আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
153 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামুয়ালাইকুম। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার সময় স্বামী কয়েক বার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলে যে তোমাকে আর রাখার নিয়ত নাই। তখন স্ত্রী বলে যে, "তাহলে কেমনে দিবা দিয়ে দেও"। ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্বামী স্ত্রীকে পর পর দুইবার তালাক দিলাম কথাটা বলে, ঝগড়ার তিন থেকে চার দিনের মাথায় ঝামেলা মিটে যায়। স্বামী স্ত্রীর কাছে আসতে চাইলে স্ত্রী বাধা দেয়, স্বামী বলে যে আমি তো তিন তালাক দেইনি। তারা এখন একসাথেই সংসার করছে।
এই ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর পুনরায় তাদের ঝগড়া হয়, এবং স্বামী তার শাশুড়িকে ফোন করে বলে "আপনার মেয়েকে আমি আর রাখবোনা, তালাক দিয়ে দিব"। পরের দিন আবার স্ত্রীকে ফোন করে রাগারাগি করে বলে, আমি আর রাখতাম না তোরে, তুই তোর ফ্যামিলি নিয়ে এসে বৈঠকে বস, কেমনে যাবি চলে যা। অর্থাৎ যদিও স্বামী মুখে মুখে স্ত্রীকে তালাক বলেছে কিন্তু সে চাচ্ছে কাগজে কলমে স্ত্রী তাকে তালাক দিক।

 এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের কি তালাক হয়ে গেছে?  আর এইক্ষেত্রে স্বামী তালাক দেওয়ায়, স্বামী কি স্ত্রীকে অপরিশোধিত দেনমোহর দিতে বাধ্য থাকবে? আর যদি তালাক না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কি তাদের পুনরায় বিয়ে পড়াতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/2579  নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
প্রথম ও দ্বিতীয় তালাকের পর রাজআত করা যায়।তথা ইদ্দতের ভিতর স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।এরজন্য কোনো আনুষ্টানিকতার প্রয়োজন নেই।
রাজআতের পদ্ধতি সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় উল্লেখ করা হয়,
الرجعة إبقاء النكاح على ما كان ما دامت في العدة كذا في التبيين وهي على ضربين: سني وبدعي (فالسني) أن يراجعها بالقول ويشهد على رجعتها شاهدين ويعلمها بذلك فإذا راجعها بالقول نحو أن يقول لها: راجعتك أو راجعت امرأتي ولم يشهد على ذلك أو أشهد ولم يعلمها بذلك فهو بدعي مخالف للسنة والرجعة صحيحة وإن راجعها بالفعل مثل أن يطأها أو يقبلها بشهوة أو ينظر إلى فرجها بشهوة فإنه يصير مراجعا عندنا إلا أنه يكره له ذلك ويستحب أن يراجعها بعد ذلك بالإشهاد كذا في الجوهرة النيرة.
রাজআত হল,ইদ্দতের ভিতরে বিয়েকে টিকিয়ে রাখা,স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।রাজআত দুই প্রকার
(ক)সুন্নাহ সম্মত- এর ব্যখ্যা হল, কথার মাধ্যমে রাজআত করা হবে।এবং রাজআত করার সময় দুইজন সাক্ষীকে উপস্থিত রাখা হবে।এবং তাদেরকে রাজাতের বিষয় সম্পর্কে অবগত করা হবে।যখন কথার মাধ্যমে রাজআত করা হবে,তখন স্বামী বলবে-আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম,বা বলবে,আমি আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলাম।
(খ)বিদ'আত - এর ব্যখ্যা হল, যদি দুজন সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে বা উপস্থিত তবে তাদেরকে অবগত না করে কেউ রাজআত করে নেয়,তাহলে এটা রাজাত হবে।তবে বিদআত হবে।

যদি কেউ কথার পরিবর্তে কাজের মাধ্যমে রাজআত করে নেয়।যেমন স্বামী তার ঐ স্ত্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়ে গেল,বা তাকে চুমু দিয়ে দিল,বা তার লজ্জাস্থানের দিকে কামভাব নিয়ে থাকিয়ে রইলো,তাহলে এমতাবস্থায়ও রাজআত হয়ে যাবে।তবে হানাফি মাযহাব মত এমনটা করা মাকরুহ।
মুস্তাহাব হল,তালাক পরবর্তী দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে রাজ'আত করা।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৪৬৮)

তুতীয় তালাকের পর স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।চায় অনেক বৎসর পরই দেয়া হোক না কেন।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এখানে প্রথম দুই তালাক হয়েছে। এতে কোনো সংশয় নেই। সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে তৃতীয় তালাক নিয়ে।

("আপনার মেয়েকে আমি আর রাখবোনা, তালাক দিয়ে দিব"। পরের দিন আবার স্ত্রীকে ফোন করে রাগারাগি করে বলে, আমি আর রাখতাম না তোরে, তুই তোর ফ্যামিলি নিয়ে এসে বৈঠকে বস, কেমনে যাবি চলে যা।)

এই বাক্যতে তালাকের ওয়াদা করা হচ্ছে, কিন্তু তালাক দেয়া হচ্ছে না। তাই সর্বমোট দুই তালাক পতিত হবে।
স্বামী স্ত্রী পূনরায় সংসার করতে পারবে।

কিন্তু এইসব শব্দ যিনি উচ্ছারণ করেছেন, তিনি যদি অতীত বা বর্তমানের অর্থে ব্যবহার করেন, তখন কিন্তু তালাক পতিত হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...