আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (23 points)
অমুসলিম বন্ধুর সাথে অংশীদারী ব্যবসা করা কি জায়েজ হবে যদি তার টাকার ইনকাম সোর্স হারাম না হয়?


যদি কোন মুসলিমের টাকার ইনকাম সোর্স হারাম হয় (যেমন সুদী ব্যাংকে চাকরির টাকা), তাহলে কি তার সাথে অংশীদারী ব্যবস্যা জায়েজ হবে?

1 Answer

+1 vote
by (575,580 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


ব্যবসার ক্ষেত্রে মুসলমানের জন্য উত্তম হলো নিজের জন্য শরীক হিসেবে মুসলমান,ন্যায় পরায়ন,বিশ্বস্ত ব্যাক্তিকে বানাবে।
যাতে করে তাদের ব্যবসায় বরকত হয়।
এবং যাতে করে মহান আল্লাহর অনুগ্রহে তাদের ব্যবসা লাভজনক হয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أبِىْ هُرَيْرَة رَفَعَه قَالَ : «إِنَّ اللّٰهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ : أَنا ثَالِث الشَّرِيكَيْنِ مَا لَمْ يَخُنْ اَحَدُهُمَا صَاحِبَه فَإِذَا خَانَه خَرَجْتُ مِنْ بَيْنِهِمَا». رَوَاهُ أَبُوْ دَاودَ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি দুই অংশীদারদের মধ্যে তৃতীয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা একে অপরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে। যখন তাদের কেউ অপরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, আমি তাদের মধ্যে হতে সরে পড়ি।
আবূ দাঊদ ৩৩৮৩, ইরওয়া ১৪৬৮

কাফেররা যেহেতু সম্পদের দিক থেকে খিয়ানত করে,তাই তাদের সাথে ব্যবসা করলে বরকত উঠে যাবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡخُلَطَآءِ لَیَبۡغِیۡ بَعۡضُہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ قَلِیۡلٌ مَّا ہُمۡ ؕ

আর শরীকদের অনেকে একে অন্যের উপর তো সীমালঙ্ঘন করে থাকে—করে না শুধু যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে, আর তারা সংখ্যায় স্বল্প।
(সুরা সোয়াদ ২৪)

ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ- 
إذا ثبت لديك أن المال الذي سيشاركك به صديقك حرام كله فلا تجوز لك مشاركته، أما إذا ثبت أن ماله مختلط حلاله بحرامه، فمشاركته مكروهة لا محرمة، ويتفاوت مقدار الكراهة بحسب كثرة الحرام وقلته، ولا فرق في كل ذلك بين كون المال منه أو من زوجته أو منهما معاً.
সারমর্মঃ
অংশীদারী ব্যবসার ক্ষেত্রে শরীকের সম্পদ যদি পুরাটাই হারাম হয়,তাহলে তাকে শরীক বানানো জায়েজ হবেনা।
তবে যদি তার সম্পদ হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,তাহলে তাকে শরিক বানানো মাকরুহ।
হারাম নয়।
হারামের আধিক্যতার কারনে কারাহাতের সীমা বাড়বে।  

قال الشيخ زكريا الأنصاري في شرح البهجة: تكره الشركة مع الكافر، ومن لا يتحرز من الربا ونحوه. انتهى.
সারমর্মঃ
কাফেরের সাথে অংশীদারী ব্যবসা করা মাকরুহ।
এবং যে ব্যাক্তি সূদ ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকতে পারেনা,তার সাথে অংশীদারী ব্যবসা করাও মাকরুহ।

وقال البهوتي في كشاف القناع: وتكره معاملة من في ماله حلال وحرام يُجهل. انتهى.
সারমর্মঃ
যার সম্পদ হালাল নাকি হারাম,অস্পষ্ট। 
তাহলে তার সাথে শরীকানা ব্যবসা করা  মাকরুহ।

وقال الشيرازي في المهذب: ولا يجوز مبايعة من يُعلم أن جميع ماله حرام. انتهى.
সারমর্মঃ
যার সমস্ত সম্পদ হারাম,তার সাথে (অংশিদারী) ব্যবসা জায়েজ নেই। 

وقال الدسوقي في حاشيته على الشرح الكبير : وأما من كان كل ماله حراماً وهو المراد بمستغرق الذمة فهذا تمنع معاملته ومداينته، ويمنع من التصرف المالي وغيره، خلافاً لمن قال إنه مثل من أحاط الدين بماله فيمنع من التبرعات لا من التصرف المالي.. 
সারমর্মঃ
যার সমস্ত সম্পদ হারাম,তার সাথে (অংশিদারী) ব্যবসা করা নিষেধ।

الأشباہ و النظائر:

"القاعدة الثانية من النوع الثاني: إذا اجتمع عند أحد مال حرام و حلال فالعبرة للغالب ما لم يتبين". (١/ ١٤٧)

فتاوی عالمگیری:

"آكل الربا وكاسب الحرام أهدى إليه أو أضافه وغالب ماله حرام لا يقبل، ولا يأكل ما لم يخبره أن ذلك المال أصله حلال ورثه أو استقرضه، وإن كان غالب ماله حلالاً لا بأس بقبول هديته والأكل منها، كذا في الملتقط".(5 / 343، الباب الثانی  عشر فی الھدایا والضیافات، ط: رشیدیہ)(مجمع الانھر، (2/529) کتاب الکراہیۃ، ط: دار احیاء التراث العربی)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
অমুসলিম বন্ধুর সাথে অংশীদারী ব্যবসা করা জায়েজ হবে।
যদি তার টাকার ইনকাম সোর্স হালাল হয়।
তবে তার সাথে ব্যবসা করায় বরকত কম হবে। 

(০২)
যদি কোন মুসলিমের টাকার ইনকাম সোর্স হারাম হয়,তাহলে দেখতে হবে যে তার সমস্ত সম্পদ হারাম কিনা?
যদি পুরাটাই হারাম হয়,তাহলে তার সাথে ব্যবসা করা জায়েজ নেই।
তাকে শরীক বানানো জায়েজ নেই।

আর যদি পুরোটাই হারাম না হয়,বরং শরীকানা ব্যবসায় দেয়া সম্পদের মধ্যে তার হালাল টাকাও থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে তার সাথে ব্যবসা করা মাকরুহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...