প্রথম বিষয় হচ্ছে, আমার স্ত্রী যৌথ পরিবারে থাকে। আমার মা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে অনেক কষ্ট দেই। স্ত্রী অনেক ইহসান করে, যেমন বাসার সবার রান্নাবান্না, ঘর পরিষ্কার ইত্যাদি। কিন্তু এগুলোর মধ্যেও মা ভুল ধরার চেষ্টা করে অযথায় কষ্ট দেই স্ত্রীকে। এছাড়াও আমাদের বাচ্চা লালন পালনেও সমস্যা হয়। আমরা আমাদের বাচ্চাকে আমাদের মতো করে পুরোপুরি দ্বীনি তবিয়তে লালন পালন করতে পারি না। অনেক ক্ষেত্রে মায়ের কারণে স্ত্রী বাধাগ্রস্থ হয়। আমার স্ত্রীর প্রতি মায়ের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দেওয়া, স্ত্রীর ব্যাপারে গীবত, বিদ্বেষ ইত্যাদির কারণে আমার স্ত্রী আস্তে আস্তে মানসিক ভাবে সে অনেক ভেঙে পড়তেছে, অনেক কান্না করে। সে এখন আলাদা থাকার ইচ্ছা পোষণ করে।
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, আমার এক ফ্লাটে থাকি। এখানে একজন নন মাহরাম আছে, আমার ছোট ভাই। এখন পোশাকের পর্দার তেমন সমস্যা হয় না। কারণ আমার স্ত্রী কাজের সময় খিমার(বোরকার মতো) পরে রুম থেকে বের হয়। আর এমনিতে কখনোই আমার ভাইয়ের সামনে পড়ে না। আমার ভাইয়ের কিছুটা চোখের হেফাজত করে। অনেক লজ্জাশীল। তিন বছর হয়ে গেছে বিয়ে করছি, একসাথে থাকি এখনো পর্যন্ত আমার ইচ্ছেস্ত্রী আমার ছোট ভাইয়ের সাথে কোন ধরনের কথা বলেনি, আমার ভাই ও কথা বলার চেষ্টা করেনি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, যেহেতু একই ফ্লাটে থাকি পাশাপাশি রুম। এক রুমে আমি আমার স্ত্রী থাকি, অন্য রুমে ভাই থাকে, মা থাকে। এখন আমার স্ত্রীর স্বাভাবিক যে কথাবার্তা যেমন, রুম থেকে কাজের জন্য বের হলে মায়ের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে হয়, যেহেতু ছোট বাচ্চা মেয়ে আছে সে অনেক দৌড়াদৌড়ি করে, তাকে ডাকতে হয় তার সাথে কথা বলতে হয়। এছাড়া আমরা নিজেরা রুমে স্বাভাবিক কথাবার্তা হাসাহাসি ইত্যাদি। এসব তো আমার ছোট ভাই শুনতে পায়, কারণ যেহেতু পাশাপাশি রুম। যদিও আমার স্ত্রীর এখানে কোন কোমল কণ্ঠে কথা বলতেছে না, বা আকর্ষণীয় কন্ঠে বা আকর্ষণ করার জন্য কথা বলতেছে না।এবং কর্কশ বা কঠোর কন্ঠেও কথা বলতেছে না। তার যেই স্বাভাবিক কণ্ঠ, স্বাভাবিক কথাবার্তা এভাবেই বলতেছে। এখন আমার ছোট ভাই পাশের রুম থেকে সবই শুনতে পায় বা শোনা যায়।
১. এখন আমার প্রথম বিষয় থেকে প্রশ্ন হচ্ছে, আমার পরিবারের সদস্যদের কথা, আচার আচরণের মাধ্যমে আমার স্ত্রী কন্টিনিউয়াসলি মানসিক কষ্ট পাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমার করনীয় কি? এজন্য কি আমার কোন গুনাহ হচ্ছে কিনা? আমি কি তাকে তাকে নিয়ে আলাদা থাকার ব্যবস্থা নিব?
২. দ্বিতীয় বিষয় থেকে প্রশ্ন হচ্ছে, আমার স্ত্রীর এই স্বাভাবিক কথাবার্তাগুলোর কারণে কি তার কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা? লঙ্ঘন হলে, তার আমার উভয়ের কি গুনাহ হবে? যদি কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হয় তাহলে একসাথে একে ফ্লাটে থেকে কন্ঠের পর্দা রক্ষা করা অনেক বেশি কঠিন, সম্ভবই না। কেননা স্বাভাবিক কথাবার্তা তো বলতেই হবে, একবারে চুপ করে তো থাকতে পারবে না। আর বাচ্চা যেহেতু আছে তো সবসময় একদম আস্তে কথা বলাও সম্ভব না। আর এটা তো একদিন অথবা দুই দিনের ব্যাপার না, বছরের পর বছর থাকতে হবে। তো এখন এক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর কন্ঠের পর্দা লঙ্ঘন হয় তাহলে কি স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকতে হবে কিনা?? আর এই জন্য কি আমার গুনাহ হচ্ছে কিনা?