আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
213 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (5 points)

" ইয়া আল্লাহ তোমাকে যেমন না দেখে বিশ্সাস করেছি, কেয়ামতের দিন তুমিও আমার আমলনামা না দেখে আমাকে ক্ষমা করে দিও" এই কথাটা কি বলা যাবে? আল্লাহ কে তো না দেখেই বিশ্সাস করতে হবে, দেখে কি বিশ্সাস হয়? আর আল্লাহর কাছে কি শুধু বিশ্সাস এর বিনিময় চাওয়া যাই?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
বিসমিহি তা'আলা


জবাবঃ-
বিশ্বাস অর্থ হলো ঈমান,আর ঈমান অর্থ হলো বিশ্বাস।
গাইব অর্থ অদৃশ্য। অদৃশ্য জিনিষ তথা আল্লাহ,আখেরাত ইত্যাদি অদৃশ্য জিনিষের উপর ঈমান রাখা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
وعن ابن عمر، قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: (إن الركن والمقام ياقوتتان من ياقوت الجنة، طمس الله نورهما، ولو لم يطمس نورهما لأضاءا ما بين المشرق والمغرب)
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,নিশ্চয় রুকনে ইয়ামানি তথা হজরে আসওয়াদ এবং মাক্বামে ইবরাহিম- জান্নাতের ইয়াকুত পাথর সমূহের একটি।কিন্তু আল্লাহ তা'আলা এই জান্নাতি পাথর সমূহের নূরকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন।যদি নূরকে ছিনিয়ে না নিতেন,তাহলে পূর্ব-পশ্চিম সর্বত্র আলোকিত হয়ে যেতো।(সুনানে তিরমিযি-২৫৭৯)

ইমাম তিবি রাহ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেন,
قوله: ((طمس الله نورهما)) ((مظ)): أي أذهب الله نورهما؛ ليكون إيمان الناس بكونهما حقاً ومعظماً عند الله إيماناًبالغيب، ولو لم يطمس نزرهما، لكان الإيمانبهما إيماناً بالشهادة، والإيمان الموجب للثواب هو الإيمان بالغيب-
আল্লাহ হজরে আসওয়াদ এবং মাক্বামে ইবরাহিমের নূর কে এজন্য ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন,যাতেকরে মানুষের ঈমান 'গাইবের ঈমান' হিসেবে আল্লাহর কাছে বড় ও বাস্তবসম্মত ঈমান বলে প্রমাণিত হয়।যে ঈমানের উপর সওয়াব লিপিবদ্ধ রয়েছে, সেটা মূলত গাইব বা অদেখা বিষয়ের উপর ঈমান রাখাকে কেন্দ্র করেই।

আল্লাহ তা'আলা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং নেক আ'মল করার প্রতিদান স্বরূপ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْكَبِيرُ
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।(সূরা বুরুজ-১১)

আখেরাতের হিসাব সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
أَيُّهَا الْإِنسَانُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَى رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلَاقِيهِ
হে মানুষ, তোমাকে তোমরা পালনকর্তা পর্যন্ত পৌছতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে, অতঃপর তার সাক্ষাৎ ঘটবে।
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ 0 فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا 0 وَيَنقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا
যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে।তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে।এবং সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে হৃষ্টচিত্তে ফিরে যাবে।(সূরা ইনশেক্বাক্ব-৬-৯)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আল্লাহ কুরআনে কারীমে ঘোষনা দিয়েছেন যে, উনার প্রতি ঈমান এবং নেক আ'মলের প্রতিদান স্বরূপ তিনি মু'মিনদেরকে জান্নাত প্রদান করবেন।অন্যত্র অাল্লাহ মু'মিন বন্দারদের হিসাব-নিকাশকে সহজ করে দিবেন বলে সু-সংবাদ প্রদান করেছেন।

হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
عن عائشة قالت : قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - : " من حوسب يوم القيامة عذب ، قالت : فقلت يا رسول الله أليس قد قال الله فأما من أوتي كتابه بيمينه فسوف يحاسب حسابا يسيرا فقال : ليس ذاك الحساب ; إنما ذلك العرض ، من نوقش الحساب يوم القيامة عذب "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কিয়ামতের দিন যার হিসাব নেয়া হবে তাকে অবশ্যই আযাব দেয়া হবে।(আর্থাৎ আল্লাহ সামনে হিসাব দিয়ে পার পাওয়া যাবে না)আয়েশা রাযি বলেন,আমি বললাম হে রাসূলুল্লাহ সাঃ! আল্লাহ কি বলেন নাই, "যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে।তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে।" রাসূলুল্লাহ সাঃ প্রতিউত্তরে বললেন,এটা হিসাব গ্রহণ নয়,বরং আ'মলনামা কে সামনে পেশ করার কথা আল্লাহ বলতেছেন।সুতরাং যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব গ্রহণ করা হবে,তাকে অবশ্যই আযাব দেয়া হবে।(সহীহ বোখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানু তিরমিযি)
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن عائشة سمعت رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول في بعض صلاته اللهم حاسبني حسابا يسيرا فلما انصرف قلت يا رسول الله ما الحساب اليسير ؟ قال : أن ينظر في كتابه فيتجاوز له عنه ; إن من نوقش الحساب يا عائشة يومئذ هلك -
রাসূলুল্লাহ সাঃ নামযে মধ্যে বা নামায শেষ করে দু'আয় বলেন,হে আল্লাহ আমাদের হিসাবকে সহজ করে দাও।অতপর যখন তিনি নামায সম্পন্ন করলেন,আমি বললাম,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! সহজ হিসাবের অর্থ কি? তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হিসাব সহজকরণ এর অর্থ হলো,আল্লাহ এক পলক আ'মল নামার দিকে তাকাবেন,তার তাকে ছেড়ে দিবেন,তার প্রতিটি আ'মলের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব গ্রহণ করবেন না।হে আয়েশা সেই দিন যার হিসাব গ্রহণ করা হবে,তাকে আযাব দেয়া হবে।(মসনদে আহমদ)

মোটকথাঃ
আপনি যেভাবে এবং যে পদ্ধতিতে  দু'আ করতেছেন,সেটা সঠিক আছে।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...