আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
209 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (15 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ,

(১) আজ গোছল করার সময় আনমনা হয়ে পা দিয়ে শানের উপরে লেখার মত করছিলাম। নিচে চোখ যেতেই দেখলাম আরবি হরফ "হা" লিখে ফেলছি আনমনা হয়ে। উদ্দেশ্যহীনভাবে পা ঘষতে ঘসতে লেখা হয়ে গেছে। দেখার পর আমি পানি দিয়ে মুছে ফেললাম। তখনি আমার ভয় লাগা শুরু হয়েছে। আমি বুঝতে পারছি আমি জেনে বুঝে লিখি নি। কিন্তুু আমার মনের ভিতর হচ্ছে আমি জেনে বুঝে লিখেছি। এমন সন্দেহ আমার মনকে কষ্ট দিচ্ছে। এতে কি আমার ঈমান চলে যাওয়া বা গুনাহ হতে পারে শায়েখ ???

(২) আমার মনে অনেক ধরনের আজে বাজে চিন্তা আসে। যা খুবই আপত্তিকর। আল্লাহকে নিয়েও অনেক খারাপ চিন্তা মাথায় আসে যা প্রকাশ করা আমার কাছে অসম্ভব। এমনটা সারাদিনে যে কতবার আসে তার হিসাব নেই। ওয়াসরুমে কমোডে থাকা অবস্থায় মনে চলে আসছে "আল্লাহ আমাকে মাফ করো"। এতে কি আমার গুনাহ হবে?


(৩) আজ মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেংগে গেলে আল্লাহকে নিয়ে একটা খুব খারাপ কথা মনে আসে। ঠিক তখনি আমার নিঃশব্দে মুচকি হাসি চলে আসে। এতে কি আমার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে হুজুর ???

(৪) আমার পরিবারের লোকজন, যেমন আমার মা, আমার মেয়েকে নিয়েও সেক্স রিলেটেড অনেক আজে বাজে চিন্তা চলে আসে। যা অটোমেটিক মনে চলে আসে।
এতে কি আমার গুনাহ হবে শায়েখ ???

(৫) আমি জানি যে আমার প্যান্ট ও শরীল নাপাক হয়ে আছে পেসাব করে টিশু বা পানি ব্যবহার না করার কারনে। আমার এক নামাজি বন্ধুর সাথে থাকার সময় আমি তাকে বললাম যে, আমি কাল ভোর থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়বো ইনসাআল্লাহ। তখন ভাবছিলাম বাসায় যাবার পর গোছল করবো।
বাহির থেকে বাসায় ঢোকার সময় আমার বন্ধু বললো, কাল ফজরে আসবি তো??
আমি জানি যে আমি আসতে পারবো না। কারন আমার শরীল ও প্যান্ট নাপাক হয়ে আছে। তবুও বললাম ইনসাআল্লাহ।
এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ ???

(৬) কিছুদিন আগেও নামাজ পড়ছিলাম। এখন আবার নামাজে অনিয়মিত হয়ে গেছি। আমার এক বন্ধু আমার অফিসে আসলো সে নামাজ পড়ে। তার সাথেই প্রায় সময় থাকি। সে আসাতে আমিও বাধ্য হয়ে তার সাথে নামাজ পড়লাম ২ ওয়াক্ত।আমি জানতাম আমার প্যান্ট নাপাক হয়ে আছে। তারপরেও ও পড়লাম। পরে মাসায়ালা জানলাম যে আমি মারাত্তক গোনাহের কাজ করেছি। আর আমি যদি নামাজকে ঘৃনা করে এভাবে নামাজ পড়ে থাকি তাহলে আমি কাফের হয়ে যাবো। যদিও আমি নামাজের প্রতি ঘৃনা নিয়ে পড়িনি।নামাজ না পড়লে বন্ধু কি ভাববে,  সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে। তাই পড়েছি। এখন ভয় হচ্ছে আমার কি লোক দেখানো ইবাদত হয়ে গেল। আমি কি শিরিক করে ফেললাম। এই ভয় মনের ভিতর  হচ্ছে ।
আমার কি ঈমান ঠিক আছে শায়েখ ?
আমার এটা কি রিয়া বলে গন্য হবে ?

(৭) একটা ভিডিওতে ভগবান নাম শোনার পর আমার মনে চলে আসছে যে,  আল্লাহ ভগবান। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে ??? 

(৮) আল্লাহকে নিয়ে আমার এমন বাজে বাজে কথা মনে আসে যা আমি এখানে লিখতে লজ্জাবোধ করছি। ওয়াসরুমের ভিতর আমার আল্লাহ এবং কোরআনকে নিয়ে অনেক খারাপ কথা মনে আসে যা আমি বলতে পারবো না। অনেক সময় মনে হয় এসব কথা আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে যাবে, এমন আশংকা হচ্ছে আমার।  আশা করি আপনি বুজতে পেরেছেন শায়েখ আমার সমস্যাটা। আমার ওসিডি বা এক প্রকার মানসিক রোগ আছে। যার জন্য এসব চিন্তা ভাবনা এসে থাকতে পারে সম্ভবত। আমি চিন্তার বাতিকগ্রস্ত। নিজের মনের এসব খারাপ চিন্তা আমি কন্টোল করতে পারছি না। এতে কি আমার ঈমান হারানোর কোন ভয় আছে শায়েখ?? 

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 ( رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا )
হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না।(সূরা বাকারা-২৮৬)
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 (وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا)
এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা আহযাব-৫)


রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ، وَالنِّسْيَانَ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অজ্ঞতা ও ভূলভাল কে ক্ষমা করে দিবেন।এবং অপারগতা বশত কৃত গোনাহকেও ক্ষমা করে দিবেন।(সুনানে ইবনে মা'জা,-২০৪৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু আপনি অনিচ্ছাকৃত ভাবে লিখেছেন, তাই গোনাহ হবে না। ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(২)
ওয়াশরুমে মনের মধ্যে আল্লাহ বা যিকির চলে গোনাহ হবে না। হ্যা, মুখ দ্বারা উচ্ছারণ করা যাবে না।

(৩)
তাওবাহ করুন। তাওবাহ করে নিলে আর কোনো সমস্যা হবে না।নেককার লোকের সংস্পর্শ গ্রহণ করুন।

(৪)
অনিচ্ছাকৃত মনের মধ্যে চলে আসলে গোনাহ হবে না।এরকম কি কারো মনের মধ্যে আসে! তা আমাদের জানা ছিলনা।

(৫)
এতেও ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(৬)
এজন্য আল্লাহর কাছে তাওবাহ করুন।এদ্বারা আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(৭)
না, ঈমান যাবে না।তবে যদি হিন্দুদের ভগবান উদ্দেশ্য নিয়ে থাকেন, তাহলে ঈমান থাকবে না।

(৮)
আপনি অটিসি রোগ বা মানষিক রোগে আক্রান্ত।মেডিকেল ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করুন।ইনশা'আল্লাহ, আল্লাহ আপনাকে সুস্থ করে তুলবেন। এই অসুস্থ অবস্থায় আপনার কোনো চিন্তার কারণে ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...