আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
9 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
একজন বোনের মাশয়ালা হুবহু তুলে ধরা হয়েছে
বোনটির স্বামীর কয়েক বছর আগে ব্রেন টিউমার হয়েছিল অতঃপর ইন্ডিয়া গিয়ে তার ব্রেনের অপারেশন হয়েছে যেদিন অপারেশন হয় এনিসথেসিয়া এফেক্ট এর জন্য অপারেশনের পর প্রায় এক সপ্তাহ তিনি কাউকে চিনতে পারেননি এবং এটা স্বাভাবিক ডক্টর বলে দিয়েছিল ১০ দিনো লাগতে পারে। তো ওই সময়ে তার কাছে পরিবারের যেই দেখা করতে যাচ্ছিল তিনি কাউকে চিনতে পারছিলেন না উনি উল্টোপাল্টা বলছিলেন এবং নিজেকেও চিনতে পারছিলেন না তার সন্তানদের কেউ না, তখন তিনি একদিন তার স্ত্রীকে ৩ তালাক বলে সাথে ডক্টর ও আরো অনেক মানুষকে এসব শব্দ বলে যা বর্তমানে তার কিছুই মনে নেই, এরপর তারা বাংলাদেশে আসলে সরাসরি একটি ফতোয়া বোর্ডে গিয়ে যোগাযোগ করে ফতোয়া নিয়ে জানতে পারে যে কিছুই হয়নি তালাক হয়নি . বর্তমানে তারা সুখে আছে। কিন্তু এই ঘটনার পর সেই বোনটি অনেকবার তার স্বামীকে অপারেশনের দিনকার সে ঘটনাগুলো বারবার জিজ্ঞেস করত তার কিছু মনে আছে কিনা স্বামী বলত তার কিছুই মনে নেই । যাই হোক কিছুদিন আগে একটা ঝগড়ার সময় সে বোনটির স্বামী তাকে বলে তুমি যেহেতু আমার সাথে থাকতে চাও না তাহলে তোমাকে অধিকার দিলাম চতুর্থ টা তুমি দাও, যেহেতু আগে আমি ৩ তালাক বলেছি তুমিই তো বলো সবসময় তো তুমি দাও ৪ নম্বর টা । " এটাই ছিল তার এক্সাক্ট কথা । এটা শোনার পর সে বোনটি অনেক ভয় পেয়ে যায় এবং একজন হুজুরের সাথে যোগাযোগ করে যে তার স্বামী বলা কথার জন্য কোন সমস্যা হবে কিনা? তখন সে হুজুর বলে কোন সমস্যা নেই আগের ঘটনায়ও কোন সমস্যা নেই, এবং বর্তমানে স্বামীর বলা কথার জন্য নতুন করে কোন তালাক পতিত হয়নি, বা আগের ঘটনায় কোনো তালাক নতুন করে পতিত হবে কালকের বাক্য বলার দ্বারা এমন কোনো সুযোগ নেই।
কিন্তু বোনটি কোনভাবে নিশ্চিন্ত হতে পারছে না সে কি লিখিত ফতোয়া চায়। শুধুমাত্র জানতে চায় তার স্বামীর বলা বাক্যের জন্য বর্তমান ও অতীতের ঘটনায় নতুন করে কোনো কিছু কার্যকর হবে কিনা।
২. এই ঘটনা ঘটার পর সেই বোনটির স্বামী ও একজন হুজুরের সাথে যোগাযোগ করে এবং যোগাযোগ করার আগে সে বোনটির সামনে তার বলা বাক্যটি আবার বলে যে দেখো হুজুরকে এসব এসব বলব" (উপরোক্ত বলা বাক্যটি) এখন নতুন করে বোনটির সামনে আগের বলা সে বাক্যগুলো বলার জন্য নতুন করে কোন সমস্যা হবে কিনা এটাও একটু জানাবেন.

1 Answer

0 votes
by (704,100 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، أَنْبَأَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ خَالِدٍ الْمَخْزُومِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُلُّ طَلاَقٍ جَائِزٌ إِلاَّ طَلاَقَ الْمَعْتُوهِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءِ بْنِ عَجْلاَنَ . وَعَطَاءُ بْنُ عَجْلاَنَ ضَعِيفٌ ذَاهِبُ الْحَدِيثِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ طَلاَقَ الْمَعْتُوهِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ لاَ يَجُوزُ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ مَعْتُوهًا يُفِيقُ الأَحْيَانَ فَيُطَلِّقُ فِي حَالِ إِفَاقَتِهِ .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তালাক মাত্রই বলবৎ হয়, কিন্তু বুদ্ধি ও স্মৃতি নষ্ট হওয়া ব্যক্তির তালাক বলবৎ হয় না।
ইরওয়া (২০৪২)

আবূ ঈসা রহঃ বলেনঃ আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আতা ইবনু আজলানের সূত্রেই মারফু হিসাবে জেনেছি। কিন্তু তিনি হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল এবং হাদীস বর্ণনায় ভুলের শিকার হতেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী মত দিয়েছেন। তাদের মতে নির্বোধ ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না। কিন্তু যে উন্মাদ কখনও জ্ঞান ফিরে পায় আবার কখনও জ্ঞানহারা হয়ে পড়ে সে যদি হুশ থাকাকালে তালাক দেয় তবে তা বলবৎ হবে।
(তিরমিজি ১১৯১)


وفي رد المحتار- ويقع طلاق من غضب خلافا لابن القيم الخ وهذا الموافق عندنا لما مر فى المدهوش، ( رد المحتار، كتاب الطلاق، مطلب فى طلاق المدهوش-4/452)
যার সারমর্ম হলো রাগ অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যাবে।  
,
ইসলামী স্কলারদের মতে রাগের তিনটি অবস্থা হতে পারে:

প্রথম অবস্থা: এত তীব্র রাগ উঠা যে, ব্যক্তি তার অনুভুতি হারিয়ে ফেলা। পাগল বা উন্মাদের মত হয়ে যাওয়া। সকল আলেমের মতে, এ লোকের তালাক কার্যকর হবে না। কেননা সে বিবেকহীন পাগল বা উন্মাদের পর্যায়ভুক্ত।

দ্বিতীয় অবস্থা: রাগ তীব্র আকার ধারণ করা। কিন্তু সে যা বলছে সেটা সে বুঝতেছে এবং বিবেক দিয়ে করতেছে। তবে তার তীব্র রাগ উঠেছে এবং দীর্ঘক্ষণ ঝগড়া, গালি-গালাজ বা মারামারির কারণে সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনি। এগুলোর কারণেই তার রাগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ লোকের তালাকের ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। অগ্রগণ্য মতানুযায়ী, এ লোকের তালাক কার্যকর হবে।
এ অভিমতটাই আমাদের মতে কুরআন-সুন্নাহর সাথে সবচেয়ে বেশী সামঞ্জস্যশীল।

তৃতীয় অবস্থা: হালকা রাগ। স্ত্রীর কোন কাজ অপছন্দ করা কিংবা মনোমালিন্য থেকে স্বামীর এই রাগের উদ্রেক হয়। কিন্তু এত তীব্র আকার ধারণ করে না যে, এতে বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলে কিংবা নিজের ভাল-মন্দের বিবেচনা করতে পারে না। বরং এটি হালকা রাগ। আলেমগণের সর্বসম্মতিক্রমে এ রাগের অবস্থায় তালাক কার্যকর হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক দেয়ার সময় উক্ত  ব্যক্তি যেহেতু তার অনুভুতি হারিয়ে ফেলেছিলো। পাগল বা উন্মাদের মত হয়ে গিয়েছিলো। কি বলেছিলো,তার কিছুই মনে নেই,সুতরাং তার দেয়া সেই তালাক পতিত হবেনা।

"তুমি যেহেতু আমার সাথে থাকতে চাও না তাহলে তোমাকে অধিকার দিলাম চতুর্থ টা তুমি দাও, যেহেতু আগে আমি ৩ তালাক বলেছি তুমিই তো বলো সবসময় তো তুমি দাও ৪ নম্বর টা " 

প্রশ্নের বিবরণ মতে এর দ্বারাও তালাক পতিত হবেনা। তবে  এর দ্বারা স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়েছে।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে নতুন করে কোন সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...