আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
272 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।  
আমার কয়েকটি বিষয় জানার আছে।
১. ইসলামে তো মেয়েরা বিনা কারণে স্বামীর কাছে তালাক চাইলে আল্লাহ বেজার হন। কিন্তু কোনো স্বামী যদি অন্য কারো সাথে যেনায় লিপ্ত হয়, স্ত্রী স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বললে স্বামী বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে যে তার স্ত্রী বেঁচে থাকতে সে দ্বিতীয় বিয়ে করবে না কিন্তু তার শারীরিক চাহিদার জন্য সে যেনা করবে কারণ সে তার স্ত্রীর কাছে শারীরিকভাবে সন্তুষ্টনা। তখন যদি স্ত্রী বলে তাহলে যেন তাকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে, তবুও যেন যেনা না করে। তাহলেও কি তালাক চাওয়ার কারণে স্ত্রীর উপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন?
২. নিকাহনামার ১৮. নম্বর ঘরে " স্বামী মুসলিম পারিবারিক আইনের কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। স্ত্রীর ছোট বোনের সাথে জোরপূর্বক যেনা করা এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে সেটা দিনের পর দিন  চালিয়ে যাওয়া, স্ত্রী সেই কাজে বাঁধা দিলে স্ত্রীকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে অত্যাচার করা এবং স্ত্রীকে এটা বলা যে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে সে কিছুই পায়নি।যদিও সে কিছু দাবী করেনা কিন্তু তার শ্বশুরের নাকি চক্ষুলজ্জা নেই তাই মেয়েকে কিছু দেয়না।এটা মুসলিম পারিবারিক আইন অমান্য করা কিনা?
৩. নিকাহনামার অনুমতি এবং এরপর আরও বিভিন্ন কারণে স্বামী স্ত্রীকে বলে যে তার স্ত্রী যেনো তাড়াতাড়ি তাকে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দেয়। স্ত্রী তখন কোর্টকর্তৃক স্ট্যাম্প পেপারের মাধ্যমে তালাক দেয়। কোর্ট পেপারে উল্লেখ করে "" আমাকে প্রদত্ত তালাকে তাউফিজের ক্ষমতা বলে আমি আমার স্বামীকে ১/২/৩ তালাক এবং তালাকে বায়েন প্রদান করিয়াছি মর্মে হলফনামায় স্বাক্ষর করিলাম। ""  সেই কোর্ট পেপার স্বামীর কাছে পাঠানো হয়নি। শুধু সেই পেপারের ছবি তুলে তার ফোনে পাঠানো হয়েছে। কাজী কর্তৃক তালাকনামার যে নোটিশ সেটা স্বামীর কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। দুই মাসে দুইটা নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেই স্বামী বলেযে সে নাকি একটা পেয়েছে এবং সেটাতে সে স্বাক্ষর করেনি। এরপর ৫ মাস পার হয়েছে কিন্তু তৃতীয় নোটিশ পাঠানো হয়নি। উকিল বলেছে আর একটা নোটিশ  নাকি পাঠাতে হবেনা। এতেই তালাক কার্যকর হয়েছে। স্ত্রী মৌখিকভাবেও ১/২/৩ তালাক দিলাম এভাবে বলেছে।  
ইসলামে তো স্ত্রী তালাক দিতে পারেনা,  নিজ নফসের উপর তালাক নিতে পারে। তাহলে কি উপরে উল্লেখিত প্রক্রিয়ায় তালাক কার্যকর হয়েছে?
৪. যদি তালাক কার্যকর হয়ে যায় তাহলে সেই স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার বিধান কি?
৫. যদি তালাক কার্যকর না হয়ে থাকে তাহলে আমার এই প্রশ্ন
স্বামী এখন খুব করে স্ত্রীকে ফিরে চাচ্ছে। স্ত্রীর পরিবার তাদের মেয়েকে সেখানে পুণরায় দিতে চায়না। স্ত্রীও আল্লাহতায়ালার কাছে ইস্তেখারা করেছে কিন্তু মন থেকে সায় পাচ্ছেনা। স্ত্রীর মনে হচ্ছে সে ফিরে গেলে পরবর্তীতে আরও খারাপ কিছু ঘটলে তখন তার পরিবারের কাছেও জায়গা হবেনা। একবার বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেলে সেটা ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হয়ে যায়। স্বামী এতোভাবে ঠকিয়েছে যে স্ত্রী আর তার প্রতি কোন সুধারণা করতে পারছেনা। এখন স্ত্রী ফিরে যেতে না চাইলে তার করণীয় কি যেটাতে কোনো ঝামেলা থাকবেনা। যদি সংক্ষেপে বলতেন তাহলে খুব উপকার হয়।   
আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিক।

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/468 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
ﺫﻫﺐ ﻓﻘﻬﺎﺀ ﺍﻟﺤﻨﻔﻴّﺔ ﻭﺍﻟﺤﻨﺎﺑﻠﺔ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐ ﻣﺤﺮّﻡٌ ﺷﺮﻋﺎً ﻭﻳﺄﺛﻢ ﻓﺎﻋﻠﻪ، ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻞ ﺫﻭﺍﻕ، ﻣﻄﻼﻕ ) ﻭﻷﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻛﻔﺮﺍً ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ، ﺣﻴﺚ ﺇﻥّ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ ﻧﻌﻤﺔ ﻣﻦ ﻧﻌﻢ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐٍ ﻛﻔﺮٌ ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ؛ ﻭﻛﻔﺮﺍﻥ ﺍﻟﻨﻌﻤﺔ ﺣﺮﺍﻡ، ﻓﻼ ﻳﺤﻞّ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺇﻻ ﻟﻀﺮﻭﺭﺓ .
فقه السنة (الطبعة الثالثة)، بيروت: دار الكتاب العربي، صفحة 242، جزء 2
ভাবার্থ-হানাফি এবং হাম্বলী ফুকাহায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,বিনা কারণে তালাক প্রদাণ শরীয়তের দৃষ্টিকোণে হারাম।এবং তালাক প্রদাণকারী গোনাহগার। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ আমভাবে বলেছেন,আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক স্বাদ আস্বাদনকারীদের উপর লা'নত প্রদাণ করেন।কেননা তালাক প্রদাণ দ্বারা আল্লাহ তা'আলা র নিয়ামতকে অস্বীকার করা হয়। বিবাহ আল্লাহর নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নিয়ামত।আর বিনা কারণে তালাক প্রদাণ মানে বিবাহ নামক নিয়ামতকে পরিত্যাগ, অস্বীকার এবং অবহেলা করা। আর নিয়ামতকে অস্বীকার বা পরিত্যাগ করা হারাম।সুতরাং প্রয়োজন ব্যতীত তালাক হালাল হবে না।(ফেকহুস সুন্নাহ-২/২৪২)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চাওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।তবে বিশেষ প্রয়োজনে স্ত্রীর জন্য তালাক চাওয়া জায়েয।প্রশ্নের বিবরণ মতে উক্ত স্ত্রীর তার স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।

(২)
জ্বী, এটা মুসলিম পারিবারিক আইন

(৩)
"" আমাকে প্রদত্ত তালাকে তাউফিজের ক্ষমতা বলে আমি আমার স্বামীকে ১/২/৩ তালাক এবং তালাকে বায়েন প্রদান করিয়াছি মর্মে হলফনামায় স্বাক্ষর করিলাম। ""
এ কথা দ্বারা তালাকে তাফবীয হবে না। স্ত্রীর জন্য উচিৎ ছিল, এভাবে বলা যে, আমার উপর তালাক দিলাম বা আমি তালাক গ্রহণ করিলাম।

(৪)
তালাক কার্যকর হয়নি।

(৫)
স্ত্রী তার উক্ত স্বামীর সাথে সংসার করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...