আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
213 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (51 points)
আসসালামু আলাইকুম

১.কসর পরিমান দূরত্বে " কতদিন থাকব " এই নিশ্চয়তা না থাকলে বা মোটামুটি শিউর যদি হই যে,আমার ১৫ দিন এর বেশি থাকা লাগবে,এক্ষেত্রে হুকুম কি?

আর যদি ১৫ দিনের বেশি থাকা লা,, তাহলে কি ১৫ তম দিন নাকি ১৪ তম দিন হতে পুরো নামাজ শুরু করব?

আর এক্ষেত্রে তারাবী কত রাকা@ত পড়ব?তারাবীর কি কসর আছে?

২.ফরজ গোসলে গড়গড়া করে কুলি করা আবশ্যক। কিন্তু রোযা অবস্থায় হায়িজের কারনে ফরজ গোসল করলে কি গড়গড়া করা যাবে?না করা গেলে কি করতে হবে?পবিত্রতা অর্জিত হবে কিভাবে?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মুসাফির যদি ৭৮ কিলোমিটার কোথাও ১৫ দিনের চেয়ে কম থাকার নিয়তে সফর,তার  জন্য যোহর আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়া (কসর) ওয়াজিব।

আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)


যদি কেহ পনেরো দিন বা তার চেয়ে বেশি  থাকার নিয়ত না করে,বরং আজ কাল যেকোনো মুহুর্তে তার চলে যেতে হবে,এমনটি যদি হয়,তাহলে তিনি এই অবস্থায় যতদিন এখানে থাকবেন,মুসাফির হিসেবে কসরের নামাজ আদায় করবে।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ

أو دخل بلدة ولم ينوها) أي مدة الإقامة (بل ترقب السفر) غدا أو بعده (ولو بقي) على ذلك (سنين) إلا أن يعلم تأخر القافلة نصف شهر كما مر.
(قوله: أو دخل بلدة) أي لقضاء حاجة أو انتظار رفقة.
(قوله: ولم ينوها) وكذا إذا نواها وهو مترقب للسفر كما في البحر لأن حالته تنافي عزيمته."
(باب صلوة المسافر، ج:2، ص:126، ط:ایچ ایم سعید)


সারমর্মঃ
যদি এমন হয় যে কাল চলে যাবো বা পরশু চলে যাবো,নিয়ত যদি নির্দিষ্ট না থাকে, এইভাবে যদি দুই বছরও,তাহলেই ব্যাক্তি কসর করবে।

তারাবীহ নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।   
মুসাফির যদি নিরাপদ স্থানে নিরাপত্তার সাথে থাকে,সময় সুযোগ থাকলে তার জন্য তারাবিহ নামাজ পরাই উচিত।

সফর অবস্থায় সুন্নাত নামাজ আদায়ের বিধান

কোনো জায়গায় ১৫ দিন বা ততধিক অবস্থানের নিয়ত করলে সে সেখানে মুকিম হয়ে যাবে। সেখান থেকে সামানা-পত্রসহ প্রস্থানের আগ পর্যন্ত সেখানে পূর্ণ নামাজ পড়বে এবং মুকিমের বিধান জারি থাকবে- (বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৪)।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনি যেহেতু অনেকটা শিউর যে ১৫ দিনের বেশি থাকা লাগবে,তাই এক্ষেত্রে শরীয়ত আপনাকে কসর নামাজ পড়ার অনুমতি দিবেনা।
আপনি মুকিমের হুকুমে।
১৪ তম দিন থেকে নয়,বরং শুরু থেকেই আপনার পূর্ণ নামাজ পড়তে হবে।
,
আপনাকে পূর্ণ তারাবিহ আদায় করতে হবে।
নতুবা গুনাহগার হবেন। 
,
(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গড়গড়িয়ে কুলি করা যাবেনা।
নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌছানো যাবেনা। 

গোসলের মাঝে গড় গড়িয়ে কুলি করা ও নাকের গভীর পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরজ নয়। বরং সুন্নত। তাই রোযা রাখা অবস্থায় যেহেতু গড়গড়া করে কুলি করলেও নাকের গভীরের নরম স্থানে পানি পৌছানোতে ভিতরে পানি প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই গড়গড়া ও নাকের নরম স্থানে পানি পৌছানোতে বেশি চেষ্টা করা প্রয়োজন নেই। স্বাভাবিকভাবে কুলি ও নাকে পানি দিবে। 
,
قوله: “غسل الفم والأنف” أي بدون مبالغة فيهما فإنها سنة فيه على المعتمد (طحطاوى على مراقى الفلاح، كتاب الطهارة، فصل بيان فرائض الغسل–102
সারমর্মঃ
গ্রহণযোগ্য মত অনুসারে গোসলের মধ্যে গরগরাইয়া কুলি ও নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌছানো সুন্নাত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 455 views
0 votes
1 answer 424 views
...