আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
82 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ,

আমার মনে গত কয়েকমাস যাবত বিভিন্ন প্রকার আজে বাজে চিন্তা আসছে। আমার ওসিডি আছে। এক প্রকার মানসিক রোগ। ডাক্তারের এর পরমর্শে ঔষধ খায়ছি কিছুদিন। তবুও মনের ভিতর আজে বাজে চিন্তা আসা ঠিক হয়নি। তাই পরে আর ডাক্তারের কাছে যাওয়া হয়নি। ডাক্তারের পেসক্রিকশন অনুযায়ী আমার চিন্তার বাতিকগ্রস্থ রোগ আছে। এর জন্য আমার এসব নোংরা চিন্তা ভাবনা এসে থাকতে পারে। যা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। কোন কোন সময় আমার মনে এতটায় বাজে চিন্তা আসে যে, আমি আমার ঈমান নিয়ে সংসয়ে ভুগি। এসব চিন্তা আমি কন্টোল করতে পারি না। তালাকে নিয়ে তিব্র মানসিক সমস্যা ফেস করার জন্য শায়েখেরা আমাকে ওয়াসওয়াসার স্বিকার বলে আখ্যায়িত করে আমার তালাক বা কুফুরি কোনটায় কার্যকর হবে না বলে ফোতোয়া দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ। তারপরেও কিছু প্রশ্ন না করে আমি কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না। আশা করি আপনাদের মূল্যবান সময় আমাকে একটু দিয়ে আমার সহায়তা করবেন। 

কিছু মনে করবেন না শায়েখ। আপনারা সমস্যা নেই বললে একটু শান্তি পায়। না হলে ভয়ে কোন কাজে,বা খেতে মন বসে না। বুকের ভিতর ধড়ফড় করে। 
এগুলা দেখলে বুঝবেন আমি কতটা মানসিক যর্ন্তনায় আছি ও আমার ওয়াসওয়াসা জনিত প্রশ্ন। 

https://ifatwa.info/56343/
https://ifatwa.info/56005/
https://ifatwa.info/55576/
https://ifatwa.info/56429/
https://ifatwa.info/56539/


(১) নামাজের ভিতরে আমার মনে আজে বাজে খেয়াল আসে। নামাজের ভিতর আমার মনে এসেছে যে, আমি যদি বাসে কোথাও যায় আর তখন নামাজের ওয়াক্ত চলে আসে তাহলে তো বাস থামাতে হবে। তখনি আবার মনে চলে এসেছে যে, তাহলে যদি বাসে হিন্দু থাকে ওদের কোন ইবাদতের কিছুতেও তো থামানো উচিত। এখন আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে আমি কি দুই ধর্মকেই সমান গুরুত্ব দিলাম বা হিন্দু ধর্মকে সত্য মনে করলাম? এমন চিন্তা মাথায় চলে আসছে বার বার ।
এতে কি আমার ঈমানের কোন ক্ষতি হবে শায়েখ???

(২) তালাক নিয়ে ওয়াসওয়াসা আছে আমার। সবকিছুতেই তালাক হয়ে গেছে কিনা মনে সন্দেহ হয়। দুপুরে ভাত খায়নি বলে,ওয়াইফ আমাকে বললো, তোমাকে যে কি বলবো। তখন আমি বললাম কি বলবে?? এটা বলার পর মনে হচ্ছে কেনায়া শব্দ হয়ে গেল নাতো? কারন আমার মনে সবসময় তালাক তালাক চলতে থাকে। ওয়াইফ এর সাথে হেসে হেসে কথা বলা বা সাধারন কথা বলার ভিতরেও মনের মাঝে তালাক, তালাক চলতে থাকে। কখনো তালাক মুখ দিয়ে বেরিয়ে যা কিনা ভয় হয়। যদিও আমার ওয়াইফ এই ব্যাপারে কিছুই জানে না। গতকাল পানি খেতে খেতে মনে হলো তালাক শব্দটি উচ্চারন করলাম। খাওয়ার সময় এই সমস্যা বেশি ফেস করি। তালাক শব্দ মনে ভিতর থাকা কালিন মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হলেই আমার মনে হয় তালাক বলে ফেললাম।  তালাক শব্দটি আমি কোন সময় মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারি না। কারো ওয়াইফ কোন অন্যায় করেছে শুনলে মনে হচ্ছে আমি আমার ওয়াইকে তালাক দিয়ে দিচ্ছি মনে মনে। মনে মনে বলছি বাড়ি থেকে বের হ। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি শায়েখ। সব কিছুতেই কেনায়া হয়ে গেছে বলে ভয় হচ্ছে। 

এর ভিতরে আমি কি কোন কেনায়া শব্দ বলে ফেললাম শায়েখ?  

(৩) আমার ছোট মেয়েকে আমি শিখাচ্ছি তোমাকে মাকে বলো। "যা যা এখান থেকে যা। তখনি আমার মনে হচ্ছে, আমি যেন নিজে আমার আমার ওয়াইফকে বলছি । আর আমার মনে তালাক চলে এসেছে। এতে কি তালাক হবে??


(৪) মাঝে মাঝ কোন বিষয়ে নিয়ে রাগ হলে মনে হচ্ছে আমি আল্লাহকে গালিগালাজ করে ফেলবো। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে??


(৫) আমার এক বন্ধু আছে যে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। তার সাথে যখন আমি থাকি তখন নামাজ পড়ি, অনেকটা বাধ্য হয়ে। সে না থাকলে হয়তো ওই সময় নামাজ পড়তাম না। একদিন সে ভোরবেলা নামাজের জন্য ফোন দিল। আমি উঠে নামাজ পড়তে আসলাম এবং যখন ওজু করছি তখন আমি তাকে খুজছিলাম সে যেন জানে যে আমি নামাজে এসেছি। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে??

(৬) হিন্দুদের শিবের মাথায় জল ঢালার দৃশ্য দেখার পর আমার মনে হল,এসব লাথি মেরে ভেংগে ফেলা উচিত। ঠিক তখনি আমার মাথায় আসলো যে, লাথি মারলে আবার আমার পায়ে কিছু হবে নাতো? যদিও আমি ওদের ওসব মানি না। কিন্ত এমন কথা মনে আসার জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে??

(৭) আল্লাহকে নিয়ে অনেক আজে বাজে কথা মনে আসে। ইসলাম নিয়ে আজে বাজে কথা মনে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় আল্লাহ বলে কেউ নেই। এছাড়া আরো অনেক নোংড়া চিন্তা আসে যা বলা বা লেখার মত না। যেটা আমি মানি না সেটাও আমার মনে চলে আসে। মাঝে মাঝে মনে হয় হিন্দু ধর্ম ভাল। যদিও আমি মরে গেলেও হিন্দু ধর্ম গ্রহন করবো না। তারপরেও কেন যেন এসব কথা আমার মনকে সবসময় কষ্ট দিচ্ছে। বিষয়গুলো এতটায় শক্তিশালি মনে হচ্চে আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কি যে মসিবতে আমি দিন পার করছি আমি বুঝাতে পারবো না শায়েখ।

এতে কি আমার ঈমানের কোন সমস্যা হবে শায়েখ?? 

আমি হতাশ। 

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


আপনি নিজ কাজে মগ্ন হয়ে যান। এসব ওয়াসওয়াসা জাতীয় বিষয়ে  মনোযোগ দিবেন না। কেননা, এইসব অবাঞ্ছিত চিন্তাকে গুরুত্ব দিয়ে কীভাবে তা দূর করা যায় এ চিন্তায় পড়ে গেলে আপনি এখানেই আটকা পড়ে যাবেন। সামনে অগ্রসর হওয়া আর সম্ভব হবে না। এভাবে শয়তানের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে।
,
যে কোনো ওয়াসওয়াসার প্রধান চিকিৎসা এটাই যে, একে গুরুত্ব না দেয়া। কী চিন্তা আসল, কী চিন্তা গেল-তা না ভেবে নিজের কাজে মশগুল থাকুন। কেননা, এটা মূলত শয়তানের কাজ। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ الشَّيْطَانِ لِيَحْزُنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيْسَ بِضَارِّهِمْ شَيْئًا إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ

এই ওয়াসওয়াসা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে (এই ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে) সে মুমিনদেরকে চুল পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে না, আল্লাহর হুকুম ছাড়া। মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা। (সূরা মুজাদালাহ ১০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
পরামর্শ থাকবে, দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে যুক্ত হয়ে চিল্লায় যাওয়ার।
আপনার জন্য এহেন চিন্তা মাথায় আসলেই অন্য মনস্ক হয়ে যাওয়া জরুরি জরুরি  ।
এসব চিন্তা আসলেই নিজেকে কোনো কাজে লিপ্ত করে দেয়া।
মাথায় এগুলো আসতেই দিবেননা।
বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 

এসব চিন্তা মাথায় আসলেই আপনি آمنت بالله ورسوله পড়ে নিবেন।
لا حول ولا قوة الا بالله العلي العظيم  পড়বেন। বাম দিকে তিন বার থুথু নিক্ষেপ করতে পারেন।

أعوذ بالله من الشيطان الرجيم পড়বেন।

(০১)
এতে আপনার ঈমানের ক্ষতি হবেনা।

(০২)
না,আপনি কোনো কেনায়া বাক্য বলে ফেলেননি।

(০৩)
এতে তালাক হবেনা।

(০৪)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে কোনোভাবেই মহান আল্লাহ তায়ালাকে গালি দেয়া যাবেনা।

সর্বোচ্চ সতর্কতা কাম্য।

(০৫)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৬)
এমন কথা মনে আসার জন্য আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
মুখ দিয়ে যেহেতু উচ্চারণ করেননি,সুতরাং আপনার ঈমান চলে যায়নি।
তবে তবে ঈমানের জন্য মারাত্মক আকারের কথা গুলিই আপনার মনে এসেছে।
দ্রুত খালেস দিলে তওবা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...