আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
165 views
in সালাত(Prayer) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহ শায়েখ,

১/ আমি একটা হাসপাতালে নামাজের জন্য একটা ছোট কামরায় ঢুকি।কিন্তু ক্বিবলা কোন দিকে সেটা বুঝতে পারছিলাম না।একজন ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করার পর, তার দেখিয়ে দেওয়া দিক ক্বিবলা ধরে স্বলাত আদায় করি।পরে মাগরিব ওয়াক্তে গেলে ৩ জন মহিলাকে দেখি অন্য দিকে ক্বিবলা ধরে স্বলাত পড়ছে।পরে আমি মাগরিব তাঁদের দেখানুসারে আদায় করি।আমার আসর স্বলাত কি কাযা আদায় করতে হবে?

২/ ডেঙ্গু হলে আমি ৩ দিনের কম( শুক্রবার থেকে রবিবার যোহর )পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।আমার ডান হাতে ক্যানোলা করা ছিল। আমি স্বলাতের ওয়াক্তে বাম হাতে ওজু করতাম আর বাম হাত ভিজিয়ে ডান হাত মুছে দিতাম।ক্যানোলা করার জায়গা ভেজাতে পারতাম না।এই সময়ের স্বলাত আমাকে কাযা আদায় করতে হবে?

৩/ আসরের স্বলাত আদায়ের পর অন্য দিনের কাযা আসরের স্বলাত আদায় করা যাবে?

৪/ যেহেতু আমার ডেঙ্গু হয়েছিল,আমার দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত আসত। হাসপাতালে এবং বাসায় থাকতে ওজু করার পর দেখা যেত থুথুর সাথে রক্ত এসেথুথু লাল হয়ে যেত।এমন আসতেই থাকত।আবার দাঁতে সমস্যার জন্যও এমন ওজুর পর থুথুর সাথে রক্ত দেখা যেত( এখন এমন হয় না)।তখনকার ওজু কি হয়নি?

৫/ যে ইচ্ছাকৃত স্বলাত ছেড়ে দেয় ,জীবনে শুধু জুম্মার স্বলাত আদায় করে।তার মৃত্যুর পর কি তার জন্য দুআ,সাদাকাহ করা যাবে না? বা করলেও তার কোন উপকারে আসবে না?

আফওয়ান অনেক প্রশ্ন করে ফেলেছি.

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায সহীহ হবার জন্য শর্ত। কিবলামুখী না হলে নামায শুদ্ধই হবে না। 

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ     

قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ [٢:١٤٤] 

নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}

وإن اشتبہت علیہ القبلة ولیس بحضرتہ من یسألہ عنہا اجتہد وصلی فإن علم أنہ اخ۔أ بعد ما صلی لا یعیدہا (الہندیة: ۱/۶۴)

সারমর্মঃ তার কাছে যদি জেনে নেওয়ার মতো কেউ না থাকে,তাহলে ইজতিহাদ করে নামাজ পড়বে,পরবর্তীতে এই নামাজ আর পড়তে হবেনা।

  

من أخطأ جهة القبلة صحيحة لا تلزمه إعادتها إن اجتهد فأداه اجتهاده إلى تلك الجهة. وأما إن صلى بغير اجتهاد أو أمكنه السؤال عن جهة القبلة فلم يفعل فعليه الإعادة. جاء في الاختيار قال : وإن اشتبهت عليه القبلة وليس له من يسأل اجتهد وصلى، ولا يعيد وإن أخطأ. لما روي أن جماعة من الصحابة اشتبهت عليهم القبلة في ليلة مظلمة، فصلى كل واحد منهم إلى جهة وخط بين يديه خطا، فلما أصبحوا وجدوا الخطوط إلى غير القبلة، فأخبروا بذلك رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال : تمت صلاتكم . وفي رواية : لا إعادة عليكم

সারমর্মঃ ইজতিহাদচিন্তা ফিকির করে কিবলার দিক ধরে নিয়ে নামাজ নামাজ আদায়ের পর যদি সেই দিক ভূল হয়ে থাকে,তাহলে পরবর্তীতে এই নামাজ আর পড়তে হবেনা।

,

তবে যদি ইজতিহাদচিন্তা ফিকির করা ছাড়াঅথবা কাহারো থেকে জেনে নেওয়া সম্ভবপর হওয়া সত্ত্বেও না জেনে নিয়ে নামাজ পড়েতাহলে (ভুল হলে) সেই নামাজ পরবর্তীতে আবার আদায় করতে হবে।


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার আসর স্বলাত কাযা আদায় করতে হবেনা।

(০২)
ক্যানোলা করার জায়গা ভেজাতে না পারলেও তার উপর দিয়ে মাসাহ করে নেয়া উচিত ছিলো। তবে এক্ষেত্রে যদি তার উপর দিয়ে ভেজা হাত দিয়ে মাসাহ করা ক্ষতিকর হতো,সেক্ষেত্রে এই সময়ের স্বলাত আপনাকে কাযা আদায় করতে হবেনা।

আর যদি তার উপর দিয়ে ভেজা হাত দিয়ে মাসাহ করা ক্ষতিকর না হতো,সেক্ষেত্রে এই সময়ের স্বলাত আপনাকে কাযা আদায় করতে হবে।

(০৩)
হ্যাঁ, আসরের স্বলাত আদায়ের পর অন্য দিনের আসরের স্বলাত এর কাজা আদায় করা যাবে।

(০৪)
এক্ষেত্রে এটি কি আপনার পুরো ওয়াক্ত জুড়েই চলতো?
যদি পুরো ওয়াক্ত জুড়েই চলে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি তখন মা'যুর ছিলেন।

সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ওয়াক্তে আপনাকে একবার অযু করা লাগতো।
তখনকার অযু আপনার হয়েছে। 

আর যদি এটি আপনার পুরো ওয়াক্ত জুড়েই না চলতো,সেক্ষেত্রে তখনকার অযু হয়নি।

(০৫)
হ্যাঁ, সেও মুসলমান। 
তাই তার মৃত্যুর পর তার জন্য দুআ,সাদাকাহ করা যাবে।
করলে তার উপকারে আসবে।

(এক্ষেত্রে তার ওয়ারিশদের জন্য করনীয় হলো তার তার জীবনের অনাদায়ী প্রত্যেকটি নামাজের জন্য একটি করে ফিদইয়াহ দেয়া।

উল্লেখ্য, এখানে মাইয়্যিত যেহেতু তার নামাজ গুলোর ফিদইয়াহ আদায়ের ওসিয়ত করে যায়নি,তাই এক্ষেত্রে ফিদইয়াহ আদায় ওয়ারিশদের উপর ওয়াজিব নয়।) 

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 373 views
0 votes
1 answer 257 views
...