আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)

আসসালামু মুহতারাম, 

আমি বিগত বছর ২টি কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করার লক্ষ্যে, ২০ টি ফিতরার সমপরিমাণ টাকা আমার এলাকার এক ভাইয়ের মাধ্যমে তার চেনা একটা মাদ্রাসা-এতিমখানায় টাকাটা দিয়েছিলাম।হিসেব করেছিলাম তখন বাজারে ৪০ টাকা কেজি আটা ছিল এবং (৪০ x ১.৭৫ = ৭০ টাকা) এই হিসেবে ৭০ x ২০ = ১৪০০ টাকা।  

আমি টাকা দিয়ে তাকে দায়িত্ব দিয়ে বলেছিলাম, কোন এতিমখানায় টাকাটা দিতে এবং এটা যে কাফফারার টাকা সেটাও তাকে জানিয়েছিলাম। সে তার মতো করে দান করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে আমি কোন কিছু জিজ্ঞেস ও করি নি। যেহেতু সে দ্বীনদার এবং তাবলীগের হালকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আমির সাহেব। তো তার এসকল বিষয় জানার কথা। 

এখন, আমি অনেক জায়গায় দেখছি টাকা দান করলে হবে না...খাওয়াতে হবে।আবার, হিসেবটা আমি আমার এলাকায় আটার দামে করেছিলাম।  আর, টাকাটা কি মাদ্রাসায় গিয়েছে না এতিমখানায় গিয়েছে আমি নিশ্চিত না। তবে এতটুকু শুনেছিলাম সেখানে অভাবী ছাত্র আছে। সেটা কি খাবার বাবদ খরচ হয়েছে না অন্য কোন কাজে তা আমি নিশ্চিত না। 

তো সবমিলিয়ে আমি একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছি যে, আমার কাফফারা আদায় হয়েছে কিনা? আমাকে একটু জানাবেন। পুনরায় কি আদায় করতে হবে কোন কারণে? 

জাযাকাল্লাহু খাইরান। 

1 Answer

0 votes
ago by (705,630 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم

কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُواْ أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে,(১) দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।(২)অথবা, তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে।(৩) যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে।.....এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা মায়েদা-৮৯)

কসমের ধারাবাহিক তিনটি কাফফারার প্রথমটি হল,১০জন মিসকিনকে সকাল-বিকাল দু'বেলা খাদ্য খাওয়ানো বা বস্ত্র পরিধান করানো।খাওয়ানো পড়ানো সম্ভব না হলে,১০জনের প্রত্যেকজনকে একটি ফিতরা সমপরিমাণ টাকা দিলেই কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1808

আমরা জেনে নেই যে একটি ফিতরা সমপরিমাণ কত টাকা আসে।

যব দ্বারা সদকায়ে ফিতর আদায় করা সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

صحيح البخاري (2/ 130)
1503 – حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ السَّكَنِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَهْضَمٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ نَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى العَبْدِ وَالحُرِّ، وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى، وَالصَّغِيرِ وَالكَبِيرِ مِنَ المُسْلِمِينَ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ»
[تعليق مصطفى البغا] (فرض) أوجب أو قدر.

 অর্থ : হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের উপর রাসূলুল্লাহ (সা.) زَكَاةَ الفِطْرِ সাদকাতুল ফিতর হিসাবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা’ পরিমাণ আদায় করা আবশ্যক করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাতে বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। বুখারী-২/১৩১, হাদীস-১৫০৬।

★টাকা দ্বারা ফিতরা আদায় করাও সুন্নাহ সম্মত।

‘‘ফিতরা’’ টাকা দ্বারা আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে। তার দলীল-

مصنف ابن أبي شيبة (2/ 398)
فِي إِعْطَاءِ الدَّرَاهِمِ فِي زَكَاةِ الْفِطْرِ
10371 – حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ زُهَيْرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، يَقُولُ: «أَدْرَكْتُهُمْ وَهُمْ يُعْطُونَ فِي صَدَقَةِ رَمَضَانَ الدَّرَاهِمَ بِقِيمَةِ الطَّعَامِ»

অর্থ : হযরত যুহাইর (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, আমি সাহাবায়ে কেরাম (রা.) কে এই অবস্থায় পেয়েছি যে, তারা রমজানে সাদাকায়ে ফিতর খাবারের বিনিময়ে টাকা দ্বারা আদায় করতেন। ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস-১০৩৭১। 

مصنف ابن أبي شيبة (2/ 398)
10370 – حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنِ الْحَسَنِ، قَالَ: «لَا بَأْسَ أَنْ تُعْطِيَ الدَّرَاهِمَ فِي صَدَقَةِ الْفِطْرِ»

অর্থ : হযরত হাসান বসরী (রহ.) বলেন, টাকা দ্বারা সাদাকায়ে ফিতর আদায় করার দ্বারা কোন সমস্যা নেই। ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস-১০৩৭০।

বিস্তারিত  জানুনঃ 

কেউ যদি টাকা দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করতে চান, তাহলে অর্ধ সা গম বা এক সা খেজুর, যব, কিশমিশ বা পনিরের মূল্যের সমপরিমাণ মুল্যের উপরোক্ত জিনিস হিসেব করে  দিতে হবে। এর কম হলে সদকাতুল ফিতর আদায় হবে না।

(পরিমাণঃ)
গম হলে আধা সা' (১.৬৫০গ্রাম)
ইসলামীক ফাউন্ডেশন থেকে যাহা গত রমজানে ১১৫ টাকা বলে ঘোষণা করা হয়েছিলো।

যব বা খেজুর হলে এক সা' (৩.৩০০গ্রাম)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দুটি কসমের কাফফারার টাকা ২০ জন ফকির/মিসকিনকে দিতে হবে।আর একজনকে দিলে ২০ দিনে দিতে হবে। 

আপনি যেহেতু নিশ্চিত নন যে আপনার কসমের কাফেরার টাকা আসলেই এতিমখানাতেই দেওয়া হয়েছিল কিনা!

বা দেওয়া হলেও সেটি কি ২০ জন ফকির মিসকিনকেই খাওয়ানো হয়েছিল কিনা!

নাকি কয়েকজনকেই শুধুমাত্র সে খাবারের টাকা দিয়েছিলো!

যদি সন্দেহ হয় সেক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে আপনি সতর্কতা মূলক পুনরায় কাফফারা আদায় করবেন।

এক্ষেত্রে আপনি নিজেই সরাসরি ২০ জন ফকির মিসকিন কে কাফফারা টাকা দিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...