আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
419 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (17 points)
edited by
আমি একটি সরকারী চাকরি করি যেটাতে ঢোকার পর প্রভিডেন্ট ফান্ড খোলার আগে আমি ফোনে মুফতি দেলোয়ার হোসেন (আকবর কমপ্লেক্স) এর সাথে কথা বলে এর মাসলা জেনেছিলাম। যদি আমার শুনতে ভুল না হয় তাহলে তিনি প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাকে 'সুদ নয়' বলেছিলেন। এরপর আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, সরকার যেটা কেটে রাখে (৫%) তার বাইরেও সর্বোচ্চ ২৫% পর্যন্ত কাটানো যায়, এটা করলে সুদ হবে কিনা। আমার ভুল না হয়ে থাকলে তিনি বলেছিলেন যে এটাও জায়েজ। তার যুক্তি ছিল এরকম যে-যেহেতু বেতন থেকে কেটে নেওয়া টাকাটা আমার হাতে আসছে না, বা আমার একাউন্টে  লাগছে না, তার আগেই সরকার নিজের মালিকানায় নিয়ে নিচ্ছে, কাজেই এটা আমার জন্য সুদ না। কারণ আমি মালিক হচ্ছি না। কিন্তু যদি টাকাটা আমার মালিকানায় আসার পরে আমি সুদী ব্যাংকে জমা দিই, তারমানে আমি মালিক হওয়ার পরে জমা দিলাম, কাজেই এর দায় দায়িত্ব আমার উপর বর্তাবে। অর্থাৎ, ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে, আমার মালিক আমাকে বেতন দেওয়ার আগেই আমার কাছ থেকে কিছু টাকা বাধ্যতামূলকভাবে কেটে রাখবে, আমি তাকে বললাম, আপনি আরো বেশি করে কেটে রাখুন। এরপর তিনি তা দিয়ে নিজ মনমতো ব্যবসা করে অথবা সুদ খেয়ে লাভ করে নিজেও নিলেন আমাকে দিলেন রিওয়ার্ড হিসেবে। এখন তিনি সুদ খেলে এই দায় তার, আমি তো তাকে সুদ খেতে বলিনি। আমি তাকে শুধু আমাকে টাকা দেওয়ার আগেই কিছু টাকা বেশি করে কেটে রাখতে বলেছি এবং যখন বলেছি তখন আমি ওই টাকাটার মালিক হইনি, এবং যখন তিনি কেটেছেন তখনও মালিক হইনি। কাজেই এটা সুদ না, বাধ্যতামূলকভাবে কাটলে যেমন জায়েজ, তেমনি এটাও জায়েজ-কারণ উভয় ক্ষেত্রেই মূলকথা হলো বেতনের টাকাটা আমাকে পরিশোধের আগেই কেটে রেখেছে (যদিও এক্ষেত্রে আমার অনুমতি দেওয়ার কারণেই কেটেছে, কিন্তু শরিয়ত হিসেবে মালিকানা তো আমি বুঝে পাইনি)। কিন্তু আইওএম এর  ক্লাস থেকে জানতে পারলাম যে ঐচ্ছিকভাবে অনুমতি দিলে সেটার অতিরিক্তটুকু সুদ। এক্ষেত্রে আমার জিজ্ঞাসা হলো কার কথাটি সঠিক। বাধ্যতামূলক কর্তন থেকে লাভটি যে লজিকের কারণে জায়েজ (অর্থাৎ, মালিকানা বুঝে না পাওয়া), ঐচ্ছিক কর্তনের ক্ষেত্রেও একই লজিকের কারণে জায়েজ হবে কিনা।

(বোঝার সুবিধার জন্য আমি প্রশ্নটা আরেকটু ক্লিয়ার করছিঃ যদি প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য যে ৫% টাকা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক সেটা সরকার নিজে থেকে কর্তন না করত, পুরো বেতন হাতে দেওয়ার পর বাধ্য করত ৫% জমা দিতে (অর্থাৎ, আমার মালিকানায় টাকাটা চলে আসার পর), তাহলে কি এই টাকার উপর যে বর্ধিত দিত সেটা সুদ হত না? যদি উত্তর হয়, হ্যাঁ তখন সুদ হত, কারণ টাকাটা আপনি মালিকানায় পেয়ে গেছেন, তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে এখানে বাধ্যতামূলক কিংবা ঐচ্ছিকতা কোনো বিষয় না, কাউকে সুদ খেতে বাধ্য করলেও তা হারামই থাকে, আসল বিষয় হলো মালিকানা। সরকার মালিকানা বুঝে দেওয়ার আগেই কেটে নিলে তার দায় সরকারের (তাতে আমার ইচ্ছা থাকলেও), আর মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়ার পর আমি কাটালে তার দায় আমার  (তাতে আমার অনিচ্ছা থাকলেও)। তাই নয় কি?

1 Answer

0 votes
by (589,200 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1246 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
চাকুরী পরবর্তি বোনাস সাধারণত দু ধরণের হয়ে থাকে।যথা-
(১)প্রভিডেন্ট ফান্ড
(২)পেনশন ফান্ড

প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিস্তারিত বিধি-বিধান।

প্রভিডেন্ট ফান্ডের উৎস দু ধরণের হয়ে থাকে। যথা- 
(ক)বাধ্যতামূলক ইনকাম ট্যাক্স
অর্থাৎ  ইনকাম ট্যাক্স কেটে রাখা যদি বাধ্যতামূলক সরকারী নীতিমার আওতাধীন হয়,যা পরবর্তীতে প্রভিডেন্ট ফান্ড রূপে উক্ত চাকুরজীবিকে দেয়া হবে।তাহলে উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ড সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে না।কেননা বেতনের কর্তনকৃত ঐ অংশ  ইচ্ছা করলেও উক্ত চাকুরজীবি এখন উসূল করতে পারবে।আর কবজা বা হস্তগ্রত করার পূর্বে কেউ কোনো বেতন ভাতার মালিক হতে পারে না।যখন সে উক্ত টাকার মালিকই হয়নি,তখন সে কিভাবে এ টাকাকে সুদে লাগাবে।তাই কর্তনকৃত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ডকে সুদ বলা যাবে না।বরং এক্ষেত্রে এটাই অনুমান করা হবে যে,বেতন-ভাতার অপরিশোধিত সেই টাকাগুলাই এখন তার হস্তগ্রত হচ্ছে। এখানে সবগুলাকেই তার বেতন রূপে গণ্য করা হবে।

(খ)ইনকাম ট্যাক্স কেটে রাখা যদি যদি অপশনাল নীতিমালার আওতাধীন থাকে। যা ইচ্ছা করলে এড়িয়ে চলা যায়।তাহলে যতটুকু টাকা ইনকাম ট্যাক্স রূপে কেটে রাখা হয়েছে,পরবর্তীতে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ততটুকু টাকাই তার জন্য গ্রহণ করা জায়েয হবে।অতিরিক্ত টাকাকে এক্ষেত্রে সুদ হিসেবে গণ্য করা হবে।কেননা সে ইচ্ছা করলে কর্তনকৃত ঐ টাকাগুলোকে পূর্বেই নিজ হাতে নিয়ে আসতে পারত। যখন সে ইচ্ছা করে আনেনি।তাই বুঝা গেল যে,সে ইচ্ছা করে সুদে লাগিয়েছে।(শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার বক্তব্য সঠিক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...