আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
268 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (46 points)
closed by
আসসালামুয়ালাইকুম,

ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু দ্বীনদার ভাই দ্বীনদারিতার পাশাপাশি সুন্দরী পাত্রী চেয়ে থাকেন। পাশাপাশি দ্বীনদার কিছু বোনও পাত্রের আর্থিক অবস্থা বিত্তশালী চেয়ে থাকেন। এটা কি ইসলামে নিন্দনীয়?

১.গায়ের রং, আর্থিক সচ্ছলতা দিয়ে শ্রেষ্ঠ-নিকৃষ্টের পার্থক্য করেনি ইসলাম।এগুলো কখনো ভালো খারাপ বিচার করতেও পারে না। এখন মানুষ কিভাবে বিয়ের সময় এগুলো দেখে পাত্র/পাত্রী নির্বাচন করে?

২.কোন পাত্র যদি দ্বীনদারির পাশাপাশি অনেক সুন্দর পাত্রীর চাহিদা রাখে তাহলে কি তার দ্বীনদারিতায় সমস্যা আছে বলা যায়? অথবা কোন পাত্রীর আর্থিক অবস্থা হতে পারে বেশী বা কম। সে যদি বিত্তশালী কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চায় সেক্ষেত্রেও কি তার দ্বীনদারিতায় ঘাটতি আছে বলা যাবে?

যদি বলা না যায় সেক্ষেত্রে যারা এগুলো বলবে তারা কি গুনাহগার হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে? যেমন অনেকেই বলেন, "দ্বীনদারিত্ব আর সৌন্দর্য এর সৌন্দর্য চলে গেলে হয়তো ধাক্কা দিতে দ্বিধা বোধ করা হবে না। যাই হোক যার যার ইচ্ছা!"
"উনার দ্বীন নিয়েই এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে!"
"এরা হচ্ছে লেবাসি। বিয়ের সময় খালি সুন্দর খুঁজে। "
"এরা হচ্ছে লোভি। বিয়ের সময় শুধু টাকা দেখে"

৩.এরকম অজস্র কমেন্ট করে থাকেন অনেকেই। উল্লেখ্য পাত্র/পাত্রী এগুলো দেখে থাকেন। উনারা এগুলো দেখে আঘাত পান। এরকম অবস্থায় সুন্দরী পাত্রী/আর্থিক অবস্থাসম্পন্ন পাত্র চাওয়া যদি জায়েজ হয় সেক্ষেত্রে উনাদের এই কষ্ট দেয়ার জন্য কি কমেন্ট কারি ভাই-বোনেরা গুনাহগার হবেন?
closed

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
প্রথমেই আমাদের বুঝা উচিত যে, ইসলামী শরীয়াহ কেবল ধার্মিক পাত্র/পাত্রী অনুসন্ধানের উৎসাহ প্রদান করেছে। ইসলামী শরীয়তে ধার্মিক পাত্র/পাত্রী-ই প্রথম ও প্রধান গন্তব্য। হ্যা, সৌন্দর্য, অর্থ, এবং বংশ মর্যাদার মতো অন্যান্য গুণাবলী ধার্মিকতার অধীনস্থ। এইসব গুণাবলী দোষারোপযোগ্য কিংবা নিন্দণীয় নয়, তবে এইসব গুণাবলী কারো মাকসুদ বা প্রধাণতম উদ্দেশ্য হতে পারে না। হ্যা এগুলো একজন কামিল পাত্র-পাত্রীর জন্য পরিপূরক গুণাগুণ । দ্বীনদারিতার সাথে যদি এইসব গুণাবলী পাত্র/পাত্রীতে বিদ্যমান থাকে, তাহলে এটাকে গণিমত হিসেবে বিবেচনা করা হবে।  তবে যদি এইসব গুণাবলীর অস্তিত্ব না থাকে তবে দ্বীনদারিতাকেই সমস্ত কল্যাণের মানদণ্ড হিসেবে বেঁচে নিতে হবে। 

নেককার স্ত্রীর কিছু গুণাবলী হাদীসে এসেছে , হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : ( قِيلَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ! أَيُّ النِّسَاءِ خَيرٌ ؟ قال : التِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ إِليهَا ، وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَر ، وَلا تُخَالِفُهُ فِي نَفسِهَا وَلا فِي مَالِهِ بِمَا يَكرَهُ )
رواه أحمد (2/251) وحسنه الألباني في "السلسلة الصحيحة" (1838)
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন মহিলা সর্বোত্তম? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাবে বললেন, ঐ মহিলাই সর্বোত্তম, যার দিকে থাকালে স্বামীর খুশি অনুভূত হয়, যাকে স্বামী আদেশ দিলে মান্য করে, এবং যে নিজের ব্যাপারে এবং স্বামীর মালের মধ্যে স্বামীর অপছন্দনীয় কিছু করে না। (মুসনাদে আহমদ-২/২৫)

পাত্রর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, তথা সৎ ও ধার্মিক পাত্রকে বাঁচাই করাই উত্তম , হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ترضون دينه وخلقه  (আপনি যার দ্বীন ও চরিত্র সম্পর্কে সন্তুষ্ট)। সুতরাং পাত্রের মধ্যে  দ্বীনদারিত্বের সাথে সাথে সৌন্দর্য ও বিত্তবান গুণাগুণ থাকা, এটি মহান আল্লাহ তা’আলার একটি নেয়ামত, তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষের অর্থের অযথা অপচয় এবং তার স্ত্রীর জন্য ব্যয় করার অসামর্থ্যতাকে বিয়ে না দেয়ার কারণ হিসাবে বিবেচনা করেছেন। যেমন হাদীসে এসেছে, ফাতেমা বিনতে কায়েস বলেন,
فاطمة بنت قيس رضي الله عنها أنها قالت : ( لَمَّا حَلَلْتُ ذَكَرْتُ لَهُ – تعني للنبي صلى الله عليه وسلم - أَنَّ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ وَأَبَا جَهْمٍ خَطَبَانِي ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَمَّا أَبُو جَهْمٍ فَلَا يَضَعُ عَصَاهُ عَنْ عَاتِقِهِ ، وَأَمَّا مُعَاوِيَةُ فَصُعْلُوكٌ لَا مَالَ لَهُ ، انْكِحِي أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ ) رواه مسلم (1480)
যখন আমার ইদ্দত পূর্ণ হল তখন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালাম যে, মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান (রাঃ) ও আবূ জাহম (রাঃ) আমাকে বিবাহের পায়গাম পাঠিয়েছেন। তখন রাসুলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আবূ জাহাম এমন লোক যে তার কাঁধ থেকে লাঠি নামিয়ে রাখে না। আর মুআবিয়া তো কপর্দকহীন গরীব মানুষ। তুমি উসামা ইবনু যায়িদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হও। কিন্তু আমি তাঁকে পছন্দ করলাম না। এরপর তিনি আবার বললেন, তুমি উসামাকে বিয়ে কর। তখন আমি তার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। আল্লাহ এতে (তার ঘরে) আমাকে বিরাট কল্যাণ দান করলেন। আর আমি ঈর্ষার পাত্রে পরিণত হলাম।(সহীহ মুসলিম-১৪৮০)

আল্লামা সা’দী রাহ বলেন,
" فإن حصل مع الدين غيرُه فذاك ، وإلا فالدين أعظم الصفات المقصودة " انتهى.
" بهجة قلوب الأبرار وقرة عيون الأخيار في شرح جوامع الأخبار " (ص/120)
যদি দ্বীনদারিতার সাথে অন্যান্য গুণাবলী থাকে, তাহলে সেটা কতইনা উত্তম। নতুবা দ্বীনদারিতাই সর্বোত্তম গুণ।


আমরা জানি যে, অর্থ, বংশ এবং সৌন্দর্য এইসব গুণাবলী সাধারণত মানুষের কাম্য ও কাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকে , এবং সাধারণত এগুলো দেখেই লোকজন বিয়ে করে থাকে। মুসলিম অমুসলিম সবার কাছেই এটা একটা সাধারণ ব্যাপার মাত্র। এগুলো মূলত মানুষের স্বভাগত ও অভ্যাসগত বিষয়।মূলত এই সব বিষয়ের সাথে শরীয়তের কোনো সংঘর্ষ ছিলনা, কিন্তু মানুষের অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে গেল যে, মানুষ বিয়ের মুল উদ্দেশ্যটাকেই ভূলে যেতে আরম্ভ করলো, এবং সর্বোত্তম গুণকে সম্পূর্ণরূপে ভুলে যেতে শুরু করলো, তখন শরীয়ত মানুষদেরকে সতর্ক করার জন্য বলল যেমন,

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী
তুমি দ্বীনদারীকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে (تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)} (সহীহ বুখারী-৪৮০২,সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)


ইমাম নববী (রহঃ) আল-মিনহাজ গ্রন্থে বলেনঃ
" الصحيح في معنى هذا الحديث أن النبي صلى الله عليه وسلم أخبر بما يفعله الناس في العادة فإنهم يقصدون هذه الخصال الأربع ، وآخرها عندهم ذات الدين ، فاظفر أنت أيها المسترشد بذات الدين ، لا أنه أمر بذلك ... وفي هذا الحديث الحث على مصاحبة أهل الدين في كل شيء لأن صاحبهم يستفيد من أخلاقهم وحسن طرائقهم ويأمن المفسدة من جهتهم " اهـ باختصار .
এই হাদীসের সঠিক অর্থ হল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটাই বর্ণনা করছেন, যা সাধারণত লোকজন করে থাকে,  তারা এই চারটি গুণকে দেখেই বিয়র করতো,তারা ধার্মিকতাকে শেষ পর্যায়ে রাখতো।এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন, ধার্মিকতাকে অগ্রাধিকার দাও। কেননা দ্বীনদার মানুষের সাথী সে নিজেও দ্বীনদারিতা অর্জন করে নিতে এক সময় সক্ষম হয়ে যায়।  (অাল-মিনহাজ-১০/৫১-৫২)

ইমাম নববী রাহ আরও বলেন,
লোকেরা সাধারণত বংশ,অর্থ ও সুন্দর্য্য দেখেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়,  তবে একজন দ্বীনদার মানুষের উচিৎ দ্বীনদারিতাকে অগ্রাধিকার দেয়া (রিয়াদুস সালেহিন-৪৫৪)

আব্দুর রহমান মুবারকপুরী রাহ তুহফাতুল আহওয়াজি গ্রন্থে লিখেন,
من عادة الناس أن يرغبوا في النساء ويختاروها لإحدى الخصال واللائق بذوي المروءات وأرباب الديانات أن يكون الدين مطمح نظرهم فيما يأتون ويذرون ، لا سيما فيما يدوم أمره ، ويعظم خطره " اهـ .
وقد اختلف العلماء في معنى قوله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( تربت يداك ) اختلافاً كثيراً ،
কাজী ইয়াজ রাহ বলেন, মানুষের আদত বা অভ্যাস হল, তারা বংশ,অর্থ ও সুন্দর্য্য দেখেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতো, তবে দ্বীনদার মানুষের আগ্রহ ধার্মিকতায় থাকাটাই উচিৎ।

ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেনঃ
" هذه الأربع الخصال هي الْمُرغِّبة في نكاح المرأة ، وهي التي يقصدها الرِّجال من النساء ، فهو خبرٌ عما في الوجود من ذلك ، لا أنه أمرٌ بذلك ، وظاهره إباحة النكاح لقصد مجموع هذه الخصال ، أو لواحدة منها ، لكن قصد الدِّين أولى وأهم " انتهى.
" المفهم لما أشكل من تلخيص صحيح مسلم " (4/215)
এই চারটি গুণাগুণ সাধারণ বিয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা হয়ে থাকে, এটাই দুনিয়ার বাস্তবতা।হাদীসে এই চারটি গুণ দেখে বিয়ের কথা বলা হচ্ছে না, বরং মানুষদের অবস্থা বর্ণনা করা হচ্ছে। হাদীসের ভাষ্য দ্বারা বুঝা যায় যে, এই চারটি গুণে গুণান্বিত কাউকে বিয়ে করা বা একটি এর মধ্য থেকে একটি গুণে গুণানিত্ব কাউকে বিয়ে করা উভয়টিই জায়েয। তবে ধার্মিকতাকে দেখে বিয়ে করাটাই উত্তম ও উচিৎ।


ইবনে হাজার রাহ ফাতহুল বারী(৯/১৩৫-১৩৬) গ্রন্থে লিখেন,
" ويؤخذ منه – أي من هذا الحديث - أن الشريف النسيب يستحب له أن يتزوج نسيبة ، إلا إن تعارض : نسيبة غير دينة ، وغير نسيبة دينة ، فتقدم ذات الدين ، وهكذا في كل الصفات .
উচ্ছ মর্যাদাশালী বংশের কারো জন্য তার সমপর্যায়ের কাউকে বিয়ে করা মুস্তাহাব, তবে যদি উচ্ছ মর্যাদাশালী বংশের হওয়ার পাশাপাশি কেউ দ্বীনদার না হয়, তাহলে দ্বীনদার - চায় বংশ মর্যাদা তেমন নাই হউক- তাকেই বিয়ে করা মুস্তাহাব।
قوله : ( وجمالها ) يؤخذ منه استحباب تزوج الجميلة ، إلا إن تعارض : الجميلة الغير دينة ، والغير جميلة الديِّنَة ، نعم لو تساوتا في الدين فالجميلة أولى ، ويلتحق بالحسنة الذات الحسنة الصفات ، ومن ذلك أن تكون خفيفة الصداق .
সুন্দর দ্বীনদার কাউকে বিয়ে করাই মুস্তাহাব। তবে যদি সুন্দর বেদ্বীন হয়, তাহলে তখন দ্বীনদার - চায় সুন্দর হোক বা না হোক- তাকেই বিয়ে করা মুস্তাহাব। যদি দু'জন পাত্রী দ্বীনদার হয়, এর মধ্য থেকে একজন সুন্দর ও অন্যজন তেমন সুন্দর না হয়, তাহলে তখন দ্বীনদার সুন্দরকে বিয়ে করাই মুস্তাহাব। সুন্দর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, ব্যক্তিত্ব ও গুণাগুণের সুন্দর্য্য এবং যার মহর কম হয়।
قوله : ( فاظفر بذات الدين ) في حديث جابر : ( فعليك بذات الدين ) والمعنى : أن اللائق بذي الدين والمروءة أن يكون الدين مطمح نظره في كل شيء ، لا سيما فيما تطول صحبته ، فأمره النبي صلى الله عليه وسلم بتحصيل صاحبة الدين الذي هو غاية البغية ، وقد وقع في حديث عبد الله بن عمرو عند ابن ماجة رفعه [ وفيه ضعف ] : ( لا تزوجوا النساء لحسنهن ، فعسى حسنهن أن يرديهن - أي يهلكهن - ، ولا تزوجوهن لأموالهن : فعسى أموالهن أن تطغيهن ، ولكن تزوجوهن على الدين ، ولأمة سوداء ذات دين أفضل ) " انتهى باختصار. 
দ্বীনদার কাউকে বিয়ে করাই উত্তম ও উচিৎ। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় দ্বীনদার কাউকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাঁচাই করাই উত্তম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম' দ্বীনদার কাউকে বিয়ে করতে পরামর্শ দিয়েছেন, ইবনে মাজা কিতাবে একটি হাদীস বর্ণিত রয়ে -যার ক্রমিক নং১৮৫৯ (এই হাদীসের সনদে দুর্বলতা রয়েছে)
আবদুল্লাহ্ ইবনু ’আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَزَوَّجُوا النِّسَاءَ لِحُسْنِهِنَّ فَعَسَى حُسْنُهُنَّ أَنْ يُرْدِيَهُنَّ وَلَا تَزَوَّجُوهُنَّ لِأَمْوَالِهِنَّ فَعَسَى أَمْوَالُهُنَّ أَنْ تُطْغِيَهُنَّ وَلَكِنْ تَزَوَّجُوهُنَّ عَلَى الدِّينِ وَلَأَمَةٌ خَرْمَاءُ سَوْدَاءُ ذَاتُ دِينٍ أَفْضَلُ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা শুধু রূপ-সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মহিলাদের বিবাহ করো না। এ রূপ-সৌন্দর্য হয়তো তাদের ধ্বংসের কারণও হতে পারে। হয়তো এ সম্পদই তাদের অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার কারণ হতে পারে। অতএব ধর্মপরায়ণতা বিবেচনায় তোমরা তাদের বিবাহ করো। চ্যাপ্টা নাকবিশিষ্ট কুৎসিৎ দাসীও অধিক উত্তম যদি সে হয় ধর্মপরায়ণা।ফাতহুল বারী(৯/১৩৫-১৩৬)


হাম্বলী মাযহাবের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
" ويسن أيضا تخير الجميلة للخبر – يعني الحديث السابق – " انتهى. (" شرح منتهى الإرادات " (2/623)
দ্বীনদারদের মধ্য থেকে সুন্দর্য্য দেখে পাত্র/পাত্রী নির্বাচন করা সুন্নত।



সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দ্বীনদারিতার পাশাপাশি সুন্দরী পাত্রী চাওয়া এবং দ্বীনদার পাত্রের পাশাপাশি আর্থিকভাবে সচ্ছল পাত্র চাওয়া নিন্দনীয় নয়। 

(১)গায়ের রং, আর্থিক সচ্ছলতা দিয়ে শ্রেষ্ঠ-নিকৃষ্টের পার্থক্য করেনি ইসলাম।এগুলো কখনো ভালো খারাপ বিচার করতেও পারে না। এজন্য সর্বাবস্থায় দ্বীনদার কাউ নির্বাচন করাই সর্বোত্তম।তবে দ্বীনদারের পাশাপাশি সুন্দর,অার্থিক সচ্ছলতা, উচ্ছ বংশ মর্যাদা ইত্যাদি গুণাবলীকে সামনে রাখা নাজায়েয বা নিন্দনীয়  হবে না।

(২)কোন পাত্র যদি দ্বীনদারির পাশাপাশি অনেক সুন্দর পাত্রীর চাহিদা রাখে তাহলে তার দ্বীনদারিতায় সমস্যা আছে, একথা বলা যাবে না। অথবা কোন পাত্রী যদি বিত্তশালী কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চায়, সেক্ষেত্রেও তার দ্বীনদারিতায় ঘাটতি রয়েছে,সেটাও বলা যাবে না।তবে সর্বোত্তম হল, দ্বীনদারিতাকে প্রদাণ গন্তব্য রাখা।

(৩) এই সমস্ত কমেন্ট থেকে বিরত ধাকাই একজন মু'মিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...