আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
250 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (47 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। হযরত আপনার কাছে কয়েকটি প্রশ্ন।

১। একজন স্ত্রী চাকরি (প্রাইমারি স্কুলে) করলে কিভাবে তার সন্তান এবং স্বামীর হক আদায় করবে? চাকরি করতে গিয়ে সে তার প্রধান শিক্ষক (পুরুষ) এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার (পুরুষ) এর সাথে কথা বলতে হয়। যখন তার স্বামী তাকে বলে তুমি কথা বলো তোমার গুনাহ হয় । তখন সে তার স্বামীকে উত্তর দেয় প্রয়োজনে কথা বলা জায়েজ। স্বামী চায় না তার স্ত্রী চাকরি করুক। কিন্তু স্ত্রী বলে তার ফ্যামিলির মা, ভাই-বোন চাকরি ছাড়তে দিবে না। এমত অবস্থায় কি তার গুনাহ হবে? তার কোন জবাবদিহি আছে আল্লাহর কাছে?

২। স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতেই থাকাকে প্রাধান্য দেয়। স্ত্রীর চাকরির সুবাদে বাবার বাড়িতেই থাকা হয় স্ত্রীর।  স্বামীও চাকরি করে অন্য স্থানে। স্বামী ছুটি আসলে যখন তার স্ত্রীকে স্বামীর বাড়িতে যেতে বলে তখন সে ঝগড়া করে যেতে চায়না । অনেক কিছু বলার (ঝগড়া, তর্ক) পরে স্বামীর বাড়ি যায়। এই কাজ কি সঠিক?

৩। একজন স্বামী শ্বশুরবাড়িতে কতদিন যাবত একটা না থাকতে পারবে? যদিও স্বামীর তিনদিনের বেশি থাকার ইচ্ছা নাই, থাকতে চায় না। স্ত্রী চায় অনেক দিন থাকুক। করণীয় কি?

৪। স্বামী চায় স্ত্রী পরিপূর্ণ পর্দা করুক। কিন্তু স্ত্রী মাঝে মধ্যে পর পুরুষের সাথে কথা বলে। তখন স্বামী বলে তার কন্ঠের পর্দা হয় না। স্ত্রী আলিয়া মাদ্রাসায় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। সে বলে প্রয়োজনে কথা বলা জায়েজ, তখন স্বামী বলে একজন মেয়ের অভিভাবক বাবা, বাবা না থাকলে ভাই, বিয়ের পর স্বামী এবং ছেলে এই চারজন এর যে কোন একজন বেঁচে থাকলে কোন মহিলার কি প্রয়োজন থাকতে পারে পর পুরুষের সাথে কথা বলার ? স্বামী বলে দিয়েছে স্ত্রীর তার প্রয়োজন সবকিছু যেন তার স্বামীকে বলে স্বামী ব্যবস্থা করে দিবে। তারপরও সে মানতে চায় না। এটা কি জায়েজ?

হযরত এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই, দয়াকরে উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ-

“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠেও তাকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)

ইফকের ঘটনায় মা আয়েশা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট তার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি চাওয়ার হাদিস:
তিনি বলেন:
أتأذن لي أن آتي أبوي

“(হে আল্লাহর রাসূল,) আপনি কি আমাকে আমার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন?” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)

لا يجوز للمرأة الخروج من بيت زوجها إلا بإذنه ، لا لوالديها ولا لغيرهم ؛ لأن ذلك من حقوقه عليها ، إلا إذا كان هناك مسوغ شرعي يضطرها للخروج

“কোন মহিলার জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া জায়েয নয়। পিতামাতা বা অন্য কারো নিকট নয়। কারণ এটি তার উপর স্বামীর হক। অবশ্য যদি শরিয়ত সম্মত বিশেষ কোনো কারণ থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।” (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১৯/১৬৫)
 
স্ত্রীর জন্য জরুরি হল, বিশেষ কোনো কাজে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে স্বামীর নিকট অনুমতি নেয়া। স্বামী অনুমতি দিলে পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে এবং নিজেকে ফিতনা থেকে হেফাযতে রেখে স্ত্রী বাইরে যেতে পারে। দূরে কোথাও যাওয়ার দরকার হলে অবশ্যই তার পিতা, ভাই ইত্যাদি মাহরাম পুরুষের সাথে যাবে। কিন্তু স্বামী যদি তাকে যেতে নিষেধ করে তাহলে স্ত্রীর জন্য তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়। অন্যথায় সে স্বামীর ‘অবাধ্য’ হিসেবে গণ্য হবে এবং গুনাহগার হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু স্ত্রীর ভরনপোষণ এর দায়িত্ব তার স্বামীর উপরেই আছে।
আর তার স্বামী নিজেই তাকে চাকুরী করা হতে নিষেধ করছে,সুতরাং এমতাবস্থায় উক্ত মহিলার জন্য চাকুরী করা নাজায়েজ হবে।

(০২)
এক্ষেত্রে স্বামীর হক আনাদায়ের দরুন স্ত্রীর মারাত্মক গুনাহ হবে।
এহেন ব্যবহার কোনো ভাবেই জায়েজ নয়।

(০৩)
উভয় পক্ষের সন্তুষ্টিতে অনেক দিন থাকা জায়েজ আছে। 
তবে মেহমান হিসেবে তিনদিনের বেশি না থাকাই ভালো।

(০৪)
স্ত্রীর এভাবে চাকুরী করাও জায়েজ নয়। 
এভাবে পরপুরুষ এর সাথে কথা বলাও জায়েজ নয়।
,
এখানে স্ত্রী যেটিকে "প্রয়োজনে কথা" হিসেবে সাব্যস্ত করছেন,সেটি প্রশ্নের বিবরণ মতে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...