জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। আমরা এভাবেও বলতে পারি যে, পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.
অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০
মানসিকতা ও স্বভাবের উপরও নামের একটা প্রভাব থাকে।
أَخْبَرَنِي عَبْدُ الحَمِيدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ، قَالَ: جَلَسْتُ إِلَى سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، فَحَدّثَنِي: أَنّ جَدّهُ حَزْنًا قَدِمَ عَلَى النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَقَالَ: مَا اسْمُكَ؟ قَالَ: اسْمِي حَزْنٌ، قَالَ: بَلْ أَنْتَ سَهْلٌ. قَالَ: مَا أَنَا بِمُغَيِّرٍ اسْمًا سَمّانِيهِ أَبِي قَالَ ابْنُ المُسَيِّبِ: فَمَا زَالَتْ فِينَا الحُزُونَةُ بَعْدُ.
আবদুল হুমাইদ বিন শায়বা বলেন, আমি হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিবের কাছে বসা ছিলাম। তিনি তখন বললেন, আমার দাদা ‘হাযান’ একবার নবীজীর দরবারে উপস্থিত হলেন। নবীজী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? দাদা বললেন, আমার নাম হাযান। (হাযান অর্থ শক্তভূমি) নবীজী বললেন- না, তুমি হচ্ছ ‘সাহল’ (অর্থাৎ তোমার নাম হাযানের পরিবর্তে সাহল রাখো; সাহল অর্থ, নরম জমিন।) দাদা বললেন, আমার বাবা আমার যে নাম রেখেছেন আমি তা পরিবর্তন করব না। সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেন, এর ফল এই হল যে, এরপর থেকে আমাদের বংশের লোকদের মেযাজে রুঢ়তা ও কর্কশভাব রয়ে গেল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৯৩
সুন্দর নাম রাখার গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হল, হাশরের ময়দানে- সেখানে পূর্বাপর সকল মানুষ একত্রিত হবে এবং ব্যক্তিকে তার নাম ও তার বাবার নামসহ ডাকা হবে।
হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.
কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮
,
★শরীয়তের বিধান মতে শিরকি কোনো নাম রাখা জায়েজ নেই,মূর্তি ইত্যাদির নামে নাম রাখাও জায়েজ নেই।
উইকিপিডিয়া তে সার্চ করে ঈশান নামের ব্যাপারে বিস্তারিত যে তথ্য পেয়েছি,তার তুলে ধরা হলোঃ
,
ঈশান শব্দ হিন্দু, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মে ঈশ্বর বা কোনো দেবতাকে বোঝায়। ঈশান একটি জনপ্রিয় নাম। এই নামের উল্লেখ শিব পুরাণে আছে, এবং এটি বিষ্ণুর এটি নামও হয়
,
ঈশান হিন্দু ভগবান শিবের এক নাম। শিব হিন্দু ত্রিমূর্তি (ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব)এর অন্যতম। এর মূল "ঈশ", যার অর্থ জগতকে শাসন করা অদৃশ্য শক্তি। ঈশান ও ঈশ্বর একার্থক।
ঈশান শব্দের অর্থ 'অনেক', এবং 'উত্তর-পূর্ব' দিকও হয়। বাস্তু শাস্ত্রের মমতে ঈশান্য দিকের অর্থ সমৃদ্ধি, ঐশ্বর্য্য ও জ্ঞান। হিন্দু ধর্মে উত্তর দিকে সুখ এবং পূর্ব দিকে জ্ঞান বোঝায়। ঈশান দুই-য়েরই মিলন।
,
শিবের পাঁচটা রূপ আছে। প্রতিটি রূপে পঞ্চতত্ত্ব-- অগ্নি, জল, বায়ু, পৃথিবী, আকাশ, এক একটিকে বোঝায়। ঈশান — শিবের পঞ্চম রূপ, যা উপর দিকে চেয়ে থাকে এবং পঞ্চতত্ত্বের 'আকাশ' বোঝায়।
,
জাপানী বৌদ্ধ বিশ্বাস অনুযায়ী, ১২ জন দেবতা ১২ দিক বোঝায়। সংস্কৃত ভাষাতে 'দেব' শব্দের অর্থ দেবতা বা স্বর্গে থাকা লোক। জাপানী ভাষায় তাদেরকে 'টেন' বলা হয় যা 'দেব'-এর সাথে সমার্থক। ১২ দিকে উত্তর (বিশামন্তেন/বৈশ্রায়ন), দক্ষিণ (এন্মাতেন/যম), পূর্ব (টিয়াশাকুটেন/ইন্দ্র), পশ্চিম (শুইটেন/বরুণ), উত্তর পূর্ব (ঈশানাটেন/ঈশান), উত্তর-পশ্চিম (ফুটেন/বায়ু), দক্ষিণ পূর্ব (কাটেন/অগ্নি), দক্ষিণ পশ্চিম (রাচাৎসুুটেন/রাক্সস), ওপরে (বন্টেন/ব্রহ্মা), তলায় (জিতেন/পৃথিবী), চন্দ্র (ঘাটেন/চন্দ্র) এবং সূর্য (নিটেন/আদিত্য) বোঝায়। 'দেব'গণ হিন্দু বিশ্বাস থেকে নেওয়া, এবং চীনা ও জাপানী রূপে সাজিয়ে নেওয়া। ঈশান তারই অন্যতম। ঈশান উত্তর-পূর্ব দিকের রক্ষক।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ঈশান নাম রাখা জায়েজ নেই।
,
আরো জানুনঃ