ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://www.ifatwa.info/4094 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
হযরত আবু
হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ
مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ، فَزِنَا العَيْنِ النَّظَرُ،
وَزِنَا اللِّسَانِ المَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي، وَالفَرْجُ
يُصَدِّقُ ذَلِكَ كُلَّهُ وَيُكَذِّبُهُ»
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় আল্লাহ বনি আদমের উপর যতটুকু
যিনা লিখে রেখেছেন সে তা করবেই; এর থেকে কোন নিস্তার নেই। চোখের যিনা হচ্ছে- দেখা; জিহ্বার
যিনা হচ্ছে- কথা, অন্তর কামনা করে ও উত্তেজিত হয় এবং যৌনাঙ্গ সেটাকে
বাস্তবায়ন করে অথবা বাস্তবায়ন করে না। (সহীহ বুখারী-৬২৪৩)
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ
ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে
(১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর
প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو
الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت
لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها
وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم
অর্থাৎ, এর ঔষধ
একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু
সময় পর চলে যাবে; যেমনটি
তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে
এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে
কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।
এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا
قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্
পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة
‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের
বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ )
ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من
التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে জড়িয়ে ধরা, কিস করা, হাত ধরা, শরীরে হেলান দেওয়া, তার যৌন চাহিদা পূর্ণ করাও ইবাদত। এতে
আল্লাহ তায়ালা অনেক অনেক সওয়াব দান করেন। সুতরাং আপনি কখনো ভুলেও
স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে যিনার কথা মুখে নিয়ে আসবে না বা মনে করবেন না। তবে হাত,পা,মুখ,চক্ষু ইত্যাদি দ্বারাও যিনা হতে পারে। আর এটা পর নর-নারীর
দিকে কুদৃষ্টিতে তাকানো বা ইত্যাদির দ্বারা। স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে নয়। ( স্বামী
স্ত্রীর ক্ষেত্রে হতে পারে তখন যখন স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার পরেও এক সাথে ঘর
সংসার করে। এই
ক্ষেত্রে বাহ্যিক ভাবে তারা স্বামী স্ত্রী হলেও মূলত তারা স্বামী স্ত্রী নয়। তাই
তারা সহবাস করলেও সেটা যিনা বলে ধর্তব্য হবে)।
২. না, এভাবে
প্রশ্ন করার কারণে আপনার বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবে না। তবে আপনার মনে হয়
ওয়াসওয়াসা রোগ আছে। আর ‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)
সুতরাং আপনি যিনা বা তালাক ইত্যাদির আলোচনা বা কল্পনাও
করবেন না।
৩.
আপনি নির্দিষ্ট কোনো গোনাহর নাম না ধরে এভাবে মাফ চাবেন যে, হে
আল্লাহ! আমার জানা, অজানা, প্রকাশ্য-গোপন সকল গোনাহ মাফ করে দিন।