আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
371 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
বাবা মায়ের সাথে যেভাবে আচরণ ওয়াজিব
শ্বশুর শ্বাশুড়ির বেলাতেও কি এক?

1 Answer

0 votes
by (599,820 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
শশুর-শাশুড়ীর খেদমত করতে যে সব স্বামীরা স্ত্রীর উপর আমানবিক নির্যাতন করে,তাদের জেনে রাখা উচিত -একেতো তাদের খেদমত স্ত্রীর উপর ওয়াজিব নয়!দ্বিতীয়ত শশুরের খেদমতে ফিতনার আশংকা আছে! তাই স্বামী নিজে আপন মাতা-পিতার খেদমত করবে অথবা পারিশ্রমিক দিয়ে করাবে।হ্যা স্ব ইচ্ছায় শাশুড়ীর খেদমত করা বধুর নৈতিক দায়িত্ব ,কিন্তু এক্ষেত্রে বধুর উপর কোন রকম চাপ প্রয়োগ করা যাবেনা,এবং বধুর খেদমতকে অনুগ্রহ বিবেচনা করাও শ্বাশুড়ীর নৈতিক দায়িত্ব।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-৪৩০

সন্তান -ছেলে হোক বা মেয়ে হোক- সবার উপরই 
মাতাপিতার হক রয়েছে।মাতাপিতার দেখভাল করা ও তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক ফরয ঘোষনা করা হয়েছে।


আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا
“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,
وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)


أن جاهمة جاء إلى النبي صلى الله عليه وسلم، فقال: يا رسول الله، أردت أن أغزو وقد جئت أستشيرك، فقال: «هل لك من أم؟» قال: نعم، قال: «فالزمها، فإن الجنة تحت رجليها»
“হযরত জাহিমাহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যুদ্ধে অংশগ্রহণের ইচ্ছা করেছি, আপনার কাছে পরামর্শ নিতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তোমার কি মা আছেন?” সাহাবী জবাব দিলেন, “হ্যাঁ!”। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তাঁর সেবাকে নিজের উপর আবশ্যক করে নাও। নিশ্চয়ই তাঁর দুই পায়ের নিচে রয়েছে জান্নাত।” (সুনানে নাসাঈ: ৩১০৪)

হাদিস শরীফে আরও এসেছে,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : "جاء رجلٌ إلى رسول الله -صلى الله عليه وسلم- فقال : يا رسول الله، من أحق الناس بحسن صحابتي؟، قال: (أمك) ، قال: ثم من؟ قال: (أمك) ، قال: ثم من؟ قال: (أمك) ، قال: ثم من؟ قال: (أبوك) متفق عليه .
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক সাহাবী এসে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কে আমার সর্বাধিক মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার মাতা।” লোকটি জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কে?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার মাতা।” লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কে?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার মাতা।” লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কে?” রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন, “তোমার পিতা।”(বুখারী ও মুসলিম)

মাতাপিতার ফযিলত ও তাদের হক সম্পর্কে কুরআন হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।কিন্তু শশুড় শাশুড়ীর হক নিয়ে কোরআন হাদীসে কোথাও কিছু বর্ণিত হয়নি।শশুড় শাশুড়ীর খেদমত স্বামী করবে,তার পিতিমাতা হিসেবে। অথবা তাদের খেদমত করার জন্য মানুষ রাখবে।স্ত্রীর উপর শরয়ীভাবে শশুড় শাশুড়ীর খেদমত করা ওয়াজিব নয়।স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায় স্বামীর ভাড়কে নিজের কাধে নিয়ে নেয়,তাহলে সেটা শাশুড়ীর ক্ষেত্রে বৈধ হবে।শশুড়ের খেদমত স্ত্রী করতে পারবে না।কেননা এক্ষেত্রে ফিতনার আশংকা রয়েছে।তবে শশুড় শাশুড়ীর সাথে সর্বদাই উত্তম আচরণ করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...