বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
শরীয়তের অনেক মাস'আলা এমন রয়েছে,যেখানে একই মাস'আলয় একাধিক মতামত পাওয়া যায়।কখনো কখনো উভয় মতামতের পক্ষে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে মজবুত দলীল-প্রমাণ থাকে।এক্ষেত্রে করণী কী হতে পারে?
প্রশ্নটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।উত্তরটা অনেক ব্যখ্যা সাপেক্ষ্য।তবে সংক্ষেপে আমরা এতটুকু বলতে পারি যে,এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো,চারটি বড় মাযহাবের কোনো একটি মাযহাবকে গ্রহণ করে নেয়া।(লক্ষণীয় যে,মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঈমান আকিদা সংরক্ষণ ও আ'মলের সহজার্তে কুরআন সুন্নাহর আলোকে প্রায় সকল বিষয়ের মাস'আলা-মাসাঈল মূলত এই চারটি মাযহাবেই আলোচিত রয়েছে।এছাড়া আর কোনো মাযহাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে সকল মাস'আলা মাসাঈল রচিত হয়নি।বিধায় পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সমস্ত পৃথিবীতেই মূলত চারটি মাযহাবে আলোচনা শুনা যায়।)যাইহোক,চারটি মাযহাবের কোনো একটি মাযহাবকে ফলো করে নিলেই তখন আর মাস'আলা মাসাঈল নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়তে হবে না।জীবনকে সহজভাবে পরিচালনার করার এটাই সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ মাধ্যম বলে মনে হচ্ছে।এবং এজন্যই মূলত মানুষের নিকট মাযহাব এতটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।এক্ষেত্রে কোনো মাযহাবকে আংশিক ফলো করা যাবে না।বরং যে মাযহাবকে অনুসরণ করার জন্য ঠিক করা হবে,সে মাযহাবের সম্পূর্ণ মাস'আলা মাসাঈলকেই মানতে হবে।নয়তো শরীয়তকে নিজ প্রবৃত্তির অধীনে নিয়ে আসার মত হয়ে যাবে।এজন্যই মূলত বলা হয় যে, জনসাধারণের জন্য মাযহাব অনুসরণ ফরয।এবং এটা যথার্থই।জনসাধারণ বলতে সাধারণ আলেম এবং গায়রে আলেম সবাই এর অন্তর্ভুক্ত।
যদি মুজতাহিদ ফিল মাযহাব পর্যায়ের কোনো বিজ্ঞ আলেমের সামনে এরকম কোনো মাস'আলা দৃষ্টিগোচর হয়,তখন তিনি দলীল প্রমাণের মজবুতির উপর লক্ষ্য করে কোনো একটাকে প্রধান্য দিয়ে আ'মল করবেন।উনার জন্য তখন কারো অন্ধ অনুসরণ করা জায়েয হবে না।মুজতাহিদ ফিল মাযহাব বলতে ইমাম আবু ইউসুফ রাহ, ইমাম মুহাম্মদ রাহ,ইমাম যুফার রাহ এর মত বিজ্ঞ আলেমগণ উদ্দেশ্য।
যদি একই মাযহাবে কোনো এক মাস'আলায় একাধিক বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়,তাহলে তখন অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের বক্তব্যর উপর আ'মল করাই নিরাপদ হবে।
কেনো মাস'আলায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দেখার পর নিম্নোক্ত হাদীসকে সামনে রেখে আ'মল করাই শ্রেয় এবং নিরাপদ।
হযরত ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।
নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে।এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করেন না কেন।মুসনাদে আহমদ-১৭৫৫
এ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করতে পারেন- 669
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.