আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
24 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
প্রথম বিষয় হচ্ছে, আমার স্ত্রী যৌথ পরিবারে থাকে। আমার মা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে অনেক কষ্ট দেই। স্ত্রী অনেক ইহসান করে, যেমন বাসার সবার রান্নাবান্না, ঘর পরিষ্কার ইত্যাদি। কিন্তু এগুলোর মধ্যেও মা ভুল ধরার চেষ্টা করে অযথায় কষ্ট দেই স্ত্রীকে। এছাড়াও আমাদের বাচ্চা লালন পালনেও সমস্যা হয়। আমরা আমাদের বাচ্চাকে আমাদের মতো করে পুরোপুরি দ্বীনি তবিয়তে লালন পালন করতে পারি না। অনেক ক্ষেত্রে মায়ের কারণে স্ত্রী বাধাগ্রস্থ হয়। আমার স্ত্রীর প্রতি মায়ের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দেওয়া, স্ত্রীর ব্যাপারে গীবত, বিদ্বেষ ইত্যাদির কারণে আমার স্ত্রী আস্তে আস্তে মানসিক ভাবে সে অনেক ভেঙে পড়তেছে, অনেক কান্না করে। সে এখন আলাদা থাকার ইচ্ছা পোষণ করে।

দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, আমার এক ফ্লাটে থাকি। এখানে একজন নন মাহরাম আছে, আমার ছোট ভাই। এখন পোশাকের পর্দার তেমন সমস্যা হয় না। কারণ আমার স্ত্রী কাজের সময় খিমার(বোরকার মতো) পরে রুম থেকে বের হয়। আর এমনিতে কখনোই আমার ভাইয়ের সামনে পড়ে না। আমার ভাইয়ের কিছুটা চোখের হেফাজত করে। অনেক লজ্জাশীল। তিন বছর হয়ে গেছে বিয়ে করছি, একসাথে থাকি এখনো পর্যন্ত আমার ইচ্ছেস্ত্রী আমার ছোট ভাইয়ের সাথে কোন ধরনের কথা বলেনি, আমার ভাই ও কথা বলার চেষ্টা করেনি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, যেহেতু একই ফ্লাটে থাকি পাশাপাশি রুম। এক রুমে আমি আমার স্ত্রী থাকি, অন্য রুমে ভাই থাকে, মা থাকে। এখন আমার স্ত্রীর স্বাভাবিক যে কথাবার্তা যেমন, রুম থেকে কাজের জন্য বের হলে মায়ের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে হয়, যেহেতু ছোট বাচ্চা মেয়ে আছে সে অনেক দৌড়াদৌড়ি করে, তাকে ডাকতে হয় তার সাথে কথা বলতে হয়। এছাড়া আমরা নিজেরা রুমে স্বাভাবিক কথাবার্তা হাসাহাসি ইত্যাদি। এসব তো আমার ছোট ভাই শুনতে পায়, কারণ যেহেতু পাশাপাশি রুম। যদিও আমার স্ত্রীর এখানে কোন কোমল কণ্ঠে কথা বলতেছে না, বা আকর্ষণীয় কন্ঠে বা আকর্ষণ করার জন্য কথা বলতেছে না।এবং কর্কশ বা কঠোর কন্ঠেও কথা বলতেছে না। তার যেই স্বাভাবিক কণ্ঠ, স্বাভাবিক কথাবার্তা এভাবেই বলতেছে। এখন আমার ছোট ভাই পাশের রুম থেকে সবই শুনতে পায় বা শোনা যায়।
১. এখন আমার প্রথম বিষয় থেকে প্রশ্ন হচ্ছে, আমার পরিবারের সদস্যদের কথা, আচার আচরণের মাধ্যমে আমার স্ত্রী কন্টিনিউয়াসলি মানসিক কষ্ট পাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমার করনীয় কি? এজন্য কি আমার কোন গুনাহ হচ্ছে কিনা? আমি কি তাকে তাকে নিয়ে আলাদা থাকার ব্যবস্থা নিব?

২. দ্বিতীয় বিষয় থেকে প্রশ্ন হচ্ছে, আমার স্ত্রীর এই স্বাভাবিক কথাবার্তাগুলোর কারণে কি তার কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা? লঙ্ঘন হলে, তার আমার উভয়ের কি গুনাহ হবে? যদি কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হয় তাহলে একসাথে একে ফ্লাটে থেকে কন্ঠের পর্দা রক্ষা করা অনেক বেশি কঠিন, সম্ভবই না। কেননা স্বাভাবিক কথাবার্তা তো বলতেই হবে, একবারে চুপ করে তো থাকতে পারবে না। আর বাচ্চা যেহেতু আছে তো সবসময় একদম আস্তে কথা বলাও সম্ভব না। আর এটা তো একদিন অথবা দুই দিনের ব্যাপার না, বছরের পর বছর থাকতে হবে। তো এখন এক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হয় তাহলে কি স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকতে হবে কিনা?? আর এই জন্য কি আমার গুনাহ হচ্ছে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (695,850 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

قَوْلُهُ خَالٍ عَنْ أَهْلِهِ إلَخْ) ؛ لِأَنَّهَا تَتَضَرَّرُ بِمُشَارَكَةِ غَيْرِهَا فِيهِ؛؛ لِأَنَّهَا لَا تَأْمَنُ عَلَى مَتَاعِهَا وَيَمْنَعُهَاذَلِكَ مِنْ الْمُعَاشَرَةِ مَعَ زَوْجِهَا وَمِنْ الِاسْتِمْتَاعِ إلَّا أَنْ تَخْتَارَ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهَا رَضِيَتْ بِانْتِقَاصِ حَقِّهَا هِدَايَةٌ )

স্ত্রীকে এমন একটি বাসস্থান দান করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব,যা স্বামীর পরিবার থেকে খালি থাকবে,কেননা সে অন্যর উপস্থিতির ধরুণ কষ্ট উপভোগ করবে,এবং তার মাল সামানা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে না।তৃতীয় কারো উপস্থিতি স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক জীবন ও একান্ত সময় অতিবাহিত করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। এ জন্য একটি পৃথক বাসস্থান স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।তবে যদি সে তার নিজ অধিকার বিসর্জন দিতে রাজি হয় যায় তাহলে তার জন্য অনুমিত রয়েছে (যদি এক্ষেত্রে গোনাহের কোনো সম্ভাবনা না থাকে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার স্ত্রীর জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আপনার উপর আবশ্যক। 

এক্ষেত্রে যদি প্রশ্নে উল্লেখিত বাসায় থাকার দরুন আপনার স্ত্রীর কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হয়,সেক্ষেত্রে আপনারও গুনাহ হবে 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (30 points)
আমি জনতে চাচ্ছি এই অবস্থায় আমার স্ত্রীর কণ্ঠের পর্দা লঙ্গন হচ্ছে কিনা? আর মানসিক কষ্টের কারনে স্ত্রীকে আলাদা বাসায় রাখতে হবে? আর কণ্ঠের পর্দা যদি লঙ্ঘন হয়, কণ্ঠের পর্দা রক্ষারতে কি স্ত্রীকে আলদা রাখতে হবে? 
by (695,850 points)
এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর কন্ঠের পর্দা নষ্ট হচ্ছে।

 এজন্য আপনার সামর্থ্য থাকলে তার জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আপনার উপর আবশ্যক।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...