আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
871 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমি শোনেছি যে যিনা করা অবস্থায় ঈমান তাঁর থেকে ছিন্ন হয়ে আসমানে ঝুলতে থাকে। এখন কোন যুবক যুবতি যদি একা একা কথা বলে কিংবা চলাফেরা করে বা মেসেজিং করে তাহলে কি তাঁর উপরও এমন হবে? যেহেতু আমি শুনেছি এসব কাজও যিনার অন্তরভুক্ত ।

1 Answer

–1 vote
by (707,920 points)
বিসমিহি তা'আলা

প্রশ্নে বর্ণিত হাদীসের মূল পাঠ নিম্নরূপ..........
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «لَا يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَا يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَا يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَا يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيهَا أَبْصَارَهُمْ حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَايَغُلُّ أَحَدُكُمْ حِينَ يَغُلُّ وَهُوَ مُؤْمِنٌ ; فَإِيَّاكُمْ إِيَّاكُمْ» ". مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সা বলেন,কামিল ইমানদ্বার কখনো যিনা-ব্যভিচার করতে পারে না।এবং কামিল ঈমানদ্বার কখনো চুরি করতে পারে না,মদ খেতে পারে না ডাকাতি করতে পারেনা,খেয়ানত করতে পারেনা।সুতরাং হে ঈমানদ্বার গণ ঈমানকে মজবুত করো।এবং এই সমস্ত পাপাচার থেকে বেঁচে থাকো।

সহীহ বুখারী-২৪৭৫

সহীহ মুসলিম-৫৭

মিরকাত-৫৩

মোল্লা আলী কারী রাহ, উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,

وَظَاهِرُهُ دَلِيلٌ عَلَى أَنَّ صَاحِبَ الْكَبِيرَةِ لَيْسَ بِمُؤْمِنٍ، وَأَصْحَابُنَا أَوَّلُوهُ بِأَنَّ الْمُرَادَ الْمُؤْمِنُ الْكَامِلُ فِي إِيمَانِهِ، أَوْ ذُو أَمْنٍ مِنْ عَذَابِ اللَّهِ تَعَالَى، أَوِ الْمُرَادُ الْمُؤْمِنُ الْمُطِيعُ لِلَّهِ،يُقَالُ: أَمِنَ لَهُ، إِذَا انْقَادَ وَأَطَاعَ، أَوْ مَعْنَاهُ الزَّجْرُ وَالْوَعِيدُ، أَوِ الْإِنْذَارُ لِمُرْتَكِبِ هَذِهِ الْكَبَائِرِ بِسُوءِ الْعَاقِبَةِ، إِذْ مُرْتَكِبُهَا لَا يُؤْمَنُ عَلَيْهِ أَنْ يَقَعَ فِي الْكُفْرِ الَّذِي هُوَ ضِدُّ الْإِيمَانِ، أَوْ أَنَّ الْإِيمَانَ إِذَا زَنَى الرَّجُلُ خَرَجَ مِنْهُ، وَكَانَ فَوْقَ رَأْسِهِ مِثْلَ الظُّلَّةِ، فَإِذَا انْقَلَعَ رَجَعَ إِلَيْهِ، وَسَيَأْتِي تَقْرِيرُهُ.

ভাবার্থঃ

উক্ত হাদীসের বাহ্যিক ইবারত দ্বারা বুঝা যায় যে,করিবা গোনাহ সংগঠনকারী ব্যক্তির ঈমান থাকবে না।

আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসারী উলামায়ে কেরাম,নিম্নোক্ত ব্যখ্যা করেন-

(১)কামিল ঈমানদ্বারগণ কখনো এ সব পাপচার করবে না।

(২)এ সব পাপাচার কারী কখনো আল্লাহ আযাব থেকে নিরাপদ নয়।

(৩)আল্লাহ অনুসরণকারী ঈমানদ্বারগণ কখনো এ সব পাপাচার করতে পারে না।

(৪)এ সব পাপচারে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গকে ভয় দেখানো হচ্ছে।কেননা এসব পাপাচার শেষ পর্যন্ত কুফুরের দিকে নিয়ে যায়।

(৫)এ সব পাপাচারের সময় ঈমান বের হয়ে মাথার উপর ছায়া হিসেবে থাকে।যখন পাপাচার থেকে বিরত হয় তখন আবার ঈমান ফিরে আসে।

মিরকাত-৫৩ নং হাদীসের ব্যখ্যা দ্রষ্টব্য।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন

তিরমিযি শরীফের ব্যাখ্যাকার আব্দুর রহমান মুবারকপুরী রাহ বলেন,

وَلَا يَلْزَمُ مِنْ ذَلِكَ كُفْرُهُ بِإِجْمَاعِ الْمُسْلِمِينَ

মুসলমানদের ইজমা রয়েছে যে,এ সমস্ত পাপাচার করলে কেউ কাফির হবে না।

তুহফাতুল আহওয়াযি- ৩২০৯ নং হাদিসের ব্যখ্যা দ্রষ্টব্য।

ইমাম নববী রাহ বলেন,

 هَذَا الْحَدِيثُ مِمَّا اخْتَلَفَ الْعُلَمَاءُ فِي مَعْنَاهُ فَالْقَوْلُ الصَّحِيحُ الَّذِي قَالَهُ الْمُحَقِّقُونَ أَنَّ مَعْنَاهُ لَايَفْعَلُ هَذِهِ الْمَعَاصِي وَهُوَ كَامِلُ الْإِيمَانِ وَهَذَا مِنَ الْأَلْفَاظِ الَّتِي تُطْلَقُ عَلَى نَفْيِ الشَّيْءِ وَيُرَادُ نَفْيُ كَمَالِهِ وَمُخْتَارِهِ

এই হাদীসের ব্যখ্যা সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের মতপার্থক্য রয়েছে।বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য ব্যখ্যা হলো,

'মু'মিনি গণ তথা যারা পরিপূর্ণ ঈমানদ্বার,তারা এই সমস্ত পাপাচারে লিপ্ত হতে পারে না।

এগুলো আরবী এমন বাগধারা যা উল্লেখ করে পরিপূর্ণতার অর্থকেই উদ্দেশ্য নেয়া হয়।

অাল-মিনহায,হাদীস নং ৫৭ খন্ড-২/৪১ দ্রষ্টব্য।
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

এখানে যিনা-ব্যভিচার, চুরি ইত্যাদি দ্বারা সকল প্রকার যিনা-ব্যভিচার এবং চুরিই উদ্দেশ্য।

সুতরাং

অর্থ হবে এমন যে,

কোনো কামিল ঈমানদ্বার কখনো এমন পাপাচার করতে পারে না।

যিনার অনেক প্রকার রয়েছে যেমন চোখের যিনা,মুখের যিনা ইত্যাদি।এগুলো সবই হারাম।তবে মূল যিনার যে গোনাহ বা শাস্তি হবে, এগুলোর তেমন হবে না।কিন্তু হবে যে নিশ্চিত।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে

মুফতী ইমদাদুল হক

ইফতা বিভাগ, IOM.


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...