাদ করার কাজে এবং কর্জদারদের কর্জে (কর্জ পরিশোধে), আর জিহাদে (অর্থাৎ যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য) আর মুসাফিরদের সাহায্যার্থে। এই হুকুম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়।
(সুরা তওবা ৬০)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِغَنِيٍّ وَلَا لِذِي مِرَّةٍ سَوِيٍّ»
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সদকার মাল ধনীদের জন্য হালাল নয়, সুস্থ সবলদের (খেটে খেতে সক্ষম) জন্যও নয়।
(আবূ দাঊদ ১৬৩৪, আত্ তিরমিযী ৬৫২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৭১৫৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৬৬৩, আহমাদ ৬৫৩০, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৪৭৮, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭২৫১।)
وإن اتخذ طعاماً للفقراء کان حسناً، وأطال ذلک في المعراج۔ (شامی زکریا ۳؍ ۱۴۸، طحطاوي علی مراقي الفلاح، الجنائز / فصل حملہا ودفنہا ۵۱۰ مصر، کفایت المفتی ۴؍۱۱۶، فتاوی شیخ الاسلام ۱۵۱)
সারমর্মঃ-
যদি শুধু ফকিরদের জন্য খানা তৈরী করে,তাহলে তাহা উত্তম।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বিদ'আতী ভাবে নয়,বৈধ ভাবে ঈসালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে দাওয়াত দেয়া হলে সেক্ষেত্রে মাইয়্যিতের ঈসালে ছওয়াবের জন্য রান্নাকৃত উক্ত খাবার যারা ধনী (নেসাবের মালিক), তারা খেতে পারবেনা।
যারা যারা গরিব,নেসাব পরিমান সম্পদ মালিকানায় নয়,সেক্ষেত্রে তারা খাবার খেতে পারবে।
আর সেই খাবার মেহমানদারীর জন্যেও পাকানো হলে ধনীরাও সেই খাবার খেতে পারবে।
তবে এক্ষেত্রে ধনীদের খাওয়ার দ্বারা ঈসালে ছওয়াব হবেনা।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৃত মানুষের উদ্দেশ্যে ঈসালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে দেওয়া তাবারক ধনীদের জন্য না খাওয়াই উত্তম।
কেননা এটি মাইয়্যিতের নিকটে ছওয়াব পৌছানোর জন্য খাওয়ানো হচ্ছে,আর ধনীকে খাওয়ালে ঈসালে ছওয়াব হবেনা।
তবে যেহেতু মালিক মুবাহ করে সকলের জন্যই ব্যবস্থা করেছেন,তাই এটি ধনীদের জন্য খাওয়া হারাম হবে না।
জায়েজ হবে,তবে ধনীদের জন্য অনুত্তম।
গরীব তথা যাদের উপর যাকাত ফরজ নয়,নেসাব পরিমান সম্পদের যারা মালিক নন,তাদের জন্য ঈসালে ছওয়াবের এই ধরনের তাবারক খাওয়া অনুত্তম নয়।
তারা খেলে ঈসালে ছওয়াব হবে।
এতে মাইয়্যিতের কবরে ছওয়াব পৌছবে।