আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

আমার প্রশ্নটি হচ্ছে আমার বিয়ে হয়েছে ২০২৩ সালে, কিছুটা বদরাগী স্বভাবের হওয়ায় বিয়ের আগের দিন থেকেই আমার স্বামী আমার পরিবারকে জানায় মিল না হলে ছেড়ে দিবো। ছাড়ার হলে ছেড়ে দিবো এই ধরনের কথা বার্তা। বিয়ের পরেও সে আমাকে বলে এই রোজা মুখে বললাম তোকে আমি ছেড়ে দিবো। এইগুলো নিত্যদিনেরই একটা বিষয় হয়ে দাড়ায় আমাদের সম্পর্কের। তো সে বিদেশ যাওয়ার পরেও আমার ভাসুরের স্ত্রীর সাথে কথা বললেও আমার ভাসুরের সাথে আমি প্রতিদিন কথা বলায় অস্বীকৃতি জালানে সে আমাকে ফোনে কিছু কথা বলার পরে সরাসরি আমাকে বলে, আমি আল্লাহর নাকে তোকে মুক্তি দিলাম।, পরক্ষণেই বলে আজ আমি আমার ভাইয়ের জন্য তোকে ছেড়ে দিলাম।

এভাবে যাওয়ার পরেও আমি তার সাথে যোগাযোগ করি তখন সে আমাকে বলে তুই আমার লাগিস।, তোকে মা ডাকবো আজকে থেকে।

অবশেষে একদিন তাকে যখন বললাম এভাবে এসব যে বলেন আল্লাহকে ভয় করেন ঐ জিহ্বাটা কি কেপে উঠেনা আপনার এসব বলতে তখন সে সাথে সাথে রাগে আমাকে বলে "তোরেও তালাক, তোর গুস্টিরেও তালাক."

এই কথার পর আমি আর তার সাথে যোগাযোগ করিনি শুধু বলেছিলাম আমার সকল ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ভালো থাকবেন।

প্রায় এক বছর তার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ ছিলোনা। একবছর পর সে এবং তার পরিবার আমাকে বলছে সে ভালো হয়ে গেছে। সে আগের মত নেই। সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে আমাকে কাছে পেতে চায়। আমাকে সে সৌদি আরব নিয়ে যেতে চায় আমাকে নিয়ে ওমরাহ করতে চায়।

কিন্তু আমার এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমি কি শরীয়ত মোতাবেক তার স্ত্রী আছি? আমার শশুর বাড়ীর লোকজন ক্রমশই বলে যাচ্ছে এভাবে অনেকেই অনেক কিছু বলে ওতে কিছু হয়না। এমন নানান ভাবে আমাকে বুঝাচ্ছে সেও মাফ চাচ্ছে একটা সুযোগ চাচ্ছে। কিন্তু আমি দিদ্বায় আছি যে তার কাছে যাওয়াটা আনার জন্য হালাল কিনা।

তাই অনুগ্রহ করে আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আমাকে দিদ্ধামুক্ত হতে সাহায্য করবেন ইং শা আল্লাহ।
ধন্যবাদ

1 Answer

0 votes
by (704,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/57974/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

'তোমাকে ছেড়ে দিলাম' ‘তোমাকে মুক্ত করে দিলাম’ বা ‘স্বাধীন করে দিলাম’ শব্দগুলো প্রচলনে সারীহ বা স্পষ্ট তালাকের স্থলে ব্যবহার হয়ে থাকে। 

আর সারীহ তালাকের ক্ষেত্রে নিয়তের প্রয়োজন হয় না। বরং যদি কেউ স্ত্রীকে কেবল ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেও এজাতীয় কথা বলে তাহলেও এর দ্বারা তালাক হয়ে যায়। (জামিউল ফাতাওয়া ১০/১২০ কিতাবুন নাওয়াযিল ৯/২৯৩, ২৯৬, ২৯৯, ৩০০)

যে সকল শব্দ স্পষ্টভাবে তালাককে বুঝায়, সে সকল শব্দ দ্বারা তালাক দিলে তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের দেশে ‘ছেড়ে দিলাম’ -এর দ্বারা তালাক বুঝায়। কাজেই এ কথা বললে তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের কোনো প্রয়োজন পড়বে না।
(রদ্দুল মুহতার ৪/৫৩০; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭৯)

سرحتك وهو “رها كردم” لأنه صار صريحا فى العرف (رد المحتار، كتاب الطلاق، باب الكنايات-4/530)

সারমর্মঃ-
ছেড়ে দিলাম বাক্যটি আমাদের উরুফের মধ্যে সরিহ বাক্য হয়ে গিয়েছে।

اذا قال الرجل لامرأته: “بهشتم ترا از زنى” فاعلم بأن هذه اللفظة استعملها أهل خراسان وأهل العراق فى الطلاق، وأنها صريحة عند أبى يوسف حتى كان الواقع بها رجعيا ويقع بدون النية (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السابع فى الطلاق بألفاظ الفارسية-1/379، جديد-1/447، الفتاوى التاتارخانية-4/463، رقم-6678)
সারমর্মঃ-
কেহ যদি তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলাম হলে,তাহলে এটিকে খোরাসান বাসী ও ইরাক বাসীগন তালাকের বাক্যের অন্তর্ভুক্ত বলেন।
আবু ইউসুফ রহঃ এর নিকটে এটি সরীহ শব্দ।
এর দ্বারা রজয়ী তালাক পতিত হবে। 
এবং নিয়ত ছাড়াই তালাক পতিত হবে।

وقال أبو يوسف: إذا قال: بهشتم ان زن، أو قال: ان زن بهشتم، فهى طالق نوى الطلاق أو لم ينو، وتكون تطليقة رجعية (بدائع الصنائع-3/163)
সারমর্মঃ-
ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ বলেছেন,কেহ যদি তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলাম বলে,তাহলে তালাক পতিত হবে।  তালাকের নিয়ত করুক বা না করুক।
আর এর দ্বারা রজয়ী তালাক পতিত হবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামী আপনাকে বলেছে,
তোকে মুক্তি দিলাম।

আজ আমি আমার ভাইয়ের জন্য তোকে ছেড়ে দিলাম।

তোরেও তালাক, তোর গুস্টিরেও তালাক.

এক্ষেত্রে তোকে মুক্তি দিলাম,বাক্যটি তালাকের নিয়তে বলে থাকলে সেক্ষেত্রে আপনার উপর ওই মুহূর্তেই এক তালাকে বায়েন পতিত হয়েছিল।পরবর্তীতে ছেড়ে দিলাম বলার দরুন দুই তালাক পতিত হয়েছে। এক্ষেত্রে তার পরের বাক্যটি তিনি মূলত কতদিন পর বলেছিলেন?

যদি ২য় তালাকের পর ৩ হায়েজ অতিক্রম হওয়ার আগেই উক্ত বাক্য বলে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর ৩ তালাক পতিত হয়েছে।

আর যদি ৩ হায়েজ অতিক্রম হওয়ার পরে উক্ত বাক্য বলে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর ২ তালাক পতিত হয়েছে।

আর যদি তোকে মুক্তি দিলাম,বাক্যটি তালাকের নিয়ত ছাড়া বলে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার উপর ২ তালাক পতিত হয়েছে।

৩ তালাকের বিধান জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
মাঝখান দেড় মাসের মত গ্যাপ ছিলো সরাসরি "তোকেও তালাক, তোর গুস্টিরেও তালাক" এই বাক্য উল্লেখ করার মাঝে। এর মধ্যে সে আসেনি আমিই কথা বলতে যাওয়ায় সে আমাকে তার মা বলে সম্মোধন করেছিলো।
by
আমার এক্ষেত্রে আরও একটি সংশয় তাহলে রয়ে যায় প্রায় দুবছর যেহেতু হতে চলল সব মিলিয়ে। এখন সে আমাকে পাওয়ার জন্য যদি বলে "আল্লাহর নামে তোরে মুক্তি দিলাম" কথাটি নিয়ত ছাড়া বলেছিলো তাহলে আমি কীভাবে এই সত্যতা যাচাই করবো? অথবা এত আগের ঘটনা পরিপূর্ণ তার মনে না থাকলেইবা কীভাবে উত্তোরন পাবো?
যদি দুই তালাক হয়ে থাকে আমারতো যাবার সুযোগ থাকছে। কিন্তু আমিতো দিদ্ধান্বিত হয়ে যাচ্ছি। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি কিছু আছে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...