জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী জামাআতের সহিত নামাজ আদায় করার গুরুত্ব অনেক বেশি।
শরয়ী ওযর ব্যাতিত জামাআত ছেড়ে দেওয়া জায়েয নেই।
কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
فَاِذَا اطْمَاْنَنْتُمْ فَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ، اِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتْ عَلَی الْمُؤْمِنِیْنَ كِتٰبًا مَّوْقُوْتًا.
অতঃপর যখন তোমরা নিরাপত্তা বোধ করবে তখন সালাত যথারীতি আদায় করবে। নিশ্চয়ই সালাত নির্ধারিত সময়ে মুমিনদের এক অবশ্যপালনীয় কাজ। -সূরা নিসা (৪) : ১০৩
ফরয নামাযের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য শরীয়তের বিধান হচ্ছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা। কোনো শরয়ী ওযর ব্যতীত মসজিদের জামাত তরক করা জায়েয নেই। কাছাকাছি কোনো মসজিদ না থাকলে চেষ্টা করবে যেন একাকী নামায আদায় করতে না হয়; বরং দু-চার জন মিলে জামাত করে নেবে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-
لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ.
আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক, যার নিফাক স্পষ্ট ছিল অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থদেরকেও দেখতাম, দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তারা নামাযের জন্য চলে আসত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫
হযরত ইবনে মাসউদ রা. আরো বলেন-
إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.
নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হেদায়েতের তরীকাগুলো শিখিয়েছেন। হেদায়েতের এই তরীকাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেখানে আযান হয় সেখানে নামায আদায় করা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এ-ও ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কাল (হাশরের ময়দানে) ‘মুসলিম’ অবস্থায় আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে চায় তার উচিত এই নামাযগুলো মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে আদায় করা।
(مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَلْقَى اللهَ غَدًا مُسْلِمًا، فَلْيُحَافِظْ عَلَى هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ)
তারপর তিনি বলেন-
فَإِنَّ اللهَ شَرَعَ لِنَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّهُنَّ منْ سُنَن الْهُدَى، وَلَوْ أَنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ كَمَا يُصَلِّي هَذَا الْمُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ، لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ، وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَضَلَلْتُمْ.
কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়েতের পথ সুনির্ধারিত করে দিয়েছেন। আর এই নামাযগুলো মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা এই হেদায়েতের পথসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যদি তোমরা ঘরে নামায পড়তে থাক যেভাবে পিছিয়ে থাকা লোক (মুনাফিক) ঘরে নামায আদায় করে তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর নবীর পথ ছেড়ে দিলে তো তোমরা গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৬
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
صَلاَةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.
অর্থাৎ একাকী নামায পড়া অপেক্ষা জামাতে নামায আদায় করা সাতাশ গুণ বেশি ফযীলতপূর্ণ। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৭৫
হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. বর্ণনা করেন-
صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا الصُّبْحَ، فَقَالَ: أَشَاهِدٌ فُلَانٌ، قَالُوا: لَا، قَالَ: أَشَاهِدٌ فُلَانٌ، قَالُوا: لَا، قَالَ: إِنَّ هَاتَيْنِ الصَّلَاتَيْنِ أَثْقَلُ الصَّلَوَاتِ عَلَى الْمُنَافِقِينَ، وَلَوْ تَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لَأَتَيْتُمُوهُمَا، وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الرُّكَبِ وَإِنَّ الصَّفَّ الْأَوَّلَ عَلَى مِثْلِ صَفِّ الْمَلَائِكَةِ وَلَوْ عَلِمْتُمْ مَا فَضِيلَتُهُ لَابْتَدَرْتُمُوهُ، وَإِنَّ صَلَاةَ الرَّجُلِ مَعَ الرَّجُلِ أَزْكَى مِنْ صَلَاتِهِ وَحْدَهُ، وَصَلَاتُهُ مَعَ الرَّجُلَيْنِ أَزْكَى مِنْ صَلَاتِهِ مَعَ الرَّجُلِ، وَمَا كَثُرَ فَهُوَ أَحَبُّ إِلَى اللهِ تَعَالَى.
একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে ফজরের নামায পড়ালেন। অতঃপর বললেন, অমুক কি এসেছে? সাহাবীগণ বললেন, না। জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি এসেছে? সাহাবীগণ বললেন, না। নবীজী বললেন, নিঃসন্দেহে ফজর এবং ইশা এই দুই নামায মুনাফিকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। যদি তোমরা জানতে এতে কী (পুণ্য ও কল্যাণ) রয়েছে তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এর জামাতে উপস্থিত হতে।
আর প্রথম কাতার ফিরিশতাদের কাতারের মর্যাদাতুল্য। যদি এর ফযীলতের ব্যাপারে তোমরা জানতে তাহলে তাতে জায়গা গ্রহণের জন্য আগেভাগে চলে আসতে।
একাকী নামায পড়া অপেক্ষা দুই ব্যক্তির নামায অধিক উত্তম (পুণ্য ও ফযীলতের কারণ)। দুই ব্যক্তি অপেক্ষা তিন ব্যক্তির নামায অধিক উত্তম। জামাতে উপস্থিতির সংখ্যা যত বাড়তে থাকে আল্লাহ তাআলার নিকট তা তত প্রিয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫৫৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৮৪৩
অনেক সহীহ হাদীসে এই ফযীলতও এসেছে যে, কোনো ব্যক্তি যদি ঘর থেকে উত্তমরূপে ওযু করে মসজিদের উদ্দেশে রওয়ানা হয় তাহলে প্রত্যেক কদমে তার একটি মরতবা বুলন্দ হয় এবং একটি গুনাহ মাফ হয়। মসজিদে প্রবেশ করার পর যতক্ষণ সে নামাযের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ তা নামাযে গণ্য হতে থাকে। আর নামায শেষ করার পর যতক্ষণ সে ওযু অবস্থায় সেই স্থানে বসে থাকে ফিরিশতাগণ তার জন্য দুআ করতে থাকে- আয় আল্লাহ! আপনি তাকে মাফ করে দিন। আয় আল্লাহ! আপনি তার উপর রহম করুন। আয় আল্লাহ! আপনি তার তওবা কবুল করুন। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৭৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫০৪, ১৫১৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৩৬২৩)
কোনো ওযর ব্যতীত জামাত তরক করা যে কত বড় অন্যায় শুধু এই হাদীস থেকেই তা অনুমিত হতে পারে। সুনানে ইবনে মাজাহ-এ সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. উভয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিম্বরে ইরশাদ করতে শুনেছেন-
لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الْجَمَاعَاتِ، أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ، ثُمَّ لَيَكُونُنَّ مِنَ الْغَافِلِينَ.
অর্থাৎ যারা জামাতে উপস্থিত হচ্ছে না তারা যেন এ কর্ম থেকে অবশ্যই নিবৃত্ত হয়। নতুবা আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর সেঁটে দেবেন। অতঃপর তারা এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে, যারা (দ্বীন ঈমানের ব্যাপারে) উদাসীন। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৭৯৪।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبَّادٍ الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ الأَقْمَرِ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ حَافِظُوا عَلَى هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ فَإِنَّهُنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى وَإِنَّ اللهَ شَرَعَ لِنَبِيِّهِ صلي الله عليه وسلم سُنَنَ الْهُدَى وَلَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنْهَا إِلَّا مُنَافِقٌ بَيِّنُ النِّفَاقِ وَلَقَدْ رَأَيْتُنَا وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيُهَادَى بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ حَتَّى يُقَامَ فِي الصَّفِّ وَمَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَلَهُ مَسْجِدٌ فِي بَيْتِهِ وَلَوْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ وَتَرَكْتُمْ مَسَاجِدَكُمْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ صلي الله عليه وسلم وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ صلي الله عليه وسلم لَكَفَرْتُمْ .
‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা সঠিকভাবে আযানের সাথে এই পাঁচ ওয়াক্ত সলাতের প্রতি সবিশেষ নযর রাখবে। কেননা এই পাঁচ ওয়াক্ত সলাতই হচ্ছে হিদায়াতের পথ। মহান আল্লাহ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য হিদায়াতের এ পথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমাদের (সাধারণ) ধারণা, স্পষ্ট মুনাফিক ব্যতীত কেউ জামা‘আত থেকে অনুপস্থিত থাকতে পারে না। আমরা তো আমাদের মধ্যে এমন লোকও দেখেছি, যারা (দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে) দু’জনের উপর ভর করে (মাসজিদে) যেত এবং তাকে (সলাতের) কাতারে দাঁড় করিয়ে দেয়া হত। তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার ঘরে তার মাসজিদ (সলাতের স্থান) নেই। তোমরা যদি মাসজিদে আসা বাদ দিয়ে ঘরেই (ফরয) সলাত আদায় কর তাহলে তোমরা তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতকেই বর্জন করলে। আর তোমরা তোমাদের নাবীর সুন্নাত ত্যাগ করলে অবশ্যই কুফরীতে জড়িয়ে পড়বে।
(আবু দাউদ ৫৫৯.মুসলিম)
حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو الْمَلِيحِ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ الأَصَمِّ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ فِتْيَتِي فَيَجْمَعُوا حُزَمًا مِنْ حَطَبٍ ثُمَّ آتِيَ قَوْمًا يُصَلُّونَ فِي بُيُوتِهِمْ لَيْسَتْ بِهِمْ عِلَّةٌ فَأُحَرِّقُهَا عَلَيْهِمْ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ইচ্ছা হয়, আমি আমার যুবকদের লাকড়ির বোঝা জমা করার নির্দেশ দেই, অতঃপর যারা কোন কারণ ছাড়াই নিজ নিজ ঘরে সলাত আদায় করে, সেগুলো দিয়ে তাদের ঘর জ্বালিয়ে দেই।
(আবু দাউদ ৫৪৯.তিরমিজি)
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِالصَّلَاةِ فَتُقَامَ ثُمَّ آمُرَ رَجُلاً فَيُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ثُمَّ أَنْطَلِقَ مَعِي بِرِجَالٍ مَعَهُمْ حُزَمٌ مِنْ حَطَبٍ إِلَى قَوْمٍ لَا يَشْهَدُونَ الصَّلَاةَ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ بِالنَّارِ "
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ইচ্ছা হয়, (লোকদেরকে জামা‘আতে) সলাত আদায়ের নির্দেশ দেই এবং কাউকে লোকদের সলাত আদায় করাবার হুকুম করি, অতঃপর লাকড়ি বহনকারী কিছু লোককে সাথে নিয়ে আমি বেরিয়ে পড়ি। সেগুলো দ্বারা ঐসব লোকের ঘর-বাড়ি আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য যারা জামা‘আতে (সলাত আদায় করতে) উপস্থিত হয়নি।
বুখারী হাঃ ২৪২০), মুসলিম (অধ্যায়ঃ মাসাজিদ, অনুঃ জামা‘আতে সালাতের ফাযীলাত,) আবু দাউদ ৫৪৮)।
মোটর সাইকেল, বা এমন কোনো যানবাহন,যেখানে জামাআতের সময় বলার দ্বারা থামানো হয়,সেক্ষেত্রে সেই যানবাহনে উঠলে জামাআত ছেড়ে দেওয়া জায়েয নেই।
চাই প্রয়োজন ভিত্তিতেই সফর করুক,বা শখের বসে সফর করুক।
আর যদি গাড়িতে উঠে সফরে যায়,
নামাজে সমস্যা হতে পারে এমন সময় গাড়িতে উঠা উচিত নয়, তবে প্রয়োজনে রওনা করতে হলে যেন নামাজ কাযা না হয় এ ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।
বাস থেকে বার বার ওঠানামা কষ্টকর হওয়ার কারণে নামাজ কাজা করা যাবে না; বরং নামাজের সময়গুলোতে বাস থামিয়ে নিচে কোন স্থানে কিয়াম ও রুকু-সিজদার দ্বারা নামায আদায় করবে।
কিন্তু যদি বাস থামানো না যায় কিংবা বাস থেকে নামলে সঙ্গী সাথী ও বাস চলে যাবে এবং পরবর্তীতে সে আর বাসে একা উঠতে পারবে না বা তাকে নেয়া হবে না-এমন আশঙ্কা থাকে; এমতাবস্থায় বাসে নামাজ পড়া জায়েয। এ ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ থাকলে দাঁড়িয়ে নামা্জ পড়ে নিবে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ বসে নামাজ পড়ে, তবে নামাজ হবে না। যদি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে কিছুতে হেলান দিয়ে দাঁড়াবে। কারণ হাত বাঁধা সুন্নত আর দাঁড়ানো ফরজ। তাই ফরজ রক্ষার্থে সুন্নতের ক্ষেত্রে শীথিলতা মার্জনীয়। পক্ষান্তরে দাঁড়ানোর কোনোপ্রকার সুযোগ না থাকলে বসে ইশারা করে নামাজ পড়ে নিবে। এই নামাজ পরে আর দোহরাতে হবেনা।
কিবলামুখি হতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। যদি গাড়ি কিবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায় তবে নামাজে থাকা অবস্থায় কিবলামুখি ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ হয়, সেদিকে ফিরেই নামাজ শেষ করবে। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে এই নামাজ পরে আবার পড়ে নিতে হবে। কিবলামুখি ফিরে নামাজ আদায় করতে পারলে পরে তা আবার আদায় করার প্রয়োজন নেই।
অনুরূপভাবে যদি পানি না থাকে তাহলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ে নিবে। এই নামাজও পরে দোহরাতে হবেনা।
আর যদি তায়াম্মুম করারও সুযোগ না থাকে, তবু ইশারায় নামাজ পড়ে নিবে। অবশ্য পরে এই নামাজের কাযা করতে হবে। (মাআরিফুস সুনান ৩/৩৯৪-৯৬; আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৮৮. ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার ২/১০২,৪৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮,১৪৪)
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে
فى الفتاوى الهندية- ولو ترك تحويل وجهة الى القبلة وهو قادر عليه لا يجزيه (الفتاوى الهندية –كتاب الصلاة ،الباب الخمس العشر فى صلاة المسافر-1/144)
যার সারমর্ম হলো যদি কিবলার দিক হয়ে নামাজ পড়া সম্ভবপর হওয়া সত্ত্বেও কিবলার দিক না হয়,তাহলে নামাজ হবেনা।
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শখের বসে সফর হলে অবশ্যই নামাজ জামাআত তরক হবেনা,এমন সময় বুঝেই সফর করতে হবে।
তারপরেও কেহ যদি শখের বসে সফর করার কারনে শত চেষ্টার পরেও জামাআতের সহিত নামাজ আদায় না করতে পারে,তাহলে তার গুনাহ হবেনা।
গাড়িতে উঠার পর এটাও শরয়ী ওযর বলেই গন্য হবে।