উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পশু-পাখির প্রতি নম্রতা প্রদর্শন ইবাদতের পর্যায়ভুক্ত। পশু-পাখিকে কষ্ট দেয়া গুনাহের কাজ।
,
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন : “আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের ওপর ‘ইহসান’ অত্যাবশ্যক করেছেন। অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে, দয়ার্দ্রতার সাথে হত্যা করবে; আর যখন যবেহ করবে তখন দয়ার সাথে যবেহ করবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার যবেহকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে” (সহিহ মুসলিম : ১৯৫৫)।
পশু-পাখির সাথে যথাসম্ভব দয়াশীল আচরণ করতে হবে। এদের সঙ্গে যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না। পশু-পাখির অঙ্গহানি করা নিষিদ্ধ।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ সা: ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫৫১৫)।
আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সা: প্রাণীর মুখে আঘাত করতে এবং মুখে সেঁক লাগাতে বারণ করেছেন’ (সহিহ মুসলিম : ২১১৬)।
,
বিড়াল পানিকে পছন্দ করেনা,তার কিছু কারন রয়েছেঃ
★বিড়াল কিন্তু সাঁতারে সক্ষম নয়।
★বিড়ালের লোম একবার ভিজে গেলে সহজে শুকোতে চায় না। ভিজে লোমে থাকতে অসুবিধা হয় তাদের।
,
★বিড়ালের চামড়া স্পর্শকাতর বেশি।
★ পানি বা অন্য কোনও তরলের সঙ্গে তা খুব একটা মানিয়ে নিতে পারে না। তেলা হয়ে ভিজেই থাকে। তার উপর বিড়াল শীতকাতুরে প্রাণী। ভিজে লোম ও চামড়ায় সারাটা দিন বিপর্যস্ত হয়ে থাকে। তাই পানি একেবারে পছন্দ করে না তারা।
,
সুতরাং বিড়াল যদি পোষা না হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে ময়লা পরিষ্কার হবার জন্য বিড়ালকে ধরে পুকুরের পানিতে ছুঁড়ে নিক্ষেপ করা ঠিক হবেনা।
কারন বিড়ালের এতে খুব কষ্ট হয়।
,
★আর যদি বিড়াল নিজের পোষা হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে ময়লা পরিষ্কার হবার জন্য বিড়ালকে ধরে পুকুরের পানিতে ফেলা জায়েয আছে, তবে বিড়াল যেহেতু সাতাড় জানেনা,তাই পানিতে নেমে অল্প সময়ের ভিতরেই তাকে পানি থেকে তুলতে হবে।
কোনো যেনো কষ্ট বিড়াল না পায়,সেদিকে পরিপূর্ণ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
অন্যথায় জায়েজ হবেনা ।
★প্রিয় দ্বীনি ভাই বোন! পোষ্য বিড়ালকে জোর করে রোজ গোসল করানো ঠিক নয়। শুকনো নরম কাপড়ে ঝেড়ে দিন তাদের গা। তাতেই পরিষ্কার থাকবে বিড়ালের দেহ। দু’ সপ্তাহ অন্তর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
বিড়াল পোষার ব্যাপারে বিস্তারিতঃ
বিড়াল পালা বৈধ।
হাদিস শরিফে আছে, আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জনৈক মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আজাব দেওয়া হয়। সে বিড়ালটিকে বন্দি করে রাখে, এ অবস্থায় সেটি মারা যায়। সে এটিকে বন্দি করে রেখে পানাহার করায়নি এবং তাকে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে (নিজে) জমিনের পোকা-মাকড় খেতে পারে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৮২)
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, কুরতুবি (রহ.) বলেছেন, এ হাদিস থেকে বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেধে রাখা জায়েজ বলে প্রমাণিত হয়, যদি তাকে খানাপিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি না করা হয়। (ফাতহুল বারি : ৬/৪১২) এ ছাড়া আরো কিছু হাদিস রয়েছে, যা থেকে বিড়াল পালা জায়েজ প্রমাণিত হয়।