আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,023 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (51 points)
edited by
১। নিজের স্বামীর নাম ধরে ডাকা যাবে?

২.আমি কি আমার দেনমোহর ঠিক করতে পারব?

৩.সিজদা একবার কি দুইবার দিয়েছি সন্দেহ হচ্ছিল।পরে তাশাহুদ পরে সাহু সিজদা দিছি?এটা কি ঠিকাছে না কাযা করতে হবে?

4.স্বামীর বাড়ির লোকেরা অনুমতি না দিলেও(তবে স্বামী রাজি( এক্ষেত্রে নিজ বাবার বাসায় থাকা যাবে কি?

৫.মোহরে,ফাতেমী বলতে কি বুঝায়?

৬.বিয়ের পর পড়াশুনা(প্রয়োজনীয়)  যেখানে জামাইর সম্মতি আছে, চালু রাখতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ গ্রহন করা যাবে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
স্বামী-স্ত্রী এক অপরকে সম্মান সূচক নাম ব্যবহার করে ডাকবে। বিশেষ করে স্ত্রী তার স্বামীকে সর্বক্ষেত্রে  সম্মান প্রদর্শন করবে।পরিবারের মধ্যে যেহেতু স্বামীর মর্যাদা স্ত্রীর চেয়ে একটু উপরে তাই স্ত্রী কখনো তার স্বামীর নাম ধরে ডাকবে না। কেননা এতে বেয়দবী মূলক আচরণের বহির্প্রকাশ ঘটে।

এ সম্পর্কে ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে।

( ﻭﻳﻜﺮﻩ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺃﺑﺎﻩ ﻭﺃﻥ ﺗﺪﻋﻮ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﺑﺎﺳﻤﻪ ) ﺍ ﻫـ ﺑﻠﻔﻈﻪ .

ছেলে কর্তৃক তার পিতাকে এবং স্ত্রী কর্তৃক তার স্বামীকে নাম ধরে ডাকা মাকরুহ।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ উক্ত বক্তব্যর সুস্পষ্ট ব্যখ্যা প্রদান করে বলেনঃ-

ﻗﻮﻟﻪ ﻭﻳﻜﺮﻩ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﺇﻟﺦ ) ﺑﻞ ﻻ ﺑﺪ ﻣﻦ ﻟﻔﻆ ﻳﻔﻴﺪ ﺍﻟﺘﻌﻈﻴﻢ ﻛﻴﺎ ﺳﻴﺪﻱ ﻭﻧﺤﻮﻩ ﻟﻤﺰﻳﺪ ﺣﻘﻬﻤﺎ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﻟﺪ ﻭﺍﻟﺰﻭﺟﺔ ، الخ

ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ » ﻓﺼﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻴﻊ » ﻓﺮﻉ ﻳﻜﺮﻩ ﺇﻋﻄﺎﺀ ﺳﺎﺋﻞ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﺇﻻ ﺇﺫﺍ ﻟﻢ ﻳﺘﺨﻂ ﺭﻗﺎﺏ ﺍﻟﻨﺎﺱ،٦/٤١٨.

বরং এমন শব্দের মাধ্যমে ডাকা একান্ত প্রয়োজন যা সম্মান বুঝাবে,

যেমনঃ- হে আমার সর্দার, অমুকের পিতা ইত্যাদি, অথবা সম্মানসূচক পেশার সাথে সংযুক্ত করে ডাকবে, যেমন,ইমাম সাহেব,ডাক্তার সাহেব ইত্যাদি)।

কেননা পিতা এবং স্বামী, তাদের উভয়ের হক্ব একটু বেশীই।

বিস্তারিত জানুনঃ  

★অবশ্য স্বামী যদি এতে মনে কষ্ট না পায় বা নিজের সম্মানহানী মনে না করে তাহলে নাম ধরে ডাকায় কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ। যেমন:

বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে, যখন আল্লাহর রাসূল ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী হাজের এবং শিশু পুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডেকেছিলেন। 

বুখারী শরীফের দীর্ঘ এক হাদীসের শুরুর অংশঃ

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: جَاءَ إِبرَاهِيمُ عليه السلام بِأُمِّ إِسْمَاعِيلَ وَبِابْنِهَا إِسْمَاعِيل وَهِيَ تُرْضِعُهُ، حَتَّى وَضَعهَا عِنْدَ البَيْتِ، عِنْدَ دَوْحَةٍ فَوقَ زَمْزَمَ فِي أَعْلَى المَسْجِدِ، وَلَيْسَ بِمَكَّةَ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ، وَلَيْسَ بِهَا مَاءٌ، فَوَضَعَهُمَا هُنَاكَ، وَوَضَعَ عِنْدَهُمَا جِرَاباً فِيهِ تَمْرٌ، وَسِقَاءً فِيهِ مَاءٌ، ثُمَّ قَفَّى إِبْرَاهِيمُ مُنْطَلِقاً، فَتَبِعَتْهُ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ فَقَالَتْ : يَا إِبْرَاهِيمُ، أَيْنَ تَذْهَبُ وَتَتْرُكُنَا بِهَذَا الوَادِي الَّذِي لَيْسَ فِيهِ أَنِيسٌ وَلاَ شَيْءٌ ؟ فَقَالَتْ لَهُ ذَلِكَ مِرَاراً، وَجَعَلَ لاَ يَلْتَفِتُ إِلَيْهَا، قَالَتْ لَهُ : آللهُ أَمَرَكَ بِهَذَا ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَتْ : إِذاً لاَ يُضَيِّعُنَا ؛ ثُمَّ رَجَعَتْ، فَانْطَلَقَ إِبْرَاهِيمُ عليه السلام

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ইসমাঈলের মা [হাজার; যা বাংলায় প্রসিদ্ধ হাজেরা] ও তাঁর দুধের শিশু ইসমাঈলকে সঙ্গে নিয়ে কা‘বা ঘরের নিকট এবং যমযমের উপরে একটি বড় গাছের তলে [বর্তমান] মসজিদের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় তাঁদেরকে রাখলেন। তখন মক্কায় না ছিল জনমানব, না ছিল কোন পানি। সুতরাং সেখানেই তাদেরকে রেখে গেলেন এবং একটি থলের মধ্যে কিছু খেজুর আর একটি মশকে স্বল্প পরিমাণ পানি দিয়ে গেলেন।

তারপর ইব্রাহীম  ফিরে যেতে লাগলেন। তখন ইসমাঈলের মা তাঁর পিছু পিছু ছুটে এসে বললেন, ‘হে ইব্রাহীম! আমাদেরকে এমন এক উপত্যকায় ছেড়ে দিয়ে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, যেখানে না আছে কোন সঙ্গী-সাথী আর না আছে অন্য কিছু?’ তিনি বারংবার এ কথা বলতে থাকলেন। কিন্তু ইব্রাহীম সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করলেন না। তখন হাজেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আল্লাহ কি আপনাকে এর হুকুম দিয়েছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘হ্যাঁ।’ উত্তর শুনে হাজেরা বললেন, ‘তাহলে তিনি আমাদেরকে ধ্বংস ও বরবাদ করবেন না।’ অতঃপর হাজেরা ফিরে এলেন।

ইব্রাহীম চলে গেলেন। 
সহীহুল বুখারী ২৩৬৮, ৩৩৬৩-৩৩৬৫, আহমাদ ২২৮৫, ৩২৪০, ৩৩৮০

(০২)
হ্যাঁ এটির হকদার আপনি,তাই আপনি মোহরানা ঠিক করতে পারবেন।
,
(০৩)
হ্যাঁ নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।
কাজা আদায় করতে হবেনা।
,
(০৪)
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে নিজ বাসায় যাওয়া যাবে।
,
(০৫)
মোহরে ফাতেমি বলতে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কন্যার মোহর উদ্দেশ্য। 
,   
রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর মেয়ে ফাতেমা র.-এর মোহর ছিল পাঁচশত দেরহাম। যেমন, মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম রহ. বর্ণনা করেন,
كان صداق بنات رسول اللهﷺ ونساءه خمس مائة درهم ثِنْتَيْ عَشْرَةَ أُوقِيَّةً و نصف
রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর মেয়ে ও স্ত্রীগণের মোহর ছিল পাঁচশত দেরহাম অর্থাৎ সাড়ে বার উকিয়া। ( তাবাকাতে ইবনে সাদ ৮/২২)

ইমাম নববী রহ. মাজমু’-গ্রন্থে বলেন,
والمستحب ألا يزيد على خمسمائة درهم، وهو صداق أزواج النبي ﷺ وبناته
মোহর পাঁচশত দেরহামের বেশি না হওয়া মুস্তাহাব। এটা রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর স্ত্রীদের ও কন্যাদের মহর ছিল।

বিস্তারিত জানুনঃ  

(০৬)শুধু এই অজুহাতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ (অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন) করা মাকরুহে তানযিহি হবে। 

বিস্তারিত জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...