আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
230 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)
আমার বিয়ের ৫ বছর হবে কিছুদিন পর। বিয়ের পর থেকেই আমার ভরণপোষণ এবং সব খরচের দায়িত্ব সবই আমার বাবা নিয়েছে আর বাকী থাকা আর খাওয়ার বিষয়টা শুধু শ্বশুরবাড়ির ছিল। আমার হাসবেন্ড একটা জব করলেও জাস্ট বাসা ভাড়া ছাড়া সংসারে অন্য কোন টাকা দিত না। একটা সময় পর আমি জানতে পারি সে মাদকাসক্ত এবং এটা তাঁদের পুরা পরিবার জানতো কিন্তু বিয়ের আগে আমাকে জানায়নি এইটা ভেবে যে, বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যেতে পারে। তারপর আমি নিজেও বিভিন্ন ভাবে প্রমাণ পাই এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করি সব। সে অস্বীকার করে। কিন্তু তাও আমি তাঁকে ওয়াদা করাই যে এসব কিছু কখনো যেন না করে। কিন্তু তারপর থেকে সে বাইরে থেকে এসব আজেবাজে জিনিস খেয়ে আসতো। এরই মধ্যে একদিন প্রায়ই অফিস মিস করার কারণে তার চাকুরী চলে গেল। এরপর বাসায় আরো অশান্তি বেড়ে গেল। শ্বশুরের রিটায়ারমেন্টের টাকায় সংসার চলতো। তখন আমার হাসবেন্ড ব্যবসায়ের নাম করে সারাদিন বাইরে থাকতো আর অনেক রাতে বাসায় ফিরতো। সে ফ্রিল্যান্সিং করে যা ইনকাম আসতো পুরোটাই মাদকের পিছে নষ্ট করতো। আমি বুঝিয়ে শুনিয়ে মায়ার কারণে আমাকে দেয়া বাবার খরচের টাকা ধার দিতাম তাকে। সে টাকা ফেরত দিতো কিন্তু প্রতিমাসেই আমাকে ইমোশনালি বুঝিয়ে টাকা নিতো। এসবের পর বহুবার ওয়াদা করিয়ে তাঁকে বারবার সুযোগ দেয়ার পরও সে শুধরে নেয়নি নিজেকে, এতে বরং আমাদের মধ্যে নিয়মিত ঝগড়া ঝামেলা বাড়তেই থাকে। এক সময় অবস্থা এতই বিগড়ে গেল যে সে ২/১ জনকে বাসায় নিয়ে এসে এসব খেতো। এরপর শ্বশুর বিরক্ত হয়ে বলেছিল বাসা ছেড়ে দিতে, উনি আর কুলাতে পারছেন না। তারপর বাধ্য হয়ে বিয়ের ৩ বছরের মাথায় আমি আমার বাবা-মা কে সবটা জানাই। তারপর বাসা ছেড়ে দিতে হবে বলে হোস্টেলে উঠি কারণ সামনে আমার পরীক্ষা ছিল। আর আমার হাসবেন্ড গ্রামে চলে যায় এবং সুন্দর ভাবে বলেই বিদায় নেয় আমার থেকে। তারপর গ্রামে যাওয়ার পর থেকে যোগাযোগ কমিয়ে দিল সবাই, মাসে দুইমাসে একবার যোগাযোগ করতো আর ফোন দিলেও ভালো করে কথা বলতো না। আর বহুবার আমাকে নিবে বলেও আর নেয়নি। এদিকে আমার বাবা মা আমাকে একা যেতে দিতে চায় না দূরের পথ বলে। আমি যেতে চেয়েছি যতবার নিয়ে যাবে বলেছে কিন্তু ওরা নিবে নিবে করেও নিচ্ছে না। বিষয়টার কোন সমাধান হচ্ছে না ২ বছর হয়ে গেছে। ইদানিং আবার তাঁরা ফোন দিয়ে বলছে তাঁদের ছেলে আবার মাদকাসক্ত হয়ে গেছে প্রচন্ডভাবে। আমি যেন অন্যকিছু ভাবি নিজের জন্য। কিন্তু আমি নিজেকে মানাতে পারছি না কোনভাবেই। আমাদের কি তাহলে তালাক্ব হয়ে গেছে? এ বিষয়ে জানতে চাই।

আফওয়ান, অনেক বড় হয়ে গেছে প্রশ্নটা। কিন্তু আল্লাহর রহমতে দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করছি খুব ভালোমত, তাই যেন কোন ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে ফেলি সেজন্য মাসয়ালাটা জানতে চাইছি।

1 Answer

0 votes
by (709,920 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি ধর্য্য সহকারে পরিস্থিতিকে যেভাবে সামাল দিয়েছেন,সেজন্য আল্লাহ অবশ্যই আপনাকে উত্তম বিনিময় দিবেন।

আপনার স্বামী আপনার নিকট থেকে ২ বছর যাবৎ দূরে থাকার দরুণ আপনাদের বিয়েতে কোনো সমস্যা হয়নি।আপনাদের বিয়ে বহাল আছে।এখন আপনি অন্য কোথাও বিয়ে বসে হলে,তার কাছ থেকে তালাক নিতে হবে বা তার সাথে খুলা তালাক নিতে হবে।খুলা তালাক হল,মহর মাফ করে দিয়ে বা কিছু টাকা দিয়ে স্বামীর নিকট থেকে তালাক গ্রহণ করা।


স্বামীর উপর ওয়াজিব যে,সে তার স্ত্রীর ভরণপোষণ করবে।
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।(সূরা নিসা-৩৪)


لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا
বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে।(সূরা তালাক-৭)


হাকীম ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত।
وعَنْ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : " قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ ؟ قَالَ : ( أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ ، وَلَا تَضْرِبْ الْوَجْهَ ، وَلَا تُقَبِّحْ ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ) 
 তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমন্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে।(আবু দাউদ-২১৪২,ইবনে মা'জা-১৮৫০)

স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ আদায় না করলে এবং স্ত্রীকে সঙ্গ না দিলে,স্ত্রী যদি কাযী সাহেবের নিকট বিচার দায়ের করে,তাহলে কাযী সাহেব উক্ত বিবাহকে ভঙ্গ করে দেয়ার অধিকার রাখেন।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল-৩/১০০)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...