ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কোরবানিকারী কোরবানির গোশত নিজে খেতে পারেন, হাদিয়া দিতে পারেন এবং সদকা করতে পারেন। দলিল হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী:
ۖفَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ
“অতঃপর তোমরা তা থেকে খাও এবং দুঃস্থ অভাবীকে আহার করাও”।[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ২৮]
আল্লাহ্ আরও বলেন:
فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ ۚ كَذَٰلِكَ سَخَّرْنَاهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
“তখন তোমরা তা থেকে খাও এবং আহার করাও এমন দরিদ্রকে যে ভিক্ষা করে এবং এমন দরিদ্রকে যে ভিক্ষা করে না। এভাবে আমরা সেগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর”।[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ৩৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম বলেন:
كُلُوا وأَطْعِمُوا وادَّخِرُوا
তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ,(সহীহ বোখারী-৫৫৬৯)
হাদিসে ‘খাওয়াও’ কথাটি ধনীদেরকে হাদিয়া দেয়া এবং দরিদ্রদেরকে দান করাকে অন্তর্ভুক্ত করবে। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
فَكُلُوا وَادَّخِرُوا وَتَصَدَّقُوا "
“তোমরা খাও, সংরক্ষণ করে রাখ এবং দান কর”।[সহিহ মুসলিম-১৯৭১]
কোরবানির গোশত কতটুকু খাওয়া যাবে, কতটুকু হাদিয়া দেওয়া হবে এবং কতটুকু সদকা করা হবে?
এ ব্যাপারে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে প্রশস্ততা রয়েছে। অগ্রগণ্য অভিমত হচ্ছে- এক তৃতীয়াংশ খাওয়া, এক তৃতীয়াংশ হাদিয়া দেওয়া এবং এক তৃতীয়াংশ সদকা করা। যে অংশটুকু খাওয়া জায়েয সে অংশটুকু সংরক্ষণ করে রাখাও জায়েয; এমন কি সেটা দীর্ঘ দিন পর্যন্ত হলেও যতদিন পর্যন্ত রাখলে এটি খাওয়া ক্ষতিকর পর্যায়ে পৌঁছবে না। কিন্তু যদি দুর্ভিক্ষের বছর হয় তাহলে তিনদিনের বেশি সংরক্ষণ করা জায়েয নয়। দলিল হচ্ছে সালামা বিন আকওয়া (রাঃ) এর হাদিস তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমাদের যে মধ্যে ব্যক্তি কোরবানি করেছে তৃতীয় রাত্রির পরের ভোর বেলায় তার ঘরে যেন এর কোন অংশ অবশিষ্ট না থাকে”। পরের বছর সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করল: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমরা কি গত বছরের মত করব? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: “তোমরা খাও, খাওয়াও এবং সংরক্ষণ কর। ঐ বছর মানুষ কষ্টে ছিল। তাই আমি চেয়েছি তোমরা তাদেরকে সহযোগিতা কর”। [সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম]
মোটকথা,
কুরবানির গোশতকে তিনভাগে ভাগ করা মুস্তাহাব। এক ভাগকে সদকাহ করা হবে। এবং এক ভাগকে আত্নীয় স্বজনদের মধ্যে বন্টন করা হবে বা রান্না করে খাওয়ানো হবে। এবং অবশিষ্ট এক ভাগকে নিজের জন্য রাখা হবে।
(قَوْلُهُ: وَنُدِبَ إلَخْ) قَالَ فِي الْبَدَائِعِ: وَالْأَفْضَلُ أَنْ يَتَصَدَّقَ بِالثُّلُثِ وَيَتَّخِذَ الثُّلُثَ ضِيَافَةً لِأَقْرِبَائِهِ وَأَصْدِقَائِهِ وَيَدَّخِرَ الثُّلُثَ؛ وَيُسْتَحَبُّ أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا، وَلَوْ حَبَسَ الْكُلَّ لِنَفْسِهِ جَازَ؛ لِأَنَّ الْقُرْبَةَ فِي الْإِرَاقَةِ وَالتَّصَدُّقِ بِاللَّحْمِ تَطَوُّعٌ. (قَوْلُهُ: وَنُدِبَ تَرْكُهُ) أَيْ تَرْكُ التَّصَدُّقِ الْمَفْهُومِ مِنْ السِّيَاقِ. (قَوْلُهُ: لِذِي عِيَالٍ) غَيْرِ مُوَسَّعِ الْحَالِ بَدَائِعُ."( كتاب الأضحية، ۶ / ۳۲۸، ط: دار الفكر)
ওয়াজিব কোরবানি হোক কিংবা নফল কোরবানি হোক; গোশত খাওয়া কিংবা হাদিয়া দেয়ার হুকুমের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এবং মৃত ব্যক্তির নামে কৃত কুরবানির বিধান জীবিতদের নামে কুরবানির মতই
في الفتاوي الشامية :
"من ضحى عن الميت يصنع كما يصنع في أضحية نفسه من التصدق والأكل والأجر للميت والملك للذابح. قال الصدر: والمختار أنه إن بأمر الميت لايأكل منها وإلا يأكل، بزازية، وسيذكره في النظم."(کتاب الأضحیة ج نمبر ۶ ص نمبر ۳۲۶،ایچ ایم سعید)