জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মাসায়েল জানতে লজ্জার কিছু নেই। মাসআলা জেনে শরীয়তের উপর আমল করা মাকসাদ।
দৈনন্দিন জীবনের যেকোন ধরণের সমস্যার শরয়ী সমাধান জানতে আমাদের কাছে নিঃসংকোচে প্রশ্ন করতে পারেন। এবার প্রশ্নটির উত্তর খেয়াল করুন-
রোযার কাফ্ফারা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে। যেমন হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন
عن أبي هُرَيْرَةَ رَضِي اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : ( بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ قَالَ مَا لَكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا قَالَ لا قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لا فَقَالَ فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لا قَالَ فَمَكَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ ( وهو الزنبيل الكبير ) قَالَ أَيْنَ السَّائِلُ فَقَالَ أَنَا قَالَ خُذْهَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَوَ اللَّهِ مَا بَيْنَ لابَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ
আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম,তখন একব্যক্তি এসে বলল,হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আমি ধংস হয়ে গেছি।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তোমার কি হয়েছে?তিনি বললেন, আমি রোযা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তুমি কি কোনো গোলাম পাবে যাকে তুমি কাফ্ফারা হিসেবে আযাদ করবে?সাহাবী বললেন,আমি সক্ষম নই।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তাহলে কি তুমি ধারাবাহিক দুই মাস রোযা রাখতে পারবে?তিনি বললেন, না,এতে ও আমি সক্ষম নই।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তাহলে কি তুমি ষাটজন মিসকিন আহার করাতে পারবে?তখন তিনি বললেন,না,এতে ও আমি সক্ষম নই।রাসূলুল্লাহ সাঃ স্বস্থানেই নিরবে বসে থাকলেন।রাবী আবু হুরায়রা রাযি বলেন,আমরা এভাবেই আমরা স্ব স্ব স্থানে বসে রইলাম।তৎক্ষনাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এক আ'রাক্ব পরিমাণ খেজুর আসল,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, প্রশ্নকারী কোথায়?সাহাবী বললেন,জ্বী হুুজুর এই তো আমি।তুমি এগুলো নাও,এবং সদকাহ করো।তখন ঐ সাহাবী বললেন হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আমি কি আমার থেকে মুহতাজ ব্যক্তিকে সদকাহ করবো?আল্লাহর কসম!মদিনা বাসীদের মধ্যে আমার থেকে গরীব লোক আর কেউ নেই।এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাঃ হেসে ফেললেন, এমনকি উনার দাত বেড়িয়ে পড়ল।অতপর রাসূলুল্লাহ সাঃ ঐ সাহাবীকে বললেন তাহলে তুমি তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও।
{সহীহ বুখারী(ফতহুল বারী নসখা)-১৯৩৬ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}
একাধিক রোযার কাফফারা কয়টি আদায় করতে হয়?
মৌলিকভাবে উক্ত মাসআলায় মতভেদ আছে। এ ব্যাপারে মোট তিনটি বক্তব্য ফুক্বাহায়ে কেরাম থেকে পাওয়া যায়। যথা-
১–
একাধিক রমজানের কাযা হোক বা এক রমজানের একাধিক রোযার কাযা হোক, চাই সহবাসের কারণে রোযা ভঙ্গ করা হোক বা অন্য কোন কারণে রোযা ভঙ্গ করা হোক সর্বাবস্থায় যদি কোন একটির কাফফারা আদায় করার আগেই আবার রোযা ভঙ্গ করা হয়, তাহলে একটি কাফফারাই যথেষ্ঠ হয়ে যাবে। একাধিক রোযার জন্য বা একাধিক রমজান মাসের রোযার জন্য বা সহবাস বা সহবাস ছাড়া রোযা ভঙ্গের জন্য আলাদা আলাদা কাফফারা আদায় করতে হবে না। বরং একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে।
উদাহরণতঃ এক ব্যক্তি ২০১৯ সালে রমজান মাসে দুইটি রোযা ভঙ্গ করল সহবাস করে, তারপর দ্ইুটি রোযা ভঙ্গ করল পানাহার করে। তারপর রমজান মাস শেষে কাফফারা আদায় করেনি।
তারপর ২০২০ সালের রমজান এসে গেল। এ রমজানেও সে দ্ইুটি রোযা ভঙ্গ করল সহবাস করে। তারপর আরো দুটি রোযা ভঙ্গ করল পানাহার করে। তাহলে রমজান শেষে যদি লোকটি উভয় রমজানের রোযার কাফফারা আদায় করতে চায়, তাহলে একটি কাফফারা আদায় করলেই উভয় রমজানের ভঙ্গ করা রোযার কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। দুই রমজানের জন্য দুইটি কাফফারা আদায় করা জরুরী নয়। সহবাসের দ্বারা ভঙ্গ করা রোযার কাফফারাও আলাদা আলাদা একাধিকবার আদায় করার প্রয়োজন নেই। এক কাফফারাই যথেষ্ট হয়ে যাবে।
২–
এক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য এক কাফফারাই যথেষ্ট। তাই তা যে কারণেই ভঙ্গ করা হোক না কেন। চাই সহবাসের জন্য বা পানাহারের জন্য। সর্বক্ষেত্রেই এক কাফফারাই সকল রোযার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। তবে একাধিক রমজানের রোযা ভঙ্গের জন্য একাধিক কাফফারা আদায় করতে হবে। এক কাফফারা যথেষ্ট হবে না।
যেমন ২০১৯ সালের রমজানে দুই রোযা ভঙ্গ করা হল সহবাস করে। আবার দুই রোযা ভঙ্গ করা হল পানাহার করে, তারপর রমজান শেষে এসব রোযার কাফফারা আদায় করা হয়নি। পরবর্তীতে ২০২০ সালের রমজানেও দুই রোযা ভঙ্গ করা হল সহবাস করে, আবার দুই রোযা ভঙ্গ করা হল পানাহার করে। তাহলে কয়টি কাফফারা আদায় করতে হবে?
দুইটি কাফফারা। ২০১৯ সালের রমজানের রোযা ভঙ্গের একটি কাফফারা। আর ২০২০ সালের রমজানের রোযা ভঙ্গের জন্য একটি কাফফারা। এই মোট দুইটি কাফফারা আদায় করতে হবে।
তাহলে কী দাঁড়াল? এ দ্বিতীয় বক্তব্য অনুপাতে এক রমজানে যে কারণেই হোক একাধিক রোযা ভঙ্গ হলে একটি কাফফারা আদায় করলেই যথেষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু অন্য রমজানের জন্য যথেষ্ট হবে না এক কাফফারা। বরং প্রতিটি রমজানের জন্য আলাদা কাফফারা আদায় করা জরুরী। সহবাসের কারণে ভঙ্গ হওয়া না হওয়ার মাঝে কোন পার্থক্য নেই।
৩–
সহবাস ছাড়া অন্য কারণে যদি রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে একাধিক রমজানের একাধিক রোযার জন্যও এক কাফফারাই যথেষ্ট।
কিন্তু সহবাসের কারণে রোযা ভঙ্গ করলে প্রত্যেক রোযার জন্য আলাদা কাফফারা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ এক রমজানে যদি একাধিকবার সহবাস করে রোযা ভঙ্গ করে, তাহলে প্রতিটি রোযা ভঙ্গের জন্য আলাদা কাফফারা আদায় করতে হবে। তেমনি অন্য রমজানের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য। তথা প্রত্যেক ঐ রোযা যেটি সহবাস করে ভঙ্গ করা হয়েছে, তার প্রতিটির জন্য আলাদা কাফফারা আদায় করা জরুরী। এক কাফফারা যথেষ্ট হবে না।
উদাহরণতঃ এক ব্যক্তি ২০১৯ সালের রমজান মাসে দুইটি রোজা ভঙ্গ করল পানাহার করে। তারপর রমজান শেষে উক্ত রোযার কাফফারা আদায় করেনি। তারপর ২০২০ সালের রমজানে এসে আরো দুটি রোযা ভঙ্গ করল। তাহলে রমজান শেষে তার উপর কয়টি কাফফারা আবশ্যক হবে?
একটি কাফফারা। যেহেতু সহবাস ছাড়া অন্য কারণে রোযা ভঙ্গ হয়েছে, তাই এক কাফফারাই একাধিক রোযা ও একাধিক রমজানের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।
পক্ষান্তরে যদি ২০১৯ সালের রমজানে দুইটি রোযা ভঙ্গ করে সহবাস করে, তারপর রমজান শেষে কাফফারা আদায় করেনি। তারপর আবার ২০২০ সালের রমজানে এসে আরো দুইটি রোযা ভঙ্গ করে সহবাস করে, তাহলে তার উপর কয়টি কাফফারা আবশ্যক হবে?
চারটি কাফফারা। ২০১৯ সালের দুই রোযার জন্য দুই কাফফারা। ২০২০ সালের দুই রোযার জন্য দুই কাফফারা। এই মোট চার কাফফারা আবশ্যক লোকটির উপর। যেহেতু সহবাসের জন্য রোযা ভঙ্গের কাফফারা একটি অন্যটির মাঝে তাদাখুল হয় না। তাই প্রতিটি রোযা ভঙ্গের জন্য আলাদা কাফফারা আবশ্যক হবে।
এই হল তিনটি বক্তব্য রমজানে রোযা ভঙ্গের কাফফারার ক্ষেত্রে। এ কারণেই মুফতীয়ানে কেরামের ফাতওয়ার মাঝে একাধিক বক্তব্য পাওয়া যায়। কেউ প্রথম বক্তব্য অনুসরণ করে বলে থাকেন, একাধিক রোযার একাধিক রোযার ক্ষেত্রে চাই তা সহবাসের কারণে ভঙ্গ করুক বা পানাহার করে ভঙ্গ করুক একটি কাফফারা আদায় করলেই চলবে। একাধিক কাফফারা লাগবে না।
কোন কোন মুফতী সাহেব দ্বিতীয় বক্তব্য অনুপাতে বলে থাকেন যে, এক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য একটি কাফফারা আদায় করলেই হবে সহবাসের কারণে ভঙ্গ করুক বা পানাহার করে ভঙ্গ করুক। আর একাধিক রমজানের রোযা ভঙ্গের জন্য একাধিক কাফফারা আদায় করতে হবে। যে কারণেই রোযা ভঙ্গ করা হোক না কেন।
আবার আরেক দল মুফতীয়ানে কেরাম তৃতীয় বক্তব্য অনুপাতে একথা বলেন যে, সহবাসের মাধ্যমে রোযা ভাঙ্গলে একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য একাধিক কাফফারা আদায়ের কথা বলে থাকেন।
আর সহবাস ছাড়া পানাহারের কারণে রোযা ভঙ্গকারীর ক্ষেত্রে একাধিক রমজানের একাধিক রোযা বা এক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য এক কাফফারা আদায়কেই যথেষ্ট বলে থাকেন।
★★সমাধানঃ
এক্ষেত্রে আসলে চূড়ান্ত সমাধান বলা দুস্কর। আকাবীর মুফতীয়ানে কেরাম থেকে একাধিক ফাতাওয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে হাকীমুল উম্মত আশরাফী থানবী রহঃ এর ফাতাওয়া গ্রন্থ ইমদাদুল ফাতাওয়ার টিকায় মুফতী যফর আহমাদ উসমানী রহঃ একটি মধ্যপন্থী সমাধান দিয়েছেন। যাতে তিনটি মতেরই সন্নিবেশন রয়েছে। সেটিই আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে, আমরাও এমতটিকে প্রাধান্য দিতে পারি-
তিনি বলেন,
“সহবাস ছাড়া অন্য কারণে রোযা ভঙ্গ করলে এক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্য যেমন একটি কাফফারা যথেষ্ট। তেমনি একাধিক রমজানের একাধিক রোযা ভঙ্গের জন্যও একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে। একাধিক কাফফারা আদায় করা জরুরী নয়।
কিন্তু যদি সহবাসের দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে এক রমজানে যদি একাধিক রোযা ভঙ্গ করে থাকে সহবাস করে তাহলে এক কাফফারা আদায় করলেই সকল রোযা ভঙ্গের কাফফারা হয়ে যাবে। একাধিক আদায় করা জরুরী নয়।
কিন্তু যদি দুই রমজানে সহবাসের দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে থাকে, তাহলে দুই রমজানের জন্য আলাদা দুইটি কাফফারা আদায় করতে হবে। এক কাফফারা আদায় যথেষ্ট হবে না”।
ولو تكرر فطره ولم يكفر للأول يكفيه واحدة ولو في رمضانين عند محمد وعليه الاعتماد بزازية ومجتبى وغيرهما واختار بعضهم للفتوى أن الفطر بغير الجماع تداخل وإلا لا (رد المحتار، كتاب الصوم، مطلب فى الكفارة-3/391، مراقى الفلاح، فصل فى الكفارة-552، البحر الرائق-2/277)
বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
১- ইমদাদুল ফাতাওয়া-২/১৩৪-১৩৬।
২- ফাতাওয়া মাহমুদিয়া-১৫-২০৫-২০৬।
৩- ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৬/৪৫৩-৪৫৫।
৪- আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল-৩/২২৬-২২৭।
৫- ফাতাওয়া হক্কানিয়া-৪/১৮০।
★★রোযার কাফফারা আদায় করার পদ্ধতিঃ
আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্ত সামর্থ হয়ে থাকেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া ।
যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»
অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}
আরো জানুন
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই আপনাদের যেহেতু ২ রমজানের (২০ টি) রোযা কাযা হয়েছে,এবং এটা সহবাসের কারনে।
তাই আপনাদের ২ টি কাফফারা আদায় করতে হবে।
অর্থাৎ ২ বার টানা ৬০ দিন রোযা রাখতে হবে।
যদি সামর্থ না রাখেন,তাহলে ১২০ জন মিসকিনকে দুবেলা খাবার খাওয়াতে হবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করতে হবে।
যদি ৬০ টাকা করে ছদকায়ে ফিতর হয়,তাহলে ৬০×১২০= ৭২০০ টাকা মিসকিনদেরকে দিতে হবে।
,
তবে সতর্কতা মূলক ২০ টির রোযার কাফফারা আদায় করলে ভালো হয়।
একটি রোযার কাফফারা (৬০ টাকা ছদকায়ে ফিতর হলে) ৩৬০০ টাকা হয়।
৩৬০০×২০=৭২০০০ টাকা
উল্লেখ্য যে আপনাদের যদি রোযা রাখার সামর্থ থাকে,তাহলে আপনারা কোনোভাবেই টাকা দিয়ে কাফফারা আদায় করতে পারবেননা।