আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আস্‌সালামু আলাইকুম।

মুহতারাম, এমনটা কোথাও পড়েছিলাম/শুনেছিলাম যে, হারাম খাবার ভক্ষণ করে ইবাদত করলে উক্ত ইবাদতের (যেমন নামাজ) থেকে ফরজ বা ওয়াজিবের দায়মুক্তি হয়ে যায়। তবে হারাম ভক্ষণের কারণে গুনাহগার হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত বললে উপকৃত হতাম।

 جزاكم الله خيراً

1 Answer

0 votes
by (695,850 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইবাদতে ও দুআ কবুল হওয়ার ব্যাপারে হালাল খাদ্যের অনেক প্রভাব রয়েছে। খাদ্য হালাল না হলে ইবাদত ও দুআ কবুল হওয়ার যোগ্য হয় না। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

« أيها الناس إن الله طيب لا يقبل إلا طيبا وإن الله أمر المؤمنين بما أمر به المرسلين فقال ( يا أيها الرسل كلوا من الطيبات واعملوا صالحا إنى بما تعملون عليم) وقال (يا أيها الذين آمنوا كلوا من طيبات ما رزقناكم) ». ثم ذكر الرجل يطيل السفر أشعث أغبر يمد يديه إلى السماء يا رب يا رب ومطعمه حرام ومشربه حرام وملبسه حرام وغذى بالحرام فأنى يستجاب لذلك ».

তরজামা: হে লোক সকল! আল্লাহ তাআলা হলেন পবিত্র। আর তিনি পবিত্রতা ছাড়া কবুলই করেন না। আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাই নির্দেশ দিয়েছেন যা রাসূলগণকে দিয়েছেন।  তিনি বলেছেন “হে রাসূলগণ পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত”। 
(সূরা মুমিনুন-৫২) 

তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন “হে ঈমানদারগণ, তোমরা পবিত্র বস্তু-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসাবে দান করেছি। (সূরা বাকারাহ -১৭২)

 রাসুলুল্লাহ সাঃ এক লোকের কথা বললেন যে দীর্ঘ সফর করে আসে। এবং অত্যন্ত ব্যাকুলভাবে দু‘ হাত তুলে আল্লাহর দরবারে বলতে থাকে, ইয়া পরওয়ারদেগার! ইয়া রব! । কিন্তু যেহেতু সে ব্যক্তির পানাহার সামগ্রী হারাম উপার্জনের, পরিধেয় পোষাক- পরিচ্ছদ হারাম পয়সায় সংগৃহীত, এমতাবস্থায় তার দেয়া কি করে কবুল হতে পারে?।  (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ২৩৯৩)

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال:
"من اشترى ثوبًا بعشرة دراهم، وفيها درهم من حرام، لم تُقبل له صلاة ما دام عليه."

অর্থ:
“যে ব্যক্তি দশ দিরহাম দিয়ে একটি কাপড় ক্রয় করল, যার মধ্যে এক দিরহাম হারাম অর্থ ছিল — যতক্ষণ সে সেই কাপড় পরিধান করবে, তার নামাজ কবুল হবে না।”
(মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ৫৭৮৭)

হাদীসের অর্থ ও ব্যাখ্যা (ফায়দা)

ইমাম নববী, ইবনে রাজব, ইবনে হজর প্রমুখ হাদীস ব্যাখ্যাকারগণ বলেন —
এখানে ‘কবুল হবে না’ (لَا تُقْبَلُ) কথাটির দুইটি সম্ভাব্য অর্থ আছে:

1. কবুল = আদায় না হওয়া (অর্থাৎ নামাজ বাতিল হওয়া)

2. কবুল = সওয়াব না পাওয়া, তবে ফরয আদায় হয়ে যাওয়া

এখানে দ্বিতীয় অর্থটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য, এবং মুহাদ্দিসগণ ও ফিকহবিদগণ সাধারণত দ্বিতীয় অর্থই নিয়েছেন।

 ইমাম নববী (রহ.) বলেন:

 “যেখানে হাদীসে ‘লা তুকবাল’ (কবুল হবে না) শব্দটি এসেছে, তা অনেক সময় সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া, আমল আদায় হয়নি এমনটি নয়।”
(শরহ মুসলিম, নববী)

ইবনে হজর আল আসকালানী (রহ.) বলেন:

“এখানে নামাজ আদায় হয়ে যায়, কিন্তু হালাল-হারামের মিশ্রণ থাকায় আল্লাহর নিকট তা গ্রহণযোগ্যতার মর্যাদা পায় না।”
(ফাতহুল বারী, ১/৪৪৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যদি কারো পোশাক নাপাক বা গায়েবী ভাবে অপবিত্র না হয়, বরং অর্থের দিক থেকে হারাম হয়, বা কেহ হারাম ভক্ষন করে,তাহলে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সেই নামাজ কবুল করবেননা,অর্থাৎ তার ফরজিয়াত আদায় হয়ে,সেই নামাজ তাকে পুনরায় আদায় করতে হবেনা,তবে সেই নামাজের ছওয়াব সে পাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
...